লবণাক্ত মাটি (Saline Soil)
শুদ্ধ বা অর্ধ শুষ্ক অঞ্চলে অর্থাৎ যেসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুব কম এবং তাপমাত্রার পরিমাণ খুব বেশি হয়, সেইসব অঞ্চলের মাটিতে Ca, Mg, K ঘটিত লবণের প্রাধান্য দেখা যায়। যেসব মাটিতে Na, Ca, Mg ঘটিত ক্লোরাইড, সালফেট, ও নাইট্রেট জাতীয় লবণের পরিমাণ বেশি থাকে, তাকে লবণাক্ত মাটি বলে। এই মাটিতে বিনিময়যোগ্য সোডিয়ামের পরিমাণ 15 শতাংশের চেয়েও কম। এই মাটির pH-এর মান 7.0-8.5-এর মধ্যে থাকে।
লবণাক্ত মাটি সৃষ্টির কারণগুলি নিম্নরূপ:
1. ভূপৃষ্ঠে লবণের উৎস হল শিলা মধ্যস্থিত খনিজ পদার্থ, খনিজ পদার্থগুলি বিচূর্ণীভবনের ফলে লবণ বিচ্ছিন্ন হয় এবং জলের সংস্পর্শে লবণ মিশ্রিত দ্রবণের সৃষ্টি হয়। শুষ্ক অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা ও তাপমাত্রা বেশি হবার জন্য মাটির জল শুকিয়ে যায় এবং দ্রবীভূত লবণ মাটির ওপরের স্তরে সর্বদা স্তর রূপে সঞ্চিত হয়।
2. জমিতে জলনিকাশি ব্যবস্থা ভালো না থাকলেও দ্রবণীয় লবণ ধৌত প্রক্রিয়ায় নষ্ট হয়ে যায় না এবং বাষ্পীভবনের ফলে মাটির ওপরের স্তরে এসে জমা হয় এবং লবণাক্ত মাটির সৃষ্টি হয়।
3. অতিরিক্ত ভৌমজল তুলে জলসেচ করলে মাটির ভৌম জলস্তরের সঙ্গে মিশ্রিত লবণ জমিতে উঠে আসে। জমির জল বাষ্পীভূত হলে মাটির ওপরের স্তরে লবণ জমে মাটিকে লবণাক্ত করে তোলে।
4. সমুদ্রের জল উপকূলের জমিতে ঢুকে মাটিকে লবণাক্ত করে তোলে। বিশেষত ভরা জোয়ারের সময় বা ঝড়ের সময় অথবা সুনামির কারণে উপকূলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের জমি লবণাক্ত হয়ে যায়।
5. বায়ুবাহিত সোডিয়াম কণা ও লবণ কণা মরু অঞ্চলের মাটিতে জমা হয়ে মাটির লবণতা বাড়িয়ে তোলে।