welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারাগুলিতে কী কী অসংগতি লক্ষ করা যায় তা লেখো।

ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারাগুলিতে কী কী অসংগতি লক্ষ করা যায় তা লেখো।


উত্তর

ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারার অসংগতি

ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারাগুলি পর্যালোচনা করলে, বস্তু অসংগতি বা ত্রুটি ধরা পড়ে। নীচে কয়েকটি অসংগতি উল্লেখ করা হল-

[১] প্রাথমিক শিক্ষার দায়দায়িত্ব: সংবিধানে এ৯ নং ধারাতে বলা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষার দায়দায়িত্ব রাজ্য সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকবে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সমগ্র দেশের সর্বজনীন বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণের বিশেষ দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের ওপরই নাক রয়েছে।

[2] মাধ্যমিক শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার বিষয়: মাধ্যমিক স্বরের শিক্ষার উদ্ভব, বিকাশ ও প্রশাসনগত কাঠামোগঠনের ক্ষেত্রে যেমন রাজ্য সরকার দায়বন্ধ থাকবে, তেমনই উচ্চশিক্ষার বিকাশ ও সমন্বয়সাধনের ক্ষেত্রেও সরকার দায়বন্ধ থাকবে।

[3] বিশেষ রাজ্যকে অতিরিজ সহায়তাদান: সংবিধানের 46 নং ধারায় উল্লিখিত যে, আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক বৈষম্য দূরীকরণের জন্য প্রয়োজনবোধে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ কোনো রাজ্য সরকারকে অতিরিক্ত সাহায্য প্রদান করতে পারবে।

[4] রাজ্য সরকারের শিক্ষা ও ভাষানীতিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ: সংবিধানের 350(A) ধারায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভাষা ও সাংস্কৃতিক স্বার্থরক্ষার ক্ষেয়ে সর্বদা সাহায্য করবে এবং ওই সম্প্রদায়ের সন্তানসন্ততি যাতে মাতৃভাষার মাধ্যমে অন্তত প্রাথমিক ভরের শিক্ষালাভের সুযোগ পায়, তারজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এখানে দেখা যাচ্ছে, রাজা সরকারগুলির শিক্ষা ও ভাষানীতির ওপর কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের সুযোগ রাখা হয়েছে।

[5] জাতীয় ভাষার উন্নয়ন: সংবিধানের 351 নং ধারায় জাতীয় ভাষার বিকাশের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর দায়িত্ব ন্যন্ত করা হয়েছে, কিন্তু অহিন্দিভাষী রাজনগুলি চায় না যে কেন্দ্রীয় সরকার এই দায়িত্ব পালন করুক।

[6] উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়িত্বদান: সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 66 নং অনুচ্ছেদে বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়সাধন ও শিক্ষার মান নির্ধারণে কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। অথচ এটাও সত্যি যে, রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ে বা সমরূপ প্রতিষ্ঠানে রাজ্য সরকারের সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব অস্বীকার করা যায় না।

[7] ধর্ম ও সম্প্রদায়ভিত্তিক নামকরণ: সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকায় 63 নং অনুচ্ছেদে বারাণসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ম ও সম্প্রদায়ভিত্তিক নামকরণ লক্ষ করা যায়। ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ভারতে এই ধরনের নামকরণ কাম্য নয়।

[৪] রাজ্য সরকারগুলির শিক্ষাক্ষেত্রে তৎপরতা: সংবিধানে শিক্ষাকে বর্তমানে যুগ্ম তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সুতরাং শিক্ষার যে-কোনো দায়িত্ব রাজা এবং কেন্দ্র সরকারের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হওয়া উচিত । 

কিন্তু বিভিন্ন কারণে সকল রাজ্যকে কেন্দ্র সমানভাবে নজরে রাখতে পারে না। মর্যাদা রক্ষার তাগিদে রাজ্যের সহ ক্ষেত্রের অধিকাংশ শিক্ষা সম্পর্কিত দায়িত্ব পালন করতে হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01