প্রেষণার সংজ্ঞা নিরূপণ করো। সংক্ষেপে প্রার্থনা চক্র বর্ণনা করো।
উত্তর:
প্রেষণার সংজ্ঞা:
1. মনোবিদ সুইফ্ট এর মতে ব্যক্তি নানান প্রকার চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য যে পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া, তার আচরণ ধারাকে সর্বদা নিয়ন্ত্রণ করে তা হল প্রেষণা।
2. মনোবিদ উইনার বলেন যে প্রেষণা এমন একটি অবস্থা যা ব্যক্তিকে বিশেষ একটি ক্রিয়া সম্প্রদানের উদ্বুদ্ধ করে ক্রিয়ার সম্প্রদান কে নির্দিষ্ট লক্ষ্য মুখী করে এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার পর্যন্ত ব্যক্তিকে কর্ম সম্প্রদানের ব্যস্ত রাখুন।
3. আকাঙ্খার প্রয়োজন এবং আগ্রহ যা একটি প্রাণীকে সক্রিয় করে তোলে এবং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর দিকে পরিচালিত করে তাকে প্রেষণা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।
সুতরাং মনোবিদ বনের উপরের লিখিত সংজ্ঞার ভিত্তিতে বলা যায়, প্রেষণা বা মোটিভেশন হলো সেই আচরণ বা ক্রিয়া যা কোন অভাব বোধ এবং ওই অভাব দূর করা উদ্দেশ্যে তাড়না দ্বারা নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালিত হয়।
প্রেষণার চক্র: প্রেষণা হল একটি অর্ধবোধক আচরণ। আচরণ অভাব বোধ বা প্রয়োজন বোধ দ্বারা সৃষ্টি হয় এবং কোন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য লক্ষ্যবস্তুর দিকে পরিচালিত হয়।। এসো নাকি বিশেষণ করলে চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্তরের সম্বন্ধে পাওয়া যায়। এই স্তর গুলি চক্রাকারের আবদ্ধিত হয়ে প্রেষণা চক্রসম্পন্ন করেন। স্তর গুলি হল- 1. অভাব বোধ বা চাহিদা, 2. তাড়না, 3. সহায়ক বা যান্ত্রিক আচরণ, 4. লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য.
1. অভাব বোধ বা চাহিদা: রানীর প্রেষণা চক্রের প্রথম ধাপ হল অভাব বোধ বা চাহিদা। নানান কারণে প্রাণীর মধ্যে অভাব বোধ বা চাহিদা দেখা দিতে পারে।। যেমন-
1/ দেহের পলা কোষের প্রয়োজনীয় কোন উপাদান ঘাটতি দেখা দিলে, তা থেকে শারীরিক প্রেষণার উন্মেষ ঘটে। খুদা, তৃষ্ণা ইত্যাদি হলো শারীরিক প্রেষণা।
2/ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অবস্থার কারণে ব্যক্তির মধ্যে অভাব বোধ বা চাহিদা দেখা দিতে পারে। ব্যক্তির সুযোগ-সুবিধা, ভোগ বিলাসের জন্য প্রেষণা উন্মেষ করতে পারে। প্রকৃতি প্রভাব বিস্তরের স্পৃহা এর জাতির পেছনে।
3/ বিভিন্ন অন্তক্ষরা গ্রন্থী নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থ তথা হরমো রক্ত স্রোতেরর মিশালে প্রাণীর উত্তেজিত হয় এবং নানান ধরনের আচরণ করে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, বিভিন্ন প্রকার স্টেরয়েড জাতীয় হরমোনপ্রাণী দেহের যৌন প্রেষণা মাতৃত্বের প্রেষণা ইত্যাদি সৃষ্টি করে।
2. তাড়না: কোন কিছুর অভাব বোধ বা চাহিদা থেকে প্রাণীর মধ্যে এক ধরনের অস্থির কর অবস্থা সৃষ্টি করে। ওই অস্বস্তিকর অবস্থা প্রাণীকে অভাব পূরণের জন্য তাড়িত করে। অর্থাৎ অভাবের তাড়নায় প্রাণীর সক্রিয় হয়ে ওঠে।
3. সহায়ক বা যান্ত্রিক আচরণ: প্রেষণা চক্রের তৃতীয় স্তর হলো শোক বা যান্ত্রিক আচরণ। রানি তার অস্থিরতা নির্মাণের জন্য বা তার লক্ষ্যবস্তুকে পাওয়ার জন্য কতগুলি বিশেষ আচরণ প্রদর্শন করে। একে সহায়ক আচরণ বলে।
4. লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য: প্রেষণা চক্রের চতুর্থ বা শেষ ধাপ লক্ষ্য বস্তুতে উপনীত হওয়া বা উদ্দেশ্য সাধন করা।। লক্ষ্যবস্তুতে উপনীত হতে পারলে প্রাণীর অস্থিকরণ শারীরিক অবস্থা দূরীভূত হয়। প্রাণীর তৃপ্তি লাভ করে এবং বিশ্রাম নেন।
প্রাণীর জীবনের প্রেষণার চারটি স্তর প্রায় ক্রমে উপস্থিত হয়।। একটি প্রেরনের শেষ হওয়ার পর মরতে অপর একটি প্রেরণের সৃষ্টি হয়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রাণীর জীবনে প্রক্রিয়া চক্রাকারে আবদ্ধিত হতে থাকে।