বিপর্যয় পরিমাপ(Measures of Diasster)
যে-কোনো পির্যয় মোকাবিলা করতে হলে তার সঠিক পরিমাপ থাকা দরকার, কিন্তু বিপর্যয় পরিমাপের সর্বগ্রাহ্য কোনো পরিমাপ এখনও পর্যন্ত জনপ্রিয় হয়নি। তা ছাড়া একই মাপকাঠিতে বিভিন্ন বিপর্যয় মাপ করা প্রায় অসম্ভব। তবে বিপর্যয়ের ঝুঁকি (risk) এবং বিপন্নতা (vulnerability) অনেকক্ষেত্রে যাচাই করার সুযোগ রয়েছে। এগুলি পরিমাপ করতে পারলে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য একাদিক্রমে প্রশাসনিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
ঝুঁকি (Risk): যে কোনো বিপর্যয়ের সঙ্গে ঝুঁকি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে ঝুঁকি বলতে আশানুরূপ নয় এমন ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাকে বোঝানো হয়ে থাকে। এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বির্ধারণ করা ও তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা বিপর্যয় মোকাবিলার সঠিক রাস্তা। বিশেষ করে কোনো প্রকৃতি সৃষ্ট বা মনুষ্যকৃত ঘটনা বিপর্যয়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। নীচের দুটি সমীকরণের সাহায্যে ঝুঁকির ব্যাখ্যা করা যায়।
প্রথম সমীকরণ: R = H + V
যেখানে, R = Risk (ঝুঁকি), H = Hazard (দুর্যোগ), V = Vulnerability (বিপন্নতা)।
দ্বিতীয় সমীকরণ: R= HV * C
যেখানে, R = Risk H = Hazard (দুর্যোগ), v = Vulnerability (বিপন্নতা), c = Capacity (ক্ষমতা)।
এখানে Capacity বলতে কোনো গোষ্ঠী বা দল বিপর্যয়ের ক্ষয়ক্ষতির বা প্রভাষকে লাঘব করার জন্য কতটা তৈরি থাকে তা বোঝায়।
বিপন্নতা (Vulnerability): বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে বিপন্নতা এক উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ শব্দ। বিপন্নতা বা vulnerability হল বিপর্যয়কে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা। বিপন্নতা বলতে ব্যাপক অর্থে প্রাকৃতিক বিপদকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা। প্রত্যেক বছরে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিপন্নতা নির্ভর করে বিপর্যয়ের প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপরে। বিপন্নতা বেশি হবে যদি বিপন্ন মানুষের সংখ্যা বেশি হয়। বিপন্ন মানুষের প্রযুক্তির অভাব, সামাজিক সচেতনতার অভাব ইত্যাদি থাকে। ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে দুর্বল ভূতাত্ত্বিক গঠনের ওপর যদি অবৈজ্ঞানিকভাবে বাড়ি তৈরি ও অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভূমি ব্যবহার করা হয়, তাহলে বিপন্নতার মাত্রা বাড়ে।
নীচে বিভিন্ন প্রকার বিপর্যয় এবং বিপর্যয় সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলি সারণিতে দেওয়া হল।