welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাত( Temperate Cyclone)

নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাত( Temperate Cyclone)


ধারণা (Concept)

 উভয় গোলার্ধে 30°-65° সমাক্ষরেখার মধ্যে যে সমস্ত তুলনামূলকভাবে দুর্বল ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়, তা নাতিশীতোয় মন্ডলের ঘূর্ণবাত নামে পরিচিত। এই অঞ্চলটি ক্রান্তীয় অঞ্চলের বাইরে বলে এদেরকে অতিক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত (extra tropi-cal cyclone) বলে। প্রকৃতপক্ষে উত্তরপূর্ব দিক থেকে শীতল সুমেরু বায়ু এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে উদ্বু পশ্চিমা বায়ু এই অংশে মিলিত হয়ে এই ঘূর্ণবাতের জন্ম দেয়। অর্থাৎ দুই অসম উদ্বুতা ও ঘনত্বসম্পন্ন বায়ুপ্রবাহ পরস্পর কাছাকাছি এসে এক আলোড়নের সৃষ্টি করে এবং একে অপরের সঙ্গে না মিশে যুযুধান সৈন্যের মতো আচরণ করে। সেইজন্য দুয়ের মাঝে এক বিচ্ছেদ রেখা (line of discontinuity) সৃষ্টি হয় যাকে নরওয়ের আবহবিদ জ্যাকব ব্যর্কনেস (Jakob Bjerknes, 1918) যুদ্ধ সীমান্ত বা front আখ্যা দিয়েছেন।

বৈশিষ্ট্য (Characteristics)

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের মতো এই ঘূর্ণবাতের কতকগুলি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়।

1. সমুদ্রের ঢেউ-এর মতো এই ঘূর্ণবাতের ঘূর্ণিও একটার পর একটা সৃষ্টি হয় এবং অবশেষে মিলিয়ে যায় বা বিনাশ হয়। সেই কারণে এই ঘূর্ণিবাতকে তরঙ্গ ঘূর্ণবাত (wave cy-clone) বলে।

2. যেহেতু দুটি বিপরীতধর্মী বায়ুপুঞ্জের (air mass) সংঘর্ষের ফলে এই ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়, তাই প্রতিটি ঘূর্ণবাতে দুটি সীমান্তের সৃষ্টি হয়। উদ্বু বায়ুর স্পর্শতল বা সীমান্তকে উদ্বু সীমান্ত (warm front) এবং শীতল বায়ুর স্পর্শতল বা সীমান্তকে শীতল সীমান্ত (cold front) বলে। শীতল সীমান্ত বরাবর ভারী শীতল বায়ু উদ্বু বায়ুকে ওপরে উঠতে বাধ্য করে।

3. এই প্রকার ঘূর্ণবাতে নিম্বো-স্ট্যাটাস (nimbo-stratus) ও অল্টো-স্ট্যাস্টাস (alto-stratus) মেঘের সৃষ্টি হয়। ফলে কয়েকদিন একটানা হালকা বৃষ্টিপাত হয়। গতিবেগ গ্রীষ্মকালের তুলনায় শীতকালে বেশি থাকে, ফলে শীতকালে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।

5. এই ঘূর্ণবাত পশ্চিমা বায়ুর পথ ধরে পশ্চিম থেকে পূর্বে অগ্রসর হয়।

6. সাধারণত ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে বায়ুর চাপ 1000 মিলিবারের কাছাকাছি থাকে এবং প্রান্তভাগের সঙ্গে চাপের পার্থক্য 10-20 মিলিবারের মধ্যে থাকে। তবে কখনও কখনও শীতকালীন গভীর ঘূর্ণবাতের ক্ষেত্রে এই পার্থক্য 30-35 মিলিবার পর্যন্ত হয়।

7. এই ঘূর্ণবাতের আয়তন খুব বিশাল হয়। ব্যাস গড়ে 300 কিমি থেকে 1500 কিমি মধ্যে থাকে। কখনও কখনও দুর্বল ঘূর্ণবাতের ক্ষেত্রে ব্যাস 3000 কিমি পর্যন্ত হয়। উল্লম্ব উচ্চতা থাকে মোটামুটি 10 কিমি পর্যন্ত।

৪. নীতিশীতোয় ঘূর্ণবাত সাধারণত স্থলভাগের উপর সৃষ্টি হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমুদ্রের উপরেও সৃষ্টি হতে পারে।

9. নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় 100 কিমির কম হয়।

10. নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাত সাধারণত শীতকালে উৎপত্তি লাভ করে।

11. নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাত পশ্চিমা বায়ুপ্রবাহের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং খুব দ্রুত দিক পরিবর্তন করে।

12. নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতে সমচাপরেখা আকৃতির ও অসমানুবর্তী হয়। এই ঘূর্ণবাতের কোনো চক্ষু থাকে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01