ভারতের প্রাকৃতিক বিপর্যয়(Natural Disaster in India)
ভারতে প্রতিবছর নানা ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটে। ভারতের অবস্থানগত কারণে ভারত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। এক সমীক্ষা অনুযায়ী 2010 সালে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের নিরিখেই চিনের পরে ভারতের স্থান ছিল দ্বিতীয়। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (IFRC) দ্বারা 2010 সালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী 2000-2009 সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে যত প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটেছে তার ৪5 শতাংশই ঘটেছে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম দেশ হল চিন ও ভারত। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরায় এই দুটি দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী 1996-2000 সালের মধ্যে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয়ের ফলে প্রতিবছর ভারতের ক্ষতি হয়েছে GDP-এর 2.25 শতাংশ।
বৈশিষ্ট্য (Characteristics)
1. ভারতের মোট ভৌগোলিক অঞ্চলের 69 শতাংশ অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ। হিমালয় ও তার সংলগ্ন এলাকা, উত্তর-পূর্ব ভারত, গুজরাত ও আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ।
2. ভারতের প্রায় 68 শতাংশ অঞ্চল বিভিন্ন মাত্রায় খরাপ্রবণ। এর মধ্যে 30 শতাংশ এলাকা বছরে গড়ে 75 সেমি কম বৃষ্টিপাত হয়। খরাপ্রবণ এলাকাগুলি দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতের শুষ্ক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ।
3. মোট ভৌগোলিক অঞ্চলের 12 শতাংশ বন্যা ও নদীভাঙন সমস্যার অন্তর্গত। প্রতিবছর গড়ে 7.5 মিলিয়ন হেক্টর অঞ্চল বন্যার কবলে পড়ে। অসম, বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্রতিবছর প্লাবিত হয়।
4. ভারতের দীর্ঘ ১ হাজার 716 কিমি উপকূলবর্তী অঞ্চলের মধ্যে 5 হাজার 700 কিমি ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও সুনামি কবলিত এলাকা। ওড়িশা, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ এবং পুদুচেরী পর্যায়ক্রমে ঘূর্ণিঝড় দ্বারা আক্রান্ত হয়।
5. হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল ভারত তথা পৃথিবীর অন্যতম ভূমিধসপ্রবণ অঞ্চল। এখানে প্রতিবছর বর্ষা পরবর্তী সময়ে এক বা একাধিক ধসের ঘটনা ঘটে।
6. ভারতের 1963-2012 সালের এই ১০ বছরে ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলির মধ্যে 53 শতাংশ ছিল বন্যাজনিত, 23 শতাংশ ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত, 22 শতাংশ ছিল ভূমিকম্প ছিল ভূমিকম্প ও ধস এবং খরা ছিল ও শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য দায়ী ভূমিকম্প, তারপর ক্রমানুসারে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধস ও খরা।