শিক্ষা ও বুদ্ধির সম্পর্ক আলেছনা করো।
উত্তর
শিল্প ও বৃদ্ধির সম্পর্ক
শিক্ষা হল শিক্ষার্থীর এক জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া যা তাকে নতুন অভিজ্ঞতা অজনে ও পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সার্থকভাবে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে এবং সমাজের বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের উপযোগী করে তোলে। অন্যদিকে, বুদ্ধি হল একটি সামগ্রিক ক্ষমতা যা বাস্তিকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ক্রিয়া করতে, যুক্তিপূর্ণভাবে চিন্তা করতে এবং সার্থকভাবে পরিবেশের সঙ্গে কাজ করতে সাহায্য করে।
শিক্ষার সঙ্গে বুদ্ধির একটি নিবিড় সম্পর্ক বর্তমান। বস্তুত, কোনো বাক্তির বুদ্ধি না থাকলে শিক্ষা বা নির্দেশনাই সার্থক হতে পারে না। এখন প্রশ্ন হল, বুদ্ধি ও বুদ্ধির অভীক্ষা কীভাবে শিক্ষা ও শিক্ষার বিভিন্ন কর্মসূচির সঙ্গে সম্পর্কিত, সে বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল-
[1] বিদ্যালয়ে ছাএ ভরতির ক্ষেত্রে: বিদ্যালয়ে হারছাত্রীদের ভরতি নেওয়ার সময় তাদের বুদ্ধির বিষয়ে অর্থাৎ, বৃদ্ধাঙ্ক সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া বিশেষ প্রয়োজন। বুদ্ধির পরিমাপের পর ডরতির ব্যবস্থা করলে ভবিষ্যতে অসুবিধায় পড়তে হয় না.
[2] শিক্ষার্থীদের বিভাগীয়করণের ক্ষেতে: বর্তমানে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে একই শ্রেণিতে অসংখ্য শিক্ষার্থী পঠনপাঠন করে। একই শ্রেণিতে পাঠরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃদ্ধাঙ্ক বা মেধার বৈষম্য বেশি হলে পঠনপাঠনে বেশ অসুবিধা হয়। সমমেধার বা সমবুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের একত্রে পাঠদান করলে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উভয়েরই সুবিধা হয়।
[3] শিক্ষার সীমারেখা নির্ধারণ্যের ক্ষেতে: বুদ্ধির ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের ক্ষমতার একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা টানা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে-
i.যাদের বৃদ্ধাঙ্ক 50-70-এর মধ্যে, সেইসব শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলে 10-11 বছর পর্যন্ত প্রথম শ্রেণিতেই থাকে। অধিক সুযোগসুবিধা পেলে তাদের মধ্যে কয়েকজন 14-15 বছরে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত উত্তীর্ণ হতে পারে।
ii.যাদের বৃদ্ধাঙ্ক 70-90-এর মধ্যে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পশ্চম বা যষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন করতে পারে।
iii. যাদের বৃদ্ধাঙ্ক 90-100-এর মধ্যে, তারা অনুশীলন ও পরিশ্রমের ফলে স্নাতক ডিগ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারে।
iv. যাদের বৃদ্ধাঙ্ক 110-এর অধিক তারা সুযোগসুবিধা পেলে আতকোত্তর ডিগ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারে।
[4] পাঠক্রম নির্দেশনার ক্ষেত্রে: শিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পাঠক্রম লক্ষ করা যায়-কলা, বিজ্ঞান, বাণিজ্য ইত্যাদি। বুদ্ধাঙ্ক অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাঠক্রম গ্রহণ করা উচিত। কোন্ শিক্ষার্থী কী ধরনের পাঠক্রম নিলে ভবিষ্যতে সাফল্য পাবে, তা বুদ্ধির পরিমাপের দ্বারা নির্ধারণ করা উচিত।
[5] বিশেষ শিক্ষার ক্ষেত্রে: প্রতিটি দেশে যেমন কিছু প্রতিভাবান শিক্ষার্থী থাকে, তেমনি কিছু শিক্ষার্থী অল্পবুদ্ধি-সম্পন্নও হয়। পিছিয়ে-পড়া বা অল্পবুদ্ধি সম্পন্নদের খুঁজে বের করে তাদের জন্য বিশেষ শিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারলে সমাজের উপকার হয়। মোটকথা, বিশেষ শিক্ষার ক্ষেত্রে বুদ্ধির পরিমাপ করা বিশেষভাবে প্রয়োজন।
[6] আশানুরূপ ফললাভে অসমর্থদের ক্ষেত্রে: আমাদের দেশের বন্ধু শিক্ষার্থীর উপযুক্ত মেধা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন মানসিক কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে তারা আশানুরূপ ফরলাভ করতে পারে না। এইসব 'আন্ডার আইজার (Under achiever) বুদ্ধি আত্মীদ্বার দ্বারা বাজাই করে ও সমস্যা সহায়তা করলে, তারা বিশেষভাবে উপকৃত হয়।
[7] শিক্ষকদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে: 'শিখন-শিক্ষণ' প্রক্রিয়ায়। পুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অভীকা প্রয়োগ করা হয়।
[৪] বৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে: বর্তমানে, বন্ধু প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের। (scholarship) প্রণানের ব্যবস্থা করে। বৃত্তিদানের ক্ষেত্রে শিল্প পারদর্শিতার পাশাপাশি তার বুদ্ধির পরিমাণ বা বুখাঙ্ক সম্পর্কে প্র হওয়া প্রয়োজন।
[9] মানসিক রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে: মানসিক ব্যাধির সঙ্গে বুখিরও সম্পর্ক লক্ষ করা যায়। এই ধরনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে মনোচিকিংয় থাকেন। রোগীর অন্যান্য আচরণ বিশ্লেষণের পাশাপাশি বুদ্ধির পরিমাপড়।
[10] সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে: বিদা শিক্ষার্থীরা কোন প্রকার সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি গ্রহণ করবে, তার ছ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বর্তমানে বুদ্ধির অভীক্ষার প্রচলন ঘটেছে।
[11] বৃত্তিগত নির্দেশনার ক্ষেত্রে : মনোবিদ বাট একটি গবেষ বুখ্যঙ্কের পরিপ্রেক্ষিতে বৃত্তির শ্রেণিবিভাগ করেছেন। এর শিক্ষার্থীদের বৃতিগত নির্দেশনাদানের ক্ষেত্রে বর্তমানে তাদের আগ্রহ, দর প্রবণতা, বিশেষ ক্ষমতা প্রভৃতির পাশাপাশি বুদ্ধ্যঙ্ক সম্পর্কে অর হওয়ার প্রয়োজনীয়তাও উপলব্ধি করা হচ্ছে।