বায়োটোপের ধারণা(Concept of Biotope)
পরিবেশের অন্তর্গত সমস্ত বিষয়ের মধ্যে বায়োটোপ এক অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর্নেস্ট হেকেল (1834-1919) প্রথম তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ General Morphology C Biotope সম্পর্কে ধারণা জ্ঞাপন করেন। জার্মান শব্দ Biotope দুটি গ্রিক শব্দ 'Bios' ও 'Topos' নিয়ে গঠিত যার অর্থ হল-জীবের বাসস্থান। 1980 সালে Berlin Zoological Museum-প্রফেসর এফ. ডাল (Prof. F. Dahl) 'বায়োটোপ'-এর বৈজ্ঞানিক ধারণা প্রদান করেন। তাঁর প্রদত্ত ধারণানুসারে বায়োটোপ হল এমন একটি অঞ্চল যা সমধর্মী পরিবেশগত অবস্থা নির্দেশ করে যেখানে সুনির্দিষ্ট প্রজাতির উদ্ভিদ বা প্রাণী আন্তঃক্রিয়ায় উদ্বুদ্ধ হতে পারে ও প্রাকৃতিক নির্বাচনে অংশ নেয়।
বায়োটোপের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল-
(i) পরিবেশের অন্তর্গত ক্ষুদ্র পরিধির সমধর্মী সুসম্পন্ন অঞ্চল যা জীবকূলের কাছে অত্যাবশ্যকীয়। যেমন- ছোটো কৃষিক্ষেত্র, বাগান, জলাশয় প্রভৃতি যাদের পরিধি ক্ষুদ্র বা যা microscale phenomana-র অন্তর্গত।
(ii) এদের পরিধি ক্ষুদ্র হলেও তুচ্ছ নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এগুলির ভূমিকা অপরিহার্য। যেমন- পার্ক, ময়দান।
(iii) জীববৈচিত্র্য সৃষ্টিতে ও পরিবেশনায় বাস্তুতান্ত্রিক সুষ্ঠু অবস্থা বজায় রাখতে এগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। যেমন-ক্লাব।
(iv) বায়োটোপগুলির উপাদান পরিবেশের অন্যান্য উপাদানগুলির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত থাকে এবং একে অপরের সঙ্গে আন্তঃক্রিয়ার দ্বারা আদর্শ পরিবেশতন্ত্র গঠন করে তাই একে Biotope Network বা জালিকা বলে।
(v) Biotope ব্যক্তিগত পরিবেশের সত্ত্ব হয়েও থাকে। একে সংরক্ষণ করতে কার্যসূচি গঠন ও ব্যক্তিগত বা যৌথ প্রয়াস প্রয়োজন হয়ে পড়ে। যেমন-বৃক্ষরোপণ ও সামাজিক বনসৃজন দ্বারা পর্যালোচনা সংরক্ষণ।