সভ্যতার বিবর্তনে পরিবেশ সম্পর্কে ধারণাগত ক্রমবিবর্তন (Evolutionary concepts of Environment):
পরিবেশ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা নতুন নয়। মানুষ প্রকৃতিকে অসন্তুষ্ট করতে চায় নি। পুজো করেছে জল, বায়ু, সূর্য এমনকি গাছকে।
প্রাচীন ভারতবর্ষে পরিবেশ চিন্তার উল্লেখ পাওয়া যায় 'চরক সংহিতা'য়। বলা হয়েছে 'বায়ুমণ্ডল, ভূমি ও সময় জীবের অগ্রগতির মূল।'
সিন্ধু সভ্যতায়, রোমান সভ্যতায় পরিবেশ সচেতনতায় প্রমাণ পাওয়া গেছে। নাগরিক জলপ্রকল্প ও পয়ঃ প্রণালী ব্যবহার ও সংস্কারের স্বাক্ষর দেখা গেছে এই সকল সভ্যতায়। শিল্পায়ন পরবর্তীকালে শিল্পবর্জ্য নির্গমনের পথ তৈরি হয়েছে ইউরোপ-আমেরিকায়। এছাড়া, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অরণ্য সংরক্ষণ ও অরণ্য সৃজন নীতি তৈরীর প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে। আধুনিককালে স্থিতিশীল উন্নয়নের প্রচেষ্টায় বিশ্বের দেশগুলি মাঝেমাঝেই পরিবেশ সংক্রান্ত সম্মেলনের আয়োজন করে এবং বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন করে। স্টকহোম, মন্ট্রিল, কিয়োটো, রিও, প্যারিস প্রভৃতি কয়েকটি স্থানের উদাহরণ, যেখানে পরিবেশ সংক্রান্ত আলোচনা ও নীতি গৃহীত হয়েছে পরিবেশ সংক্রান্ত সম্মেলনের আয়োজন করে।
বুফোঁ (১৯৫৬) তাঁর ন্যাচারাল হিস্ট্রি বইতে মানুষ, পশুপাখি ও উদ্ভিদের মধ্যে পরিবেশগত সম্পর্ক প্রমাণ করতে সচেষ্ট হয়েছেন।
১৮৬৯ সালে আর্নস্ট হেক্ট্ল প্রথম 'ইকোলজি' (ecology) শব্দটি ব্যবহার করেন (গ্রীক শব্দ OIKOS অর্থ “বসবাসের স্থান' থেকে ‘Eco' কথাটি এসেছে) পরিবেশগত চিন্তা ভাবনা নিয়েই।
‘পরিবেশ’ বর্তমানে ‘সম্পদ' সংক্রান্ত চিন্তাভাবনায়ও স্থান পেয়েছে। সম্পদের সংজ্ঞা দিতে 'বস্তুর কার্যকারিতাকেই
একমাত্র গুণ বলে ধরা হয় না। মনে রাখতে হয়, সম্পদ উৎপাদন প্রক্রিয়া যেন পরিবেশের ক্ষতি না করে।' ১৯৯২-এর রিও ডি জেনিরোতে পরিবেশ সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে (Earth Summit, 1992) এই মত গৃহীত হয়েছে।
