কোরিওলিস বল (Coriolis Force)
ফরাসি পদার্থবিদ গ্যাসপার্ড ডি. কোরিওলিস (Gaspard de Coriolis, 1844)-এর নামানুসারে এই বলের নামকরণ করা হয়েছে। পৃথিবীতে স্বাভাবিকভাবে ও স্বচ্ছন্দগতিতে প্রবাহিত বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতি নিজের সরল প্রবাহ পথ থেকে উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যায়। এই বেঁকে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিজ্ঞানী কোরিওলিস পরীক্ষার সাহায্যে দেখান যে পৃথিবীর আবর্তন অর্থাৎ ঘূর্ণন গতির জন্য একটি দিকবিক্ষেপক শক্তির (deflective force) সৃষ্টি হয়। ঘূর্ণনজনিত এই দিকবিক্ষেপক শক্তিকে কোরিওলিস বল (coriolis force) বলা হয়। কোরিওলিস বল (coriolis force) আসলে কোনো 'বল' (force) নয়, এটি একটি ফল (effect)। এটি পৃথিবীর আবর্তন গতি এবং পৃথিবীর সাপেক্ষে বায়ুর প্রবাহজনিত ফল। কোরিওলিস বলের দ্বারা স্বচ্ছন্দ গতিশীল বস্তুর কেবল দিক পরিবর্তনই ঘটে, কিন্তু গতির পরিবর্তন হয় না। Coriolis force-কে নিম্নলিখিত গাণিতিক সূত্র দ্বারা প্রকাশ করা যায়। 2ovSing এখানে = পৃথিবীর ঘূর্ণনের কৌণিক গতিবেগ, অক্ষাংশ, বায়ুর গতিবেগ। নিরক্ষরেখার উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু, সমুদ্রস্রোত ইত্যাদির কোনো দিবিক্ষেপ ঘটে না, তাই নিরক্ষরেখার উপর কোরিওলিস বলের মান শূন্য (০)। কিন্তু মেরুর দিকে দিবিক্ষেপণের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে, ফলে মেরুতে কোরিওলিস মান সর্বাধিক (100%) পরিলক্ষিত হয়।