welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ডায়াগোনাল স্কেল বা কর্ণীয় স্কেল-এর গঠন (construction of diagonal scale)

ডায়াগোনাল স্কেল বা কর্ণীয় স্কেল-এর গঠন (construction of diagonal scale)


সংজ্ঞা (definition):

যে রৈখিক স্কেলে মুখ্য ও গৌণভাগ এবং প্রগৌণ বিভাজন বা ভাগ থাকে এবং প্রগৌণ বিভাজন মান নির্ণয়ের জন্য গৌণ বিভাজন বিন্দুগুলি থেকে কতকগুলি আয়তক্ষেত্রের কর্ণ (diagonal) অঙ্কন করা হয় তাকে ডায়াগোনাল স্কেল বলে।

ব্যবহার (uses):

সাধারণ রৈখিক স্কেলকে মুখ্য ও গৌণ এই দুটি বিভাগ পর্যন্ত ভাগ করা যায়, কিন্তু কোনো বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র অথবা মৌজা ম্যাপ (mouza map) এর জন্য গৌণ বিভাগ ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র ভাগ করার প্রয়োজন হয়। সেই জন্যই ডায়াগোনাল স্কেল-এর প্রয়োজন। ডায়াগোনাল স্কেলের সাহায্যে মানচিত্র প্রস্তুত ও অঙ্কন আরও নিখুঁতভাবে করা সম্ভব হয়।

বৈশিষ্ট্য (characteristics):

একটি ডায়াগোনাল স্কেলে মুখ্য (primary), গৌণ secondary) and প্রগৌণ বিভাজন (tertiary division) থাকে। সাধারণত মোট প্রগৌণ বিভাজন-এর মান একটি গৌণ বিভাজন-এর সমান এবং একইভাবে মোট গৌণ বিভাজন-এর মান একটি মুখ্য বিভাজন-এর সমান।

ডায়াগোনাল স্কেলে মুখ্য ভাগের মান গৌণ ও প্রগৌণ ভাগের মান দ্বারা অবশ্যই বিভাজ্য। আবার গৌণ ভাগের মানও প্রগৌণ ভাগের মান খারা বিভাজ্য। সুতরাং মুখ্য ভাগে ও গৌণ ভাগ এবং গৌন ভাগ ও প্রগৌণ ভাগের মধ্যে ভাজ্য-ভাজক সম্পর্ক বর্তমান।

মৌজা মানচিত্রে এই স্কেলের ব্যবহার সর্বাধিক।

প্রগৌণ অংশের সমস্তভাগ সদৃশ ত্রিভূজ গঠনের নীতি মেনে করা হয়।

প্রগৌণ ভাগের এক-একটি অংশ গৌণভাগের আনুপাতিক দৈর্ঘ্যকে নির্দেশ করে।

এই স্কেলের ক্ষেত্রে মুখ্য, গৌণ ও প্রগৌণ ভাগে কোনো দৈর্ঘ্যকে বিভক্ত করে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মান পাঠ করা যায়।

সদৃশ ত্রিভুজ গঠনের নীতিতে ডায়াগোনাল স্কেল তৈরি (making of diagonal scale using the principle of construction of similar tangle)

কারণ (reason): রৈখিক স্কেলে গৌণ ভাগের দৈর্ঘ্য এত ছোটো থাকে যে একে সরলরেখা বিভাজন করার পদ্মতি অনুযায়ী ভাগ করা সহজ নয় এবং ভাগ করা হলেও তা নির্ভুল নয়। তাই সদৃশ ত্রিভুজের নীতি অনুযায়ী গৌশ ভাগকে আরও ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করা হয়।

নীতি (principle): সদৃশ ত্রিভুজের একই কোণ (৪) বিশিষ্ট অনুরূপ বাহুগুলি উহাদের ভূমির সাথে সর্বদা সমানুপাতিক হওয়ার জন্য।

নীতির প্রমাণ (proof of principle):

① ধরা যাক, প্রদত্ত চিত্রে BC দৈর্ঘ্যকে 4 টি অংশে ভাগ করতে হবে। এখন BC এর ৪ বিন্দু থেকে যে কোনো পরিমাণ দৈর্ঘ্যের BA লম্ব টানা হল এবং AC যুক্ত করে ABC একটি ত্রিভুজ গঠন করা হল।

② এই ত্রিভুজের AB রেখাকে সমান চার ভাগে ভাগ করে এ টি সদৃশ ত্রিভুজ, যথা-i) Amn, ii) Aop, iii) Aqr এবংiv) ABC গঠন করা হয়েছে।

গৌণ ও প্রগৌণ বিভাজন বা ভাগের লৈখিক গঠন (graphical construction of secondary and tertiary divisions)

ধরা যাক, এক ইঞ্চি দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট AB রেখাটি দশটি সমান অংশে ভাগ করতে হবে। AB লাইনের ওপর AC ও BD দুটি লম্ব অঙ্কন করা হল এবং দুটি লম্বকে সমান দশটি ভাগে ভাগ করে বিভিন্ন ছেদ বিন্দুকে পরম্পর এক-একটি সমান্তরাল রেখার দ্বারা যুক্ত করা হল 1 যাতে প্রতিটি ভাগ সমান ১০ হয়। ডানদিক থেকে বাঁদিকে এই দশটি ভাগকে যথাক্রমে 0, 1, 2, 3, 4... 10 ইত্যাদি সংখার দ্বারা চিহ্নিত করা হল। এখন নীচের লাইনের ৫-এর সঙ্গে ওপরের লাইনের 1. নীচের লাইনের 1-এর সঙ্গে ওপরের। এভাবে সমস্ত ভাগগুলি যুক্ত করা হল। এখন নীচের লাইনের। অংশ গ্রুপরের লাইনের GH অংশটির সমান হবে এবং এস দৈর্ঘ্য 10 ইঞ্চি হবে। এখন FG লাইনের ডানদিক (নীচ থো উপরের দিকে) বরাবর GH-এর্ দিকে অগ্রসর হলে প্রখ্য যে ধাপটি পাওয়া যাবে সেটি 10 ইঞ্চির 10-এর সমান অধ্য 0.01 ইঞ্চি হবে। দ্বিতীয় ধাপটি 0.02 ইঞ্চি, তৃতীয়টি ৫৪ ইঞ্চি,......0.09 ইঞ্চি এবং অবশেষে GH=EF=0.1-এই হরে। সুতরাং এভাবে আমরা এক ইঞ্চির 100 ভাগ অর্থাৎ 100 ইঞ্চি পর্যন্ত মাপতে পারি।

ডায়াগোনাল স্কেল-এর অঙ্কন প্রণালী (method of drawing of diagonal scale)

একটি ডায়াগোনাল স্কেল অঙ্কন করে 2.56 ইঞ্চি দৈর্ঘ্য। ও মাপতে হবে। AB লাইনটি 4.00 ইঞ্চি দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট অঙ্কন ওরে একে চারটি সমান অংশে ভাগ করা হল। এখন AC এবং BD দুটি লম্ব অঙ্কন করে CD যুক্ত করা হল। এখন AC এবং BD বায়ু দুটিকে সমান দশ ভাগে ভাগ করে প্রতিটি অংশকে পরস্পর সমান্তরাল রেখার দ্বারা যুক্ত করা হল। AB রেখাটিকে সর্বপ্রথম চারটি সমান অংশে ভাগ করা হয়েছিল। এখন এর সবচেয়ে বাঁদিকের অংশটির ওপরের এবং নীচের রেখা দুটিকে সমান দশ ভাগে ভাগ করা হল। এখন নীচের লাইনের ০-এর সঙ্গে ওপরের লাইনের 1, নীচের 1-এর সঙ্গো ওপরের 2-এভাবে নীচের এবং ওপরের সব অংশগুলি যুক্ত করে স্কেলটির অঙ্কন কাজ শেষ করা হল। এখন 2.56 ইঞ্চি মাপতে ডিভাইডারের একটি অংশ ২ ইঞ্চির ঘরে এবং অপর অংশটি 0.56-এ বসিয়ে (অর্থাৎ নীচে ০ থেকে-এর দিকে ও ঘর গুনে ওই লাইন বরাবর ওপরের (CA লাইন বরাবর) 6-এর দিকে গেলে যে দূরত্ব পাওয়া গেল তাই 0.56 হবে) 2.56 ইঞ্চি মাপা হল, চিত্রে তীর চিহ্নিত রেখাটি দ্বারা 2.56 ইঞ্চি মাপটি দেখানো হল।

ডায়াগোনাল স্কেলে পাঠগ্রহণ (reading from diagonal scale)

ডায়াগোনাল স্কেলের পাঠগ্রহণ এবং এই স্কেলের সঠিকভাবে অঙ্কন নির্ভর করে মুখ্য, গৌণ ও প্রগৌণ বিভাজনের মান ও সংখ্যা নির্ণয় করার ওপর। তবে মুখ্য বিভাজনের সঠিক মান নির্ণয় করা অবশ্যই প্রয়োজন। ধরা যাক, ডায়াগোনাল স্কেল থেকে 2.56 ইঞ্চি পাঠ নিতে হবে। এক্ষেত্রে এভাবে ভাবা যেতে পারে-

মুখ্য বিভাজন (primary division) থেকে2.00 ইঞ্চি

গৌণ বিভাজন (secondary division) থেকে 0.50 ইঞ্চি

এবং প্রগৌণ বিভাজন Tertiary division থেকে 0.06 ইন্দি

 অর্থাৎ মোট= 2.56 ইঞ্চি পাঠ 

গ্রহণ করা যাবে

অতএব, মুখ্য বিভাজনের মান যদি 1 ইঞ্চি ধরা হয় এবং একে 10 ভাগ করে গৌণ বিভাজনের মান 0.1 ইঞ্চি এবং গৌণ বিভাজনকে 10 ভাগ করে প্রগৌণ বিভাজনের মান ০৪০১ ইঞ্চি পাওয়া যায়, তাহলে 2.00 ইঞ্চি+1 ইঞ্চি = 2 টি মুখ্য ভাগ, 0.5 ইঞ্চি+ 0.1 ইঞ্চি = 5 টি গৌণ ভাগ এবং 0.06 ইঞ্চি+ 0.01 ইঞ্চি = 6 টি প্রগৌণ বিভাজনের সাহায্যে মোট পাঠকে স্কেলে দেখানো খুব সহজ হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01