প্রেষণা সম্পর্কিত ওয়াইনারের কারণ নির্দেশক তত্ত্বটি আজোছনা করো
প্রেষণা সম্পর্কিত ওয়াইনারের কারণ নির্দেশক তত্ত্ব
ওয়ার্নারের মতে কোন ব্যক্তি যে কোন কাজ সম্পাদন করলে সেই কাজের দুটিই ধরনের অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে,যথা -
1. ব্যক্তি কাজটিতে সাফল্য লাভ করতে পারে.
2. ব্যক্তি কাজটিতে ব্যর্থ হতে পারে.
কোন কাজে সাফল্য লাভ করলে ব্যক্তি পরিবর্তন কাজে প্রেষণা লাভ করে অন্যদিকে কাজের ব্যর্থ হলে পরিবর্তন কাজের প্রতি প্রেষণা বা উৎসাহ কমে যায়. এটি হলো ওয়াইনারের কারণ নির্দেশক তত্ত্বের মূল কথা।
ওয়াইনার এই তথ্যটি তিনটি প্রাথমিক ধারণার ওপর ভিত্তি করে স্থির করেছে। ধারণার তিনটি হল-
1. যেসব আচরণ মানুষের কাজে গুরুত্বপূর্ণ, তার কারণ জানতে বেশিরভাগ মানুষ আগ্রহ প্রকাশ করে.
2. ব্যক্তির কোন কাজে সফল বা বিফল হলে যুক্তিসহকারে ব্যাখ্যা করে সফলতা ও বিফলতার কারণগুলি নির্দিষ্ট কারার চেষ্টা করে।
3. ব্যক্তি তার সফলতা বা বিপদতার জন্য যে কারণ গুলি চিহ্নিত করে সেই কারণগুলি ব্যক্তির পরিবর্তিত আচরণের ক্ষেত্রে অনেকখানি প্রভাব বিস্তার করে.
ওয়াইনারের মতে ব্যক্তি কোন কাজে সাফল্য বা ব্যর্থতার পিছনের কারণ হিসাবে চারটি যুক্তি অবতারনা করা হয়। যুক্তিগুলি নিচে আলোচনা করা হলো-
(1)ক্ষমতা: ব্যক্তি কোন কাজের সফল হলে ওই কাজের জন্য নিজেকে সক্ষম বলে মনে করে এবং সফলতা তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগ্রত করে। ফলে সেই পরিবর্তিত কাজে আরও বেশি আগ্রহী হয়। ওয়াইনের মতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোন বিষয়ে বিফল হলে শিক্ষক-শিক্ষিকার উচিত তাদের মধ্যে থেকে ভিত্তি দূর করে উপযুক্ত নির্দেশনা দের মধ্যে তাদের মধ্যে সাফল্য মনোভাব জাগে তোলা।
(2) প্রচেষ্টা: ওয়াইনারের মতে কোন কাজের সফল হওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো প্রচেষ্টা। কোন কাজের সফল হওয়ার জন্য কতটা প্রচেষ্টা প্রয়োজন তা প্রাথমিক অবস্থায় ব্যক্তির জানা থাকে না। তবে সফলতার জন্য যে প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয় তা প্রত্যেক সফল ব্যক্তি উপলব্ধি করতে পারে। সফল ব্যক্তিকে পরবর্তী প্রচেষ্টা প্রেষণা সঞ্চার করে। ওয়াইনারের মতে ব্যক্তি কোন কাজের জন্য প্রচেষ্টারে মূল্যায়ন হয় তার সাফল্য বা ব্যর্থতার মাধ্যমে। তাই বলা যায় সাফল্য বা ব্যর্থতার একটি কারণ হলো প্রচেষ্টা।।
(3) কাজের কাঠিন্য:ওয়াইনারের মতে কাজের কাঠিন্যের সঙ্গে প্রেষণা একটি সম্পর্ক বর্তমান। কোন কাজের কঠিন হলে এবং তাকে সাফল্যের সম্ভাবনা কম হলে ওই কাজের ব্যক্তির প্রেষণার হ্রাস পায়। ওয়াইনারের মতে শিখন এর ক্ষেত্রে নির্ধারিত পাঠ্যক্রম যদি শিক্ষার্থীর সমার্থক অনুযায়ী হয় তাহলে সাফল্যের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় এবং প্রেষণা সৃষ্টি হয়।
(4) ভাগ্য: ওয়াইনারের মতে ব্যক্তির কোন কাজের সাফল্য বা ব্যর্থতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভাগ্য। কোন কাজের ক্ষেত্রে সামর্থ্য এবং প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও যদি কোন ব্যক্তি ব্যক্ত হয় তাহলে সেটি ভাগ্যের জন্য ঘটেছে বলা হয়।
শিখনের ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকার দায়িত্ব হলো ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উপযুক্ত প্রেষণার সঞ্চয় গঠন যাতে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের সফলতার তার প্রচেষ্টা ও সমাপ্তের মধ্যে যুক্ত করতে পারে। শিক্ষার্থীরা যেন সফলতা বা ব্যর্থতাকে কেবল ভাগ্যের উপর ছেড়ে না দেয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কেবল ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষনের সক্রিয় পাবে। তার মধ্যে এই বোধ জাগ্রত করতে পারে নিষ্ক্রিয় ভাগ্য কখনোই কোন শিক্ষার্থী বা ব্যক্তিকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে পারে না। সুতরাং জীবনের যেকোনো ধরনের সাফল্যের জন্য চাই সঠিক প্রচেষ্টা এবং সফলতা।