নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের গতিপথ(Track of Temperate Cyclone)
আকার (Shape)
নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতে সমচাপ রেখাগুলি বৃত্তাকার নয় এবং কম সমানুবর্তী। এর মধ্যবর্তী নিম্নচাপকেন্দ্রটি বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত হয়ে থাকে, যদিও এদের আয়তন বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। গড়ে এদের আয়তন 1,25,000 বর্গ কিমি থেকে 5,00,000 বর্গ কিমি-এর মধ্যে থাকে গতিবেগ (Velocity)
এদের গতিবেগও নির্দিষ্ট নয়। আবার অঞ্চলভেদে এদের গতিবেগের বিভিন্নতা দেখা যায়। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম থেকে পূর্বে চলমান ঘূর্ণবাতগুলির গতিবেগ গ্রীষ্মকালে ঘণ্টায় 25-35 কিমি এবং শীতকালে 50-60 কিমি পর্যন্ত হয়। গ্রীষ্মকালের তুলনায় শীতকালে অনুভূমিক বায়ুচাপ ঢালের পরিমাণ বেশি থাকে বলে স্বাভাবিকভাবে শীতকালে এদের গতিবেগ বেশি হয়। তবে কখনোই এদের গতিবেগ ঘণ্টায় 100 কিমি-র বেশি হয় না।
গতিপথ (Track and Movement)
নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাত সাধারণত পশ্চিমা বায়ুকে অনুসরণ করে পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত হয়। উত্তর গোলার্ধে মহাদেশের উপর সামান্য দক্ষিণে বাঁক নেয় কিন্তু সমুদ্রে বাঁক নেয় সামান্য উত্তরে। সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে এদের গতিপথও পরিবর্তিত হয়। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে শীতকালে এদের গতিপথ দক্ষিণে সরে গিয়ে দক্ষিণাঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছায় আবার গ্রীষ্মকালে উত্তরে সরে কানাডার মধ্যভাগে পৌঁছায়। অন্যান্য মহাদেশেও শীত-গ্রীষ্মে গতিপথের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
আবহাওয়া (Weather)
নাতিশীতোর ঘূর্ণবাতের শীতল ও উদ্বু সীমান্ত (front) অঞ্চলে ঘনীভবন, মেঘের উৎপত্তি এবং বৃষ্টিপাতের অনুকূল অবস্থার সৃষ্টি হয়। সীমান্ত সৃষ্টির প্রথম পর্যায়ে উধু সীমান্ত থেকে উর্দু বায়ু ওপরে উঠলে শীতলতার সংস্পর্শে এসে তা সিরাস (cirrus) ও সিরো-স্ট্যাটাস (cirro-stratus) মেঘে পরিণত হয়। তখন শীতল বায়ু নীচের দিকে নেমে এসে স্ট্যাটো-কিউমুলাস (strato-cumulus) মেঘের সৃষ্টি করে। এই পর্যায়ে সামান্য গুড়িগুড়ি বৃষ্টি (drizzle) হয়। যখন শীতল ও উয় সীমান্তের গঠনকার্য সম্পূর্ণ হয়, তখন শীতল সীমান্তে স্ট্র্যাটো-কিউমুলাস এবং উদ্বু সীমান্তে কিউমুলো-নিশ্বাস (cumulo-nimbus) মেঘের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রবল বর্ষণ ঘটে। আবার ঘূর্ণবাত যখন অন্তধৃত পর্যায়ে (occlusion stage) পৌঁছায় তখন ব্যাপক এলাকায় দীর্ঘসময় ধরে বৃষ্টি হয়। কারণ এ পর্যায়ে সীমান্ত অঞ্চল প্রায় স্থিরভাবে অবস্থান করে। এই বৃষ্টি কয়েকদিন একটানাও হতে পারে।