শিক্ষায় সমসুযোগের ধারণাটি ব্যাখ্যা কর।
অথবা, শিক্ষায় সমসুযোগ কি কিভাবে সম্ভব।
উত্তর
শিক্ষায় সমসুযোগের ধারণা
গণতান্ত্রিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো প্রতিটি ব্যক্তি ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ সর্বাঙ্গীণ বিকাশ সাধন। লাস্টে খরচে সকলের প্রয়োজন মত সর্বোত্তম শিক্ষা সুযোগ সৃষ্টি শিক্ষায় শম অধিকারের মূল কথা। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে কোঠারি কমিশন আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে চেয়েছে যাতে জাতি ধর্ম বর্ণ ও সম্প্রদায়ের নির্বিশেষে সমস্ত ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণের সমযোজক লাভ করতে পারো।।
কোঠারি কমিশন লক্ষ্য করেছে যে ভারতের যে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত আছে তাতে জাতিগত বিভেদ ও শ্রেণী বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে সরকার পরিচালিত স্কুল গুলি অবৈতনিক হলেও এগুলির মান অনুন্নত এবং এগুলিতে দারিদ্র শ্রেণীর ছেলে মেয়েরাও পড়াশোনা করে।। অন্যদিকে বেসরকারি বিদ্যালয় পঠন পাঠন ভালো হলেও সেইগুলি বেতন সাধারণ মানুষের নাগালে বাইরে এবং কিছু সংখ্যক ধর্ম সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা সেইগুলি পঠন-পাঠন করে।
মাধ্যমিক স্তরে অধিকাংশ উন্নত ধরনের ফুলগুলি বেসরকারি এবং সেগুলিতে বেতনের পরিমাণ এত বেশি যে ধনী সম্প্রদানে ছেলেমেয়েরা সেগুলিতে পড়ার সুযোগ পায়। শিক্ষা জগতে এই শ্রেণী বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা অগতান্ত্রিক এবং জাতি আদর্শের পরিপন্থী।
কমিশন আরো সেই সব শিক্ষাগত উপযোগে সমতা অভাব লক্ষ্য করেছে সেগুলি হল-
1. বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানে যথেষ্ট তফাৎ রয়েছে।
2. ফারুকদের ও বালিকাদের শিক্ষাগত সুযোগের মধ্যে বিশেষ তারতম্য রয়েছে।
3. তপশিলি জাতি এবং উপজাতিদের সঙ্গে সমাজের উচ্চ সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের শিক্ষাগত সুযোগের মাধ্যমে যথেষ্ট বৈষম্য রয়েছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে শ্রেণী বৈষম্য দূর করে সর্বস্তরের জনসাধারণ সম্প্রদায় অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সামাজিক পদমর্যাদার নির্বিশেষে শিক্ষা লাভের সমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে তার জন্য কমিশন কতগুলি সুপারিশ করে।-
1. ধীরে ধীরে শিক্ষা প্রতিটি স্তরকে অবৈতনিক করে তুলতে হবে।
2. প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের পাঠ্য পুস্তক শিক্ষা উপকরণ ইত্যাদি সরবরাহ করতে হবে।
3.পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মধ্যে সরকারি বেসরকারি শিক্ষাকে অবৈতনিক করতে হবে। এর পরিবর্তে বছরের মধ্যে উচ্চতম মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে দারিদ্র্য ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অবৈতনিক করতে হবে।
4. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং মহাবিদ্যালয় বুক বোর্ডের তুলতে হবে।
5. শিক্ষার প্রতিটি স্তরে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগণের ব্যবস্থা করতে হবে।
6. জাতি-ধর্ম-বর্ণ সম্প্রদায় ও অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীকে শিক্ষা লাভের সমান সুযোগ দেয়ার জন্য সাধারণ বিদ্যালয় প্রথা প্রবর্তন করতে হবে।
কমিশনের অভিমত যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সমযোজক প্রতিষ্ঠা করতে হলে সরকারের শিক্ষা সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করা উচিত কিন্তু ভারতের মতো বহু সমস্যা জর্জরিত দেশের সরকারের পক্ষে শিক্ষা সম্পন্ন দায়িত্ব গ্রহণ করা সম্ভব কি না তা আজ একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের নিজস্ব চাহিদা সমর্থ্য পছন্দ-অপছন্দ অনুযায়ী শিক্ষক গ্রহণ করতে পারে। সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ করতে হবে। তাহলে শিক্ষাক্ষেত্রে সং সুযোগ সৃষ্টির ধারণাটি বাস্তবায়িত হবে।