শিল্পাঞ্চলের ধারণা (Concept of Manufacturing Region)
অনুকূল ভৌত (physical) ও আর্থ-সামাজিক (socio-economic) কারণে যেখানে বিভিন্ন শিল্প একে অন্যের সহযোগী হিসাবে (integrated) বা প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠে, সেই স্থান বা অঞ্চলকে শিল্পাঞ্চল বা ম্যানুফ্যাকচারিং রিজিয়ন (manufacturing region) বলে।
■ বৈশিষ্ট্য :
শিল্পাঞ্চলগুলি ভৌগোলিক গতি জাড্যতা (inertia in motion)-র জন্য স্বাভাবিক ভাবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠতে পারে, যেমন— কলকাতা বা হুগলি শিল্পাঞ্চল। আবার প্রশাসনিক বা সরকারি নীতির প্রভাবেও শিল্পাঞ্চল তৈরি হতে পারে, যেমন— দুর্গাপুরে লৌহ ইস্পাত শিল্প স্থাপিত হওয়ার পরে তৈরি হওয়া আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল।
শিল্পাঞ্চলগুলির মধ্যে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংযোগ (economic integration) তৈরি হয়। যেমন— (i) অনুভূমিক সংযোগ (horizontal integration - কাগজ শিল্প, অটোমোবাইল শিল্পে), (ii) উল্লম্ব সংযোগ (vertical integration - সম্পূরিত কার্পাস বয়ন শিল্পে), (iii) বৃত্তীয় সংযোগ (circular integration) - বিভিন্ন আপাত সম্পর্কহীন শিল্পগুলির 1 মধ্যে সংযোগ তৈরি হলে (যেমন- টাটা-র চা, টাটার মোটর গাড়ি উৎপাদন, টাটার IT শিল্প – TCS)। উদাহরণ- মুম্বাই-আমেদাবাদ শিল্পাঞ্চল।
■ শিল্পাঞ্চল শনাক্তকরণের উপায় :
শিল্পাঞ্চলকে বিভিন্ন সূচকের ভিত্তিতে শনাক্ত করা যায়, যেমন— (i) শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা (number of industrial units), (ii) শ্রমিকের সংখ্যা (number of industrial workers, (iii) কী পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয় (quantum of power used), (iv) শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণ (total industrial output), (v) শিল্পের মাধ্যমে পণ্যের মূল্য-যুক্তকরণ (বা উপযোগিতা বৃদ্ধি) (value added by manufacturing) ইত্যাদি
■ ভারতের প্রধান শিল্পাঞ্চলসমূহ :
ভৌগোলিক R.L. Singh and B. N. Sinha ভারতে যে প্রধান শিল্পাঞ্চলগুলি শনাক্ত করেছেন, সেগুলি হল— (i) হুগলি শিল্পাঞ্চল, (ii) মুম্বাই-পুনে শিল্পাঞ্চল, (iii) আমেদাবাদ- ভদোদরা শিল্পাঞ্চল, (iv) মাদুরাই-কোয়েমবাটুর-বেঙ্গালুরু শিল্পাঞ্চল, (v) ছোটোনাগপুর মালভূমি অঞ্চল, (vi) আগ্রা-মথুরা- মিরাট-সাহারানপুর শিল্পাঞ্চল এবং (vii) ফরিদাবাদ-গুরগাঁও-আমবালা শিল্পাঞ্চল
