সাম্প্রতিক বঙ্গোপসাগরের কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়(Some Recent Cylone of Bay of Bengal)
আয়লা (Aila)
গত 25 মে 2009-এ পশ্চিমবঙ্গের নিম্নবঙ্গে বয়ে গেছে এক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় নাম আয়লা (Aila)। প্রায় সম্পূর্ণ সুন্দরবন, হুগলি, কলকাতা ছুঁয়ে আয়লা দখল করেছিল প্রায় সমগ্র দক্ষিণবঙ্গ। সুন্দরবনের প্রায় সব নদী বাঁধগুলি যেমন কমবেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তেমনি মারা গেছে অসংখ্য গবাদিপশু সহ শতাধিক মানুষ। সেই সলো গৃহহারা হয়েছিল প্রায় অর্ধকোটি পশ্চিমবঙ্গাবাসী। ঝড়ের বেগ বেশি ছিল না, মাত্র 100-120 কিমি প্রতি ঘণ্টায়। কিন্তু সঙ্গে ছিল তুমুল বৃষ্টি আর ডাঙায় ভেসে আসা নদীর জল। নদীর বানের মতো জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে দিয়েছিল সুন্দরবন। আয়লার পর আমরা বুঝতে পেরেছি নদী বাঁধ দিয়ে জলোচ্ছ্বাস ঠেকানো সম্ভব নয়।
আম্মান (Amphan)
আম্ফান একটি সুপার সাইক্লোন যা ভারত মহাসাগরে গত 2020 সালের 16 মে উৎপত্তি লাভ করে। এটি পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়েছিল রুমে। সর্বোচ্চ গতি ছিল 280 কিমি/ঘণ্টা। সর্বনিম্নচাপ ছিল 920 মিলিবার। ভারতের ওড়িশা, পঃবলা সহ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় এর প্রভাব পড়েছিল। আম্ফানে 1300 কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছিল। সেইসঙ্গে 128 জন মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ভারতীয় 9৪ জন। আক্ষান উপকূলে আছড়ে পড়ার কেন্দ্রস্থল ছিল পশ্চিমবঙ্গের উপকূল। দক্ষিণ 24 পরগণা, কলকাতা, হুগলি, হাওড়া ও পূর্ব মেদিনীপুর প্রভৃতি এই ঝড়ের কবলে সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রকট জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের অধিকাংশ নদীবাঁধ ভেঙে যায়। সমগ্র পঃবঙ্গ জুড়ে প্রায় 700,000 একর কৃষি এলাকার ফলস নষ্ট হয়। সেই সঙ্গে অসংখ্য গাছ। কেবল কলকাতায় 5000 গাছ নষ্ট হয়।
ইয়াস (Yass)
2021 সালের 26 মে ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়েছিল অতি তীর ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। পূর্ব বঙ্গোপসাগরে 22 মে গঠিত হয়েছিল নিম্নচাপ, যা ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি করে এগোতে থাকে পূর্ব উপকূলের দিকে। আছড়ে পড়ার কেন্দ্রস্থল ছিল ওড়িশা উপকূল। সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল 130 কিমি প্রতি ঘণ্টায়। প্রভাব পড়েছিল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, পশ্চিমবঙ্গে, ওড়িশা ও বাংলাদেশে, সময়মতো লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি বিশেষ হয়নি। এ সময় ভরা কোটাল ছিল, তাই পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই 24 পরগণার উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়েছিল। ওড়িশার 2 জন মানুষ মারা যায়। আহতের সংখ্যা 100
ফণী (Phani)
26 এপ্রিল 2019 সালে উত্তর ভারত মহাসাগরে গঠিত হয় ফণী। এটি ছিল অত্যন্ত তীব্র এক ঘূর্ণিঝড়। ভারতের ওড়িশা রাজ্যে আঘাত এনেছিল 2 মে। তখন সর্বোচ্চ গতি ছিল 215 কিমি প্রতি ঘণ্টায়। সর্বনিম্ন চাপ ছিল 932 মিলিবার। ওড়িশা ছাড়া প্রভাব পড়েছিল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ও বাংলাদেশে। প্রায় 81 × 10° মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছিল। হতাহতের সংখ্যা প্রায় 100।