ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র (geological map)
ভূ-অভ্যন্তরে মৃত্তিকার স্তর বিন্যাসের ধারা এবং বিভিন্ন প্রকার শিলার অবস্থান, গঠন প্রকৃতি, গভীরতা প্রভৃতি ভূতাত্ত্বিক উপাদান যে মানচিত্রে দেখানো হয় তাকে ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র (geological map) বলে।
ভূগোলবিদদের কাছে এরূপ মানচিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। ভূ-পৃষ্ঠের কোথায় কীরূপ শিলা রয়েছে তার ভৌগোলিক বন্টন এবং ভূ-অভ্যন্তরে বিভিন্ন শিলাস্তরের বিন্যাস কীরূপ তা ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র থেকে জানতে পারা যায়। ভূ-পৃষ্ঠের প্রাকৃতিক বিভাগ ও মৃত্তিকা বৈশিষ্ট্য, খনিজের বন্টন এবং জল সরবরাহের সমস্যা বোঝার জন্য এরূপ মানচিত্র আমাদেরকে সাহায্য করে। ভূ-ত্বকের উপরের অংশ যেসব শিলা দ্বারা গঠিত সেই শিলাগুলোর প্রকৃতি, বয়স ও বিভিন্ন শিলার মধ্যে সম্পর্ক সম্বন্ধে তথ্য পাওয়া যায় এরূপ মানচিত্র থেকে।
ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রের প্রস্থচ্ছেদ অঙ্কন করে তা ব্যাখ্যা করলে ভূ-অভ্যন্তরের বিভিন্ন স্থানের শিলা লক্ষণ (lithology) ও শিলা গঠন (structure) সম্পর্কেও জানতে পারা যায়। আবার, শিলা লক্ষণ ও গঠন প্রকৃতি দেখে কোনও অঞ্চলের ভূ-পৃষ্ঠের উপর বিভিন্ন ভূমিরূপের ক্রমবিকাশ সম্পর্কে ধারণা করা যায় ।
সংজ্ঞা (definition):
1 যে মানচিত্রে কোনো অঞ্চলের ভূ-অভ্যন্তরীণ শিলাসমূহের গঠনগত বৈশিষ্ট্য, গঠিত ভূমিরূপ প্রভৃতি প্রদর্শন করা হয়। তাকে ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র (geological map) বলে।
2 যে মানচিত্রে কোনো বিশেষ ভূমিরূপ অঞ্চলের বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক যুগে গঠিত বিভিন্ন প্রকার শিলার গঠনগত বৈশিষ্ট্য, বিন্যাস, ভূমিরূপের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক, তাদের বন্টন প্রভৃতি প্রদর্শন করা হয় তাকে ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র (geological map) বলে।
গুরুত্ব (important):
কোনো বিশেষ ভূমিরূপযুক্ত ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রের সাহায্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি জানা যায়—
1 ভূ-অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে।
2 ভূতাত্ত্বিক বিবর্তণ ও ইতিহাস সম্পর্কে।
3 ভূমিরূপের উপর ভূ-অভ্যন্তরীণ গঠনের নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে।
4 ভৌমজলের সম্ভাব্য অবস্থান ও খনিজ সম্পদের ভাণ্ডারের অবস্থান সম্পর্কে।
5 জলনির্গম প্রণালীর প্রকৃতি সম্পর্কে এবং
6 ভূ-অভ্যন্তরীণ শিলার গুণাগুণের উপর মৃত্তিকার প্রকৃতি সম্পর্কে।