(a) শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তন তত্বের উপযোগিতা আলোচনা করো।
অথবা, শিপুর শিখনে অপারেন্ট অনুবর্তনের প্রভাব লেখো। অথবা, অপারেস্ট অনুবর্তনের শিক্ষাগত তাৎপর্য লেখো।
(b) সক্রিয় অনুবর্তন্ত্রের সীমাবদ্ধতা লেখো।
উত্তর
(a) শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তনের উপযোগিতা
সক্রিয় অনুবর্তন নীতি বর্তমানে শিক্ষাক্ষেতে নানাভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল। পরিকল্পিত শিখন পদ্ধতি এবং ।।. আচরণ সংশোধনের কৌশল
[1] পরিকল্পিত শিক্ষণ পদ্ধতি: কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন নীতিকে ভিত্তি করে এই যুগান্তকারী শিক্ষণ পদ্ধতিটি রূপ পেয়েছে। পরিকল্পিত শিক্ষণ। পদ্ধতি হল পরিকল্পিতভাবে পর্যায়ক্রমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভরের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছোনো। যে বিষয়টি শিক্ষার্থীরা শিখবে, সেই বিষয়টিকে শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করা হয়, একে 'ভেম বলে। প্রত্যেকটি ফ্রেম এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই নিজে পড়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। ওই ফ্রেমগুলি বইয়ের আকারে বা ডিডিয়ো চেপে ধরে রাখা হয়। শিক্ষার্থী প্রতিটি অংশ বা ফ্রেম পর্যায়ক্রমে শেখে। প্রতিটি অংশেই প্রশ্ন থাকে। একটি অংশ বা ফ্রেমের প্রতিষ্ঠি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে না পারলে পরবর্তী অংশ পড়ার অনুমতি দেওয়া হয় না। আবার ওই অংশটিই পড়তে হয়। এইভাবে সমগ্র বিষয়টি শিক্ষার্থী শিখে ফেলে। বিভিন্ন শিখনের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি আজ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সু-রকমের প্রোগ্রাম আছে সরলরৈখিক প্রোগ্রাম এবং শাখা প্রোগ্রাম। চুলকে ডিতি করে শাখা প্রোগ্রাম ব্যবষ্কৃত হয়।
[2] আচরণ সংশোধনের কৌশল: শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল আচরণ সংশোধন করা, যেখন অবাঞ্ছিত আচরণের সংশোধন, ভুল বানান শুদ্ধ করাইত্যাদি। সক্রিয় অনুবর্তনের অন্যতম নীতি হল 'শেপিং" (shaping)। এ নীতির দ্বারা শক্তিদায়ী উদ্দীপককে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীর অবাঞ্ছিত আচরণ ও অভ্যাস ধীরে ধীরে সংশোধন করা হয়।
উপরোক্ত বিষয়গুলি ছাড়াও শিক্ষা-শিখন প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অনুবর্তন প্রক্রিয়াকে দু-ভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে। যেমন। শক্তিদায়ী উদ্দীপকের সাহায্যে শিক্ষাভীতিকে দূর করা যায়, ৪ শিক্ষার্থীর আকাঙ্ক্ষিত আচরণকে তাৎক্ষণিক শক্তি দায়ী উদ্দীপকের মাধ্যমে শক্তিশালী করা যায়।
(b) সক্রিয় অনুবর্তনের সীমাবদ্ধতা
অধিকাংশ মনবিদ ব্যক্তির আচরণ সংশোধন এবং শ্রেণিকক্ষের শিখন এর সক্রিয় অনুবর্তনের কার্যকারিতা স্বীকার করেছে। তবে কোন কোন মনস্তত্ত্ববিদ ল্যাবরেটরির বাইরে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নোয়াম চমস্কি।
চমস্কি সক্রিয় অনুবর্তনের যেসব সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেছে ,সেগুলি হল -
1. স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রয়োগ যোগ্যতা অভাব: চমস্কি বলেন যে পরীক্ষাগারের মতো নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে শিখন সংক্রান্ত পরীক্ষায় যে ফল পাওয়া যায় স্বাভাবিক শিখন পরিস্থিতিতে তার প্রয়োগ যোগ্যতা সম্পর্কে সন্দেহ অবকাশ থেকে যায়। পরীক্ষাগারের সক্রিয় অনুবর্তনের যে নীতিগুলি আবিষ্কৃত হয় স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তার প্রয়োগ সম্পর্কে প্রশ্ন থাকায় স্বাভাবিক। এর কারণ এখানে আচরণ ও তার নিয়ন্ত্রণকারী উদ্দীপকের সম্পর্কটি অনেক জটিল।
2. বংশগত ও গঠনগত উপাদান উপেক্ষিত: স্কিনার ব্যক্তির বংশগত ও গঠনগত উপাদানগুলির ওপর কোনো গুরুত্ব আরোপ করেনি যদিও মনস্তত্ত্বের দিক থেকে ভাষার বিকাশের এর গুরুত্ব আজ সকলেই স্বীকার করেছেন।
3. অসম্পূর্ণ ব্যাখ্যা: সক্রিয় অনুবর্তনের শক্তি দায়ী উদ্দীপক ব্যবস্থা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা কৌতুহল এবং সৃজনশীলতার ব্যাখ্যা করতে সক্ষম নয়।
4. সহজাত বৈশিষ্ট্য উপেক্ষিত: চমস্কি সহজে আজ বৈশিষ্ট্যাবলীর কথা অস্বীকার করে বলেছেন যে সমস্ত আচরণ মানুষের জীবনকালেই অজিত হয়। তবে মনোবিদগণ একথা স্বীকার করে না