বিভিন্ন ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত(Different Tropical Cyclones)
অবস্থান (Location)
ক্রান্তীয় অঞ্চলে অর্থাৎ নিরক্ষরেখার উভয় দিকে 20- অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলে নানারকম নিম্নচাপজনিত গোলযোগের (disturbances) সৃষ্টি হয়। এদের উৎপত্তি গঠন ও প্রকৃতি ভিন্নতর। এদের মধ্যে প্রধান গোলযোগগুলি হল ক্রান্তীয় পুবালি তরক্ষা (tropical easterly waves), ক্রান্তীয় নিম্নচাপ (tropical depression), ক্রান্তীয় ঝড় (tropical storm) এবং ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় বা ঘূর্ণিবাত (tropical cyclone)। এই সকল প্রকার বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর ও পরিচিত গোলযোগ হল ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত (tropical cyclone)। ক্রান্তীয় অঞ্চলের জলভাগের ওপর হঠাৎ নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হলে চারপাশের বায়ু প্রবল বেগে কুণ্ডলাকারে (spirally) ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ছুটে এসে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের জন্ম দেয়। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল যে, উন্ন বায়ুপুঞ্জ ওপরে উঠে শীতল ও ভারী হয়ে আবার কুণ্ডলাকারে ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রস্থলে নেমে আসে। ফলে কেন্দ্রে নিম্নমুখী ও বাইরে ঊর্ধ্বমুখী বায়ুস্রোত দেখতে পাওয়া যায়। সমুদ্রের উত্তাপের ওপর এই বায়ুর গতিপ্রবাহ নির্ভর করে। সমুদ্র অধিক উত্তপ্ত হলে এই গতিপ্রবাহও অধিক হয়। আবহবিদরা মনে করেন, সমুদ্রের উত্তাপ 27°C-এর কম হলে এই ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয় না। ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতে বায়ুর গতিবেগ ঘণ্টায় 50 থেকে 200 কিমি পর্যন্ত হতে পারে। গতিবেগের ওপর এদের নামকরণও আলাদা। গতিবেগ ঘণ্টায় 60 কিমির কম হলে ক্রান্তীয় নিম্নচাপ (tropical depression), 60-90 কিমি হলে ক্রান্তীয় ঝড় (tropical storm), গতিবেগ ঘণ্টায় 90-100 কিমির মধ্যে থাকলে তাকে ঘূর্ণবাত বা সাইক্লোন (cyclone) বলে। বায়ুর ঘন্টায় গতিবেগ 100-120 কিমির মধ্যে থাকলে তাকে প্রবল ঘূর্ণবাত বা সুপার সাইক্লোন (super cyclone) বলে। 120-200 কিমির মধ্যে গতিবেগ থাকলে তাকে অতি প্রবল ঘূর্ণবাত বা সুপার সুপার সাইক্লোন (super super cyclone) বলে।
ভূপৃষ্ঠের কয়েকটি বিশিষ্ট অঞ্চলে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি হয়। উৎপত্তি অনুসারে এদের নামও আলাদা। নীচের সারণিতে এদের অবস্থান দেখানো হল