welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্য বায়োম(Tropical Rain Forest Biome)

ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্য বায়োম(Tropical Rain Forest Biome)


অক্ষাংশগত অবস্থান ও বিস্তার (Location)

নিরক্ষরেখার উভয় পার্শ্বে 10° অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত স্থান সারাবছর নিয়মিত প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও সূর্যরশ্মির লম্ব কিরণের দখুন চিরহরিৎ উদ্ভিদরাজির সৃষ্টি হয়েছে। এই অঞ্চল ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বৃষ্টি অরণ্য বায়োম নামে পরিচিত, যা বিপুল জীববৈচিত্রা সৃষ্টি করে কাম্য পরিবেশ সৃষ্টি করে। এই বায়োমকে অপটিমাম বায়োম (optimum biome) বা আদর্শ বায়োম বলা হয়। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন, আফ্রিকার কঙ্গো অববাহিকা, গিনি ও মাদাগাস্কার পূর্ব উপকূল, উত্তর পূর্ব হিমালয়ের ইন্দোচিন, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ পূর্বাংশ, জাভা, বোর্নিও, সুমাত্রা, নিউগিনি, ফিজি, ভারতের পশ্চিমঘাট পর্বতের পূর্ব চাল, উত্তর পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চল এবং শ্রীলঙ্কার দক্ষিণাংশে এই বনভূমি বিস্তৃত। তবে মেক্সিকোর ভেরা ব্রুক অঞ্চলেও এর বিস্তার রয়েছে।

জলবায়ু (Climate)

1. উদ্বুতা (Temperature): এই অঞ্চল সারাবাছরই লম্ব সূর্যকিরণ প্রাপ্ত হয়। সর্বোচ্চ উদ্বৃতা 30°C এবং দৈনিক উদ্বুতার প্রসর ১০-10°C, বার্ষিক উদ্বুতার প্রসর 1°C, গড় বার্ষিক উদ্বৃতা প্রায় 20°C পর্যন্ত হয়ে থাকে।

2. বৃষ্টিপাত (Rainfall): কিউমুলোনিম্বাস মেঘ থেকে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়। গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 200-400 সেমি। শতকরা 80-90 ভাগ আর্দ্রতা বায়ুতে থাকে ।

3. সূর্যালোক (Sunshine): উল্লম্ব সূর্যকিরণ বৃক্ষরাজির উর্ধ্বভাগ ভালোভাবে পেয়ে থাকে কিন্তু নিম্নদেশে সূর্যালোক পৌঁছায় না। তাই তলদেশ স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকে।

4. উদ্ভিদ সম্প্রদায় (Plant Community): সর্বাধিক বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদরাজি এই বনভূমিতে লক্ষ করা যায়। কঙ্গো অববাহিকায় প্রায় 6000-7000, মালয়েশিয়ায় 20,000, ব্রাজিলে 40,000 পুষ্পদায়ী উদ্ভিদ প্রজাতি সম্প্রদায় গঠন করে জীববৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছে। উদ্ভিদ সম্প্রদায়ে প্রধানত তিনপ্রকার উদ্ভিদরাজি পরিলক্ষিত হয়। যেমন-সেলভা, জঙ্গাল ও ঝোপ এবং উপকূলীয় উদ্ভিদ। তবে শতকরা 70-75 ভাগই বৃক্ষ। সুউচ্চ বৃক্ষ প্রজাতি ঊর্ধ্বদেশে চাঁদোয়ার মতো আস্তরণ তৈরি করে। ফলে নীচের দিকে সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে না। বৃক্ষগুলি অধিকাংশ সরল ও কাষ্ঠল হয়, উদ্ভিদ সম্প্রদায় পাঁচটি স্তরে বিভক্ত। যথা-

(i) চাঁদোয়াময় উদ্ভিদ অংশ যাদের উচ্চতা 30-60 মিটার হয়। এই স্তরটির প্রাধান্য সমস্ত বনভূমি জুড়ে লক্ষ করা যায় তাই একে প্রধান স্তর (dominant layer) বলা হয়।

(ii) দ্বিতীয় স্তরটিতে উদ্ভিদরাজি 25-30 মিটার হয় একে codominent layer বলা হয়।

(ii) এই স্তরটিতে উদ্ভিদরাজি ভূপৃষ্ঠ থেকে 15-20 মিটার পর্যন্ত উচ্চতা বিশিষ্ট হয়।

(iv) এই স্তরে উদ্ভিদগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে 5 মিটার পর্যন্ত হয়।

(v) এই স্তরে ভূমিসংলগ্ন মস, ফার্ন, গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ প্রজাতি জন্মায়, যারা 1-2 মিটার পর্যন্ত উচ্চ হয়।

এছাড়া হাটেসিয়াস ও লিয়ালর মতো আরোহী ভূমি সংলগ্ন অংশে ও চাঁদোয়া পর্যন্ত অংশে আরোহণ করে। এখানে ফার্ন, মস, লাইকেন, শৈবাল প্রভৃতি পরজীবী উদ্ভিদ, ছত্রাক, ব্যাকটিরিয়া প্রভৃতি পরভোজী উদ্ভিদ, ছত্রাক, ব্যাকটিরিয়া প্রভৃতি পরভোজী উদ্ভিদ দেখা যায়। আবার গাছের গুঁড়ি ও তলদেশে প্রচুর মৃতজীবী জন্মায়।

উদ্ভিদরাজি বৃক্ষজাতীয় হয় যা প্রায় 60-70 মিটার দীর্ঘ হয়। পাতার চাঁদোয়া ঊর্ধ্বদেশে লক্ষ করা যায়, সূচালো অগ্রভাগ বিশিষ্ট পত্রযুক্ত হয়, ঠেসমূল, সম্ভাকার দণ্ডবিশিষ্ট কাণ্ড যা ফুল ও ফলে সুশোভিত থাকে।

প্রাণী সম্প্রদায় (Animal Community)

চাঁদোয়া স্তরে পাখি, বাদুড়, এশিয়ান ফ্যালকোনেট, সেভিফলেট, সুইফ্ট প্রজাতি পরিলক্ষিত হয়। দ্বিতীয় স্তরে প্যারাকিট, লোরীকিট, হাটবিল, টুকান, তৃতীয় স্তরে পাখি, প্যাঁচা, চতুর্থ স্তরে কাঠবিড়ালি, গন্ধগোকুল, ও ভূমিভাগে ক্যাসোওয়ারিস, হরিণ, বুনো শূকর, বড়ো ও শক্তিশালী হাতি বাস করে। আবার ময়ূর, বনমোরগ, আগাস ফিজেন্ট প্রভৃতি প্রাণীরা বসবাসকরে।

খাদ্যশৃঙ্খল : বৃক্ষ পতলা ব্যাঙ সাপ ময়ূর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01