welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ (Landforms Produced by Weathering)


শিলার আবহবিকারের প্রভাবে বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র ও বৃহৎ ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়। আবহবিকারের প্রক্রিয়াকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-যান্ত্রিক আবহবিকার এবং রাসায়নিক আবহবিকার। এই দুই প্রক্রিয়া অনুসারেও ভূমিরূপকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা-

(A) যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ

(B) রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ

আবার অনেক ক্ষেত্রে এই দুই প্রক্রিয়া এক সঙ্গে মিলিত হয়ে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, কিন্তু একটি ভূমিরূপ সৃষ্টিতে যে-কোনো একটি প্রক্রিয়া সক্রিয়ভাবে ভূমিকা গ্রহণ করে। মূলত আবহবিকার এককভাবে কাজ করে কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে ভূমিরূপ সৃষ্টি করতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে নদীর ক্ষয়কার্য কিংবা অন্যান্য প্রক্রিয়া ভূমিরূপ গঠনে সহযোগী ভূমিকা গ্রহণ করে। নীচে আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলি আলোচনা করা হল-

যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ (Landforms Produced by Mechanical Weathering)

ভূপৃষ্ঠের ওপর অনেক ভূমিরূপ লক্ষ করা যায় যার সঙ্গে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে, নীচে সেগুলি সম্বন্ধে আলোচনা করা হল-

1. ভারহ্রাস গম্বুজ (Unloading Dome): ভার হ্রাসের ফলে শিলায় যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটলে শিলার মধ্যস্থ প্রস্তর খণ্ডগুলি সংকীর্ণ পাতের আকারে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি ক্ষুদ্রাকার নীচু ও উত্তরা ঢিপির আকারে ভূপৃষ্ঠে অবস্থান করে। এই ভূমিরূপটি দেখাতে গম্বুজের মতো হয় বলে একে ভার হ্রাস গম্বুজ বলে। এর উপরিভাগ পেঁয়াজের খোলার ন্যায় কেটে নেওয়া স্তরে স্তরে উচ্চ গোলাকৃতি ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। এই গম্বুজের উচ্চতা কয়েকশো ফুট উঁচু। উদ্‌বেধী শিলা দীর্ঘ দিন ক্ষয়কার্যের ফলে ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে এসে উপরের বোঝার হ্রাসের জন্য উপরের দিকে ধনুকের ন্যায় বেঁকে যায়। তখন দেখতে অনেকটা গম্বুজাকৃতি হয়।

2. হুড্ডুশিলা (Hoodoo Rocks): বৈষম্যমূলক যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে স্তম্ভের আকারে যে উচ্চভূমির সৃষ্টি হয়,তাকে হুজ্জশিলা বলে। শিলাস্তরে অনেক সময় অসম ভাবে যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে যে বিচিত্র আকৃতির ক্ষুদ্রাকার উল্লম্ব শিলার উদ্ভব হয়, তা হজ্জশিলা নামে পরিচিত। এই শিলাগুলি একত্রে পাশাপাশি ভাবে খিলানের ন্যায় অবস্থান করে।

3. ট্যালাস (Scree): সূর্যরশ্মির তাপের প্রভাবে উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে তুষার কাজের ফলে শিলার ফাটল প্রসারিত হয়ে তীক্ষ্ণ কোণ বিশিষ্ট বিভিন্ন প্রস্তর খণ্ড সৃষ্টি করে। এই প্রস্তর খণ্ডগুলি পর্বতের পাদদেশে কিংবা ঢালের পাদদেশে জমা হলে তাকে স্ত্রী বা ট্যালাস বলে। ভারতের লাদাখ মালভূমিতে এই ধরনের প্রস্তরখণ্ড লক্ষ করা যায়।

4. চাপ হ্রাসজনিত আস্তরণ (Unloading Sheet): ভূপৃষ্ঠের উপরে শিলার অপসারণজনিত চাপ হ্রাসের কারণে নীচের শিলার উপরের স্তরটি প্রসারণের জন্য খুলে যায়। এই স্তরটি আয়তনের বেশি বড় হয় এবং পুরুত্ব বেশি। হলে ভূমিভাগের সমান্তরালের বিস্তির্ণ ফাটলের স্তরের আলাদা করে দেয়। সাধারণ 'V' আকৃতির নদীর উপত্যকার উভয় পাশে ঢালু অংশে এই ধরনের প্রসারণ জনিত আস্তরণ খুলে আসে। কলোরাডো মালভূমিতে বেলে পাথর যুক্ত অঞ্চলে 'V' আকৃতির উপত্যকার এই ধরনের ভূমিরূপ লক্ষ্য করা যায়। 

5. কেন্সপ্রাড (Ken-Sprang): অনেক সময় ফাটলের দ্বারা বৃহৎ বোল্ডার বড়ো বড়ো খণ্ডে বিভক্ত হয়, তাদের কেন্সপ্রাহ্ বলে। সাধারণত সূর্যরশ্মির তাপীয় কারণে এগুলি সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হলেও ভূ-বিজ্ঞানী ওশিয়ারের মতে, গ্রানাইট শিলার মধ্যবর্তী ছোটো ছোটো ফাটলের স্বতঃস্ফূর্ত প্রসারণের ফলে এই ধরনের ফাটলের সৃষ্টি হয়। এই ফাটলগুলি চাপ হ্রাসজনিত প্রসারণের ফাটলের মতো সম প্রকৃতির।

6. টর (Tor): বিষম আবহবিকারের একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিরূপ হল টর। ফাটলযুক্ত শিলাস্তরের মধ্যে ভৌমজল ওঠা নামা করলে ডলেরাইট ও গ্রানাইট শিলা ক্রমশ ক্ষয়ে গিয়ে উপরের শিলাস্তর অপসৃত হয়ে যায়। তখন নীচের শিলা উন্মুক্ত হয়ে যায়। গণ্ড শিলা সমন্বিত এই ভূমিরূপ টর নামে পরিচিত। এগুলির উচ্চতা 5 থেকে 20 মিটার। গ্রানাইট গঠিত ভূমিরূপ আবহবিকারের ফলে টর ভূমিরূপ গড়ে। এক্ষেত্রে সাধারণত চারপাশে মৃদু ঢাল যুক্ত উঁচু প্রস্তরময় ভূমিভাগটি অবস্থান করে।

7. ইনসেলবার্জ (Inselberges): শুদ্ধ বা প্রায় শুষ্ক জলবায়ু অঞ্চলে কিংবা মরু অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে গোলাকার বা সমতল শীর্ষ বিচ্ছিন্ন অবশিষ্ট পর্বতগুলি তাদের সংলগ্ন সমভূমি থেকে খাড়া ভাবে উঁচু হয়ে থাকে। তাকে ইনসেলবার্জ বলে। মূলত আবহবিকারের ক্ষয়কার্যের ফলে এরূপ ভূমির সৃষ্টি হয়। এই উত্তলাকার বিচ্ছিন্ন টিলা বা গম্বুজাকৃতি ঢিবির ন্যায় ভূমি যখন সংশ্লিষ্ট সমভূমি থেকে সংকীর্ণ উচ্চতায় অবস্থান করে তখন এই ইনসেলবার্জের উচ্চতা কখনও কখনও 500 ফুট অতিক্রম করে।

৪. ফেলসেন মিয়ার (Felsen Meer): শীতল ও সুউচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে অধিক উচ্চতায় অবস্থিত শিলাখণ্ডে আবৃত ভূমিকে ফেলসেন মিয়ার বলা হয়। মূলত তুহিন কার্যের ফলে আবহবিকারের মাধ্যমে এই ধরনের ভূমিরূপের উদ্ভব হয়।।

E. J. Wealand (1934) চাঁচন তল শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। আর্দ্র ক্রান্তীয় অঞ্চলে কিংবা গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত অঞ্চলে বিভিন্ন শিলাস্তূপের উপর দীর্ঘদিন গভীর আবহবিকারের ফলে রেগোলিথের সৃষ্টি হয়। রেগোলিথ বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়ীভবনের মাধ্যমে আংশিক কিংবা সম্পূর্ণ অপসারিত হওয়ার ফলে যে সমতলভূমির সৃষ্টি হয় তাকে চাঁচন তল বলে।

ভূ-বিজ্ঞানী Wealand-র মতে ঋতুভিত্তিক জলবায়ু-পার্থক্যের জন্য ভৌম জলস্তর ওঠানামা করে। ফলে আবহবিকারের গভীরতা 10 মিটারের বেশি প্রাপ্ত হয়। পরবর্তী সময়ে ওই অঞ্চলে ভূ-অভ্যন্তরীণ শক্তির ক্রিয়ায় ভূমিভাগ উত্থিত হলে আবহবিকারজাত পদার্থ অপসারিত হয়। সুস্থিত ভূমির ওপর যদি নতুন করে গভীর আবহবিকার সম্পন্ন হয়, তাহলে একইভাবে আবহবিকারজাত পদার্থের সৃষ্টি হবে এবং পুনরায় তা অপসারিত হবে। সুতরাং এই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি লক্ষ করা যায় এভাবে ফেলসেন মিয়ার চলতেই থাকে।

9. কোরস্টোন (Corestone): ভূ-বিজ্ঞানী লিন্টন (L. D. Linton, 1955)-এর মতে, কোরস্টোন এবং টর দুটি পর্যায়ে গঠিত হয়। মূলত কোনো অঞ্চলে প্রথম পর্যায়ে কোরস্টোন গঠিত হওয়ার পরে পরবর্তী পর্যায়ে টর গঠিত হয়। খণ্ড শিলাগুলি অধিক তাপমাত্রায় যান্ত্রিক আবহবিকারের দ্বারা মূল শিলা থেকে যখন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় অবস্থান করে তখন তাকে কোরস্টোন বলে। আফ্রিকা, দঃ পূর্ব এশিয়া, ব্রাজিল এবং মেক্সিকোতে এই ধরনের কেন্দ্রক শিলা লক্ষ করা যায়।

10. মাটি স্তম্ভ (Earth Pillar): যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে কোনো শিথিল ও কোমল শিলাস্তর অথবা মাটি স্তরের উপরে বড়ো ধরনের নুড়ি বা শিলাখণ্ড অবস্থান করলে ওই শিলাগুলি তার পার্শ্ববর্তী অবস্থানরত শিলা বা মাটিকে প্রাকৃতিক শক্তি তথা বৃষ্টিপাত ও বায়ুপ্রবাহের হাত থেকে রক্ষা করে। তখন প্রধান শিলাখণ্ডের পার্শ্ববর্তী সংরক্ষিত মাটিগুলি একটি প্রশ্ন সঞ্চখন সব। তাকে মাটি স্তম্ভ বলে।

11. কচ্ছপপৃষ্ঠ সদৃশ প্রস্তরখণ্ড (Tortoise Shell Boulders): যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলাস্তরে প্রসারণের সঙ্গে যে উল্লেখযোগ্য ভূমিরূপগুলি গড়ে ওঠে, তার মধ্যে এটি অন্যতম। কোনো অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকার দীর্ঘদিন চলতে থাকার ফলে শিলাস্তরের উপরে বহুভুজাকৃতি ফাটলের দ্বারা উপরের আস্তরণ যখন টুকরো টুকরো হয়ে অপসারিত হয়, এবং তা দেখতে অনেকটা কচ্ছপের পিঠের মতো। একে কচ্ছপপৃষ্ঠ বোল্ডার বলে।

12. আবহবিকার গুহা (Cavernous Weathering): আবহবিকার গুহা বৈষম্যমূলক আবহবিকারের ফলে গঠিত এক উল্লেখযোগ্য ভূমিরূপ। সাধারণত তাপমাত্রার তারতম্য অনুযায়ী শিলাখণ্ডের যে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ হয়, তার ফলে এই ধরনের ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়। আবহবিকার গুহা স্থানীয় ফ্লেকিং (flaking)-এর ফলেও সৃষ্টি হয়।

13. আবহবিকার গর্ত (Weathering Pit): সাধারণত যান্ত্রিক আবহবিকারের বৈষম্যমূলক ক্ষয়কার্যের ফলে এই ধরনের ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন ধরনের চুনাপাথর, ক্যালসাইট, ডলোমাইট এবং চুন সমৃদ্ধ শিলায় বেলেপাথরে এই ধরনের নিম্নভূমি বা গর্ত দেখা যায়। ভূবিজ্ঞানী Ollier-র মতে সমতল ভূমিভাগে ঢালু জমি বা উল্লম্ব ঢালযুক্ত অঞ্চলে এই ধরনের আবহবিকার গর্ত লক্ষ করা যায়। তিনি এও উল্লেখ করেন যে, স্থানীয় এলাকায় সৃষ্টি হওয়া ফ্লেকিং বা বিশরণে এই ধরনের ভূমিরূপ সৃষ্টি হতে পারে, আবার কেউ কেউ মনে করেন, স্থানীয় দ্রবণকার্যের ফলে এই ধরনের ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়। দ্রবীভবনের ফলে আরাবল্লী পর্বতের গ্রানাইট স্তরে এই ধরনের কূপ লক্ষ করা যায়।

14. পেনিটেন শিলা (Penitant Rocks): যান্ত্রিক আবহবিকারের বৈষম্যমূলক কাজের ফলে এই ধরনের শিলা লক্ষ করা যায়। সাধারণত টর সৃষ্টির সময় যদি শিলাস্তরটি বেশি ঢালুযুক্ত হয় তাহলে পত্রায়ণ বরাবর পেনিটেন শিলা লক্ষ করা যায়। আবার একারম্যানের মতে, কোনো একটি শিলাস্তরে গভীর আবহবিকারে হলে, পেনিটেন শিলা লক্ষ করা যায়। এক্ষেত্রে শিলাস্তম্ভগুলি বিচ্ছিন্নভাবে হেলে দাঁড়িয়ে যায়।

15. ভূমিতল মঞ্চ (Ground Level Terrace): শিলাস্তরের উপরিতল থেকে যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্রাকার পাতের মতো শিলাখণ্ড বিচ্ছিন্ন হলে অনেক সময় ভূমিতলের উচ্চতায় একটি প্রায় অনুভূমিক তলের উদ্ভব হয়ে থাকে একে ভূমিতল মঞ্চ বলে।

16. রেগোলিথ ও স্যাপ্রোলাইট (Regolith and Saprolite): আবহবিকারের ফলে শিলা বিয়োজিত ও বিভাজিত হওয়ার ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের উপরিভাগের শিলাস্তরে এক শিথিল ও বিচূর্ণীত শিলাখণ্ডের আস্তরণের সৃষ্টি হয়। মূলত আদি শিলাস্তরের ওপর গঠিত শিথিল বিয়োজিত শিলাখণ্ডের এই আস্তরণকে রেগোলিথ বলে। রেগোলিথ আবহবিকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিরূপ।

শিলা আবহবিকারগ্রস্ত হওয়ার পর বিয়োজিত অংশ বা শিলা আংশিক স্থানান্তরিত হয়; আবার আংশিক স্থানে অবস্থান করে। সেই বিয়োজিত শিলা স্থানান্তরিত না হওয়াকে স্যাপ্রোলাইট বলে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে ভূমিভাগের উপর এই স্তর প্রায় ৭ মিটার গভীরতা পর্যন্ত অবস্থান করে।

17. পাটিনা (Patina): আবহবিকারের ফলে কোনো শিলাস্তরের উপরের অংশ ক্রমশই পরিবর্তিত হয়, কিন্তু এই পরিবর্তন এতটাই পরিবর্তিত হয় যে, এই শিলার অন্য অংশের তুলনায় বর্ণ স্বচ্ছিদ্রতা এবং অন্যান্য সব বৈশিষ্ট্য স্বতন্ত্র হয়ে পড়ে, একে পাটিনা বলে। সাধারণত ফ্রিন্ট বোল্ডারের উপরের অংশ থেকে লিচিং পদ্ধতিতে শিলিকা অপসারিত হয়ে গেলে এই ধরনের ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।

18. মরু-ভার্নিস (Desert Varnish): মরু অঞ্চলে কোয়াজেট কণা, শিলাখণ্ড বা কখনও কখনও বোল্ডারের উপর চকচকে আস্তরণ পড়ে, যাকে মরু-ভার্নিস বলে। এই আস্তরণ অত্যন্ত পাতলা যার পুরুত্ব প্রায় 1 মিলিমিটার। এই আস্তরণটি লৌহ অক্সাইড, ম্যাঙ্গানিজ ডাই-অক্সাইড কিংবা সিলিকা দ্বারা গঠিত হতে পারে। এই আস্তরণকে খালি চোখে সহজে দেখা যায় না।

19. গোলাকৃতি ভূমিরূপ (Rounded Landform ): গ্রানাইট শিলা ভূগর্ভের অনেক নীচে গঠিত হলেও ভূত্বক দীর্ঘদিন ধরে নগ্নীভবন ও ক্ষয়ীভবন প্রক্রিয়ায় কিংবা ভূ-আন্দোলনজনিত কারণে ভূপৃষ্ঠে উন্মোচিত হয়। এই ধরনের আদি শিলার উন্মুক্ততাকে Out Crop বলে। বিজ্ঞানী ওলিয়ার-এর মতে আর্দ্র বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় শিলার মধ্যে খনিজের রাসায়নিক স্থানান্তর এবং খনিজের বিয়োজনের ফলে শিলার বাইরের আস্তরণ আলাদা হয়ে পিঁয়াজের খোসার মতো খুলে যায় ও গোলাকৃতি ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।

20. রঙিন স্তরবিন্যাস (Colour Bonding): শিলা বা মৃত্তিকায় লৌহ অক্সাইড ক্রমাগত সঞ্চয় ও অপসারণের ফলে এই ধরনের স্তরবিন্যাস গঠিত হয়। সাধারণত ল্যাটেরাইট বা লাল মাটিতে এই ধরনের রঙিন স্তর বিন্যাস গঠিত হয়।

21. হানি কম্ব (Honey Comb): যান্ত্রিক আবহবিকার প্রক্রিয়ায় আবহবিকার প্রাপ্ত শিলার ফাটলগুলি আয়রণ অক্সাইড দ্বারা ভরাট হয়ে যায়। বেলেপাথরের ফাটলগুলি এই ধরনের আয়রণ অক্সাইড দ্বারা ভরাট হলে তাকে হানি কম্ব বলে। সাধারণত দ্রবণ পদ্ধতির ফলে শিলাস্তরের গায়ে যেসব ছোটো ছোটো গর্তের সৃষ্টি হয় সেগুলি দেখতে অনেকটা মৌচাকের মতো হয়, এই শিলাগুলি পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের শিলা থেকে অনেক বেশি শক্ত।

22. ক্লে খনিজ (Clay Minerals): সাধারণত শিলিকা সমৃদ্ধ পুরু আগ্নেয় শিলায় রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে ক্লে খনিজ সৃষ্টি হয়। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণে বেশিরভাগ ক্লে খনিজ পেগমাটাইট ডাইকের আবহবিকারের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01