শিক্ষার সঙ্গে শিখনের সম্পর্ক কী? শিখনের স্বরূপ বা প্রকৃতি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করো। 2+6
উত্তর:
শিক্ষার সঙ্গে শিখনের সম্পর্ক
শিক্ষার ক্ষেত্রে শিখনের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিখন ছাড়া শিক্ষার আলোচনা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। শিখন সারাজীবন ধরে চলে। শিশু শিখন প্রক্রিয়ার মধ্য এদ্ধ এ দিয়ে পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজন করতে শেখে। শিখন হল একটি সংগতিবিধান প্রক্রিয়া, যা বাতিকে অভিজ্ঞতা সন্বয় করতে শেখায়। শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য শিশুকে সুনাগরিক করে তোলা। আর এই উদ্দেশ্য পূরণের অন্যতম হাতিয়ার হল শিখন।
শিখদের স্বরূপ
শিখন বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে হলে তার স্বরূপ বা প্রকৃতি জানা প্রয়োজন। নীতে শিখনের স্বরূপ সম্পকে আলোনো করা হল-
[1] আচরণের পরিবর্তন: আচরণের পরিবর্তন হল শিখনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শিখন ঘটলেই আচরণে কিছু না কিছু পরিবর্তন ঘটবে। মনে রাখতে হবে, এই পরিবর্তন সর্বদা ইতিবাচক তা নয়, নেতিবাচক পরিবর্তনও হতে পারে।
[2] নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন: শিখনের ফলে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়।শিখন হল নতুন অডিক্ততার মধ্য দিয়ে পুরোনো আচরণ ত্যাগ করে পরিবর্তিত আচরণধারা শেখার প্রক্রিয়া।
[3] নতুনত্ব: শিখনের ফলে যে আচরণের পরিবর্তন ঘটে তা বিশ্লেষণ য় করলে কিছু না কিছু নতুনত্ব দেখা যাবেই। যে শিশু পূর্বে জ্বলন্ত মোমবাতিতে হাত দিয়েছিল, অভিজ্ঞতা অর্জন বা শিখনের পরে সে আর তাতে হাত দেবে না। অর্থাৎ, তার আচরণে নতুনত্ব দেখা দেবে।
[4] বিশেষ গতিপথ বা প্রেষণা: শিখনের ফলে আচরণের যে পরিবর্তন ঘটে তার একটি বিশেষ গতিপথ থাকে। শিখনের পূর্বে কোনো প্রাণীর মধ্যে ঠি যে প্রেষণার সৃষ্টি হয়, সেই প্রেষণা প্রাণীকে নির্দিষ্ট পথে নিয়ে গিয়ে তার মধ্যে এই পরিতৃপ্তি এনে দেয়।
[5] উদ্দেশ্যমুদ্রিতা: শিখন উদ্দেশমুখী এবং লক্ষাকেন্দ্রিক। কোনো উদ্দেশ্য না থাকলে তাকে শিখন বলা যায় না।
[6] অনুশীলনের প্রভাব: শিখনের ওপর অনুশীলনের ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায়। শিখনের ওপর অনুশীলনের প্রভাব বিষয়ে বন্ধু পরীক্ষা হয়েছে। এর পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রথম দিকের অনুশীলনে শিখনের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে। কিন্তু তারপর বৃদ্ধির হার হ্রাস পায় এবং এমন এক সময় আসে যখন এশ শিখনের ওপর অনুশীলনের প্রভাব দেখা যায় না। একে শিখনে অধিতাকা এক বলে। তবে প্রেষণা বৃদ্ধির ফলে বা শিখনপদ্ধতি পরিবর্তনের দ্বারা অধিত্যকাকে অতিক্রম করা যায়।
[7] সমস্যাসমাধানের তাগিদ: শিখনের ক্ষেত্রে আর-একটি পুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সমস্যা। সমস্যা না থাকলে প্রাণী কোনো কিছুই শিখতে চায় না। বা সমস্যাসমাধানের তাগিদেই সে তার বর্তমান আচরণের পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন আচরণ আয়ত্ত করার দিকে অগ্রসর হয়।
[৪] পরিগমণের গুরুত্ব: শিখন অনেক ক্ষেত্রেই পরিশমনের ওপর নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, শিশুর জিডের জড়তা দূর না হলে তাকে ডাষা শিক্ষা দেওয়া যায় না। অর্থাৎ, পরিণমন ছাড়া শিখন ফলপ্রসূ হয় না।
[9] শিখন একটি প্রক্রিয়া: শিখন একটি প্রক্রিয়া যার পরিচয় ফলের মাধ্যমে পাওয়া যায়।
[10] সর্বজনীন এরস নিরবচ্ছিন্ন প্রকৃতি: শিখন সর্বজনীন এবং নিরবচ্ছিন্ন। প্রতিটি সজীব প্রাণীই শেখে। মানুষের শিখনের ক্ষেত্রে বয়স, বিকল্প, জাতি বা সংস্কৃতির সীমাবন্ধতা নেই।
[11] সপ্তালনযোগ্য: গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে শিখন সস্থালনযোগ্য। একটি ভেয়ের শিখন অন্য ক্ষেত্রে সস্থালিত হয়।
[12] চর্তানির্ভর: শিখন তো বা অনুশীলনের ওপর নির্ভরশীল। হর্তা বা অনুশীলনের অভাবে শিখনের শক্তি হ্রাস পায়।