পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনে জীবমণ্ডলের বিবর্তন সংক্রান্ত ধারণা (Concept of evolution of biosphare through adaptation with environment)
ডারইনকৃত বিবর্তন তত্ত্ব (Darwin's Theory of evolution)
চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে বিবর্তন তত্ত্বটি দিয়েছিলেন। এর মূল বিষয় হলো প্রাণীবৈচিত্র্য, উত্তরাধিকার প্রাকৃতিক নির্বাচন ও সময়। ডারউইন বলেন সময়ের বিবর্তনে জীবমন্ডলের পরিবর্তন ঘটে, নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি হয় এবং একটি জটিল উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্ম বহন করে।
প্রাকৃতিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রাপ্ত উত্তরন ও তার বৈশিষ্ট্য সমূহ যা নিয়ে প্রাণী বেঁচে থাকবে এবং তার থেকে অধিক সংখ্যায় পরবর্তী প্রজন্মে প্রাণী জন্মাবে।
প্রাণী সমূহ জীবনধারণের প্রয়োজনীয় উপকরণের জন্য সংগ্রাম করে, কারণ প্রতিযোগিতা রয়েছে। একটি জীব গোষ্ঠীর মধ্যে যথেষ্ট বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায়। এবং উত্তরাধিকার সূত্রে এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে উক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি প্রবাহিত হয়।
এর মধ্যে কিছু কিছু প্রাণী অন্যদের চেয়ে স্থানীয় পরিবেশে বেশি ভালো অভিযোজন করতে এবং প্রজনন ঘটাতে সক্ষম ।
টিকে থাকার লড়াইয়ে যারা হেরে যায় তারা পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায়। যারা বেঁচে থাকে তারা প্রাকৃতিক নির্বাচন (Natural selection) প্রক্রিয়ায় টিকে থাকে এবং বিবর্তনের পথে অগ্রসর হয়।
গাইয়া তত্ত্ব (Gaia Theory)
জেমস লাভলক (James Lovelock) ও মারগুলিস (Margulis) ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে এই তত্ত্ব প্রদান করেন। গ্রিক পুরাণ অনুসারে ধরিত্রী দেবী গাইয়া (Gaia Theory)-র নাম অনুসারে লাভলক এই তত্ত্বটির নামকরণ করেন। পৃথিবীর জীবজগতের সঙ্গে প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে আন্তঃ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং জীবজগৎ আন্তঃনিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে পরিবেশকে টিকিয়ে রেখে অগ্রসর হয়। এর ফলে সৃষ্ট জটিল ব্যবস্থাটি পৃথিবীতে জীবন ধারণের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলেছে। এই তত্ত্বটি নানাভাবে সমালোচিত হয়েছে।
কেউ কেউ একে ডারউইন তত্ত্বের বিরোধী মত বলে চিহ্নিত করেছেন, কেউ আবার একে মেনেও নিয়েছেন। প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বেঁচে থাকার লড়াই এর বাস্তবতা যেমন সঠিক বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, তেমনি বিজ্ঞানীদের একাংশ সাম্প্রতিককালে রচিত গাইয়া তত্ত্বটি । যে জৈব অজৈব উপকরণসমূহের আন্তঃসম্পর্কের মধ্য দিয়ে জীবের আন্তঃনিয়ন্ত্রনের কথা বলেছে এবং পৃথিবীর উষ্ণতা ও রসায়ন যে জীবমণ্ডলের উপযোগী বাসযোগ্য পৃথিবীর প্রদান করে তাকেও সমর্থন করেছেন।
