welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

নদীর প্রক্রিয়া ( River processes )

নদীর প্রক্রিয়া ( River processes )


নদীর ক্ষয়কার্য ও ক্ষয় কার্যের প্রক্রিয়া(River Erosion and Erosional Process):

উৎপত্তি থেকে মোহনা পর্যন্ত নদীর উপত্যকা অববাহিকা বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকের দ্বারা প্রকৃতি, জলের পরিমাণ জলের গতিবেগ, প্রাকৃতিক বাধা) নিয়ন্ত্রিত হয় এবং নদী ক্ষয়, বহন এবং সঞ্চয় সাধন করে। নীচে ক্ষয়কাজের প্রক্রিয়াগুলি আলোচনা করা হল-

1. জলপ্রবাহ ক্ষয় (Hydraulic Action): নদীর ক্ষয়কার্যের প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে এটি একটি উল্লেখযোগ্য প্রক্রিয়া। পার্বত্য অঞ্চলে জলস্রোতের প্রবল আঘাতে নদী খাত ও নদী পাড়ে অপেক্ষাকৃত কোমল শিলা খুলে বেরিয়ে আসে, একে জলপ্রবাহ ক্ষয় বলে। জলপ্রবাহের ক্রিয়ায় নদীখাতের শিলাস্তর যান্ত্রিক পদ্ধতিতে শিথিল ও উৎপাদিত হয় এবং ভেঙে যাওয়া অংশ উৎপাটিত হতে থাকে। এই ধরনের ক্ষয়ের ফলে ক্ষয়জাত পদার্থগুলি নদীর স্রোতের সঙ্গেঙ্গ বহুদূরে অপসারিত হয়।

2. অবঘর্ষ (Abration / Corration): নদীবাহিত নুড়ি, প্রস্তরখণ্ড প্রভৃতি নদীর তলদেশ ও পার্শ্বদেশে আঘাত করে উপত্যকাকে ক্ষয় করে গভীরতা বাড়ায়, একে অবঘর্ষ বলে। নদী খাতের সঙ্গেঙ্গ নদীবাহিত প্রস্তরখণ্ডের সংঘর্ষের ফলে নদীর ক্ষয়সাধন করে। নদীবাহিত প্রস্তর খণ্ডগুলি নদীর স্রোতের সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে চলতে থাকে। সেই সঙ্গে নদীখাতে ছোটো ছোটো গর্তের সৃষ্টি করে। এই ধরনের ছোটো ছোটো গর্ত বা মন্ত্রকূপের ফলে নদীখাত আরো দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

3. ঘর্ষণ ক্ষয় (Attrition): নদীবাহিত প্রস্তরখণ্ড একটি অপরটির সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে ভেঙে ভেঙে আরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে এবং সবশেষে বালুকায় পরিণত হয়, একে ঘর্ষণ ক্ষয় বলে। নদীবাহিত বিভিন্ন আকারের প্রস্তরখণ্ড পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে অবশেষে নুড়ি, বালি ও পলি কণায় পরিণত হয়।


4. দ্রবণ ক্ষয় (Solution): যে শিলাস্তরের উপর দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়, নদীর জলের সাথে শিলার রাসায়নিক উপাদান মিশে যায়। ওই জল মিশ্রিত রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গে শিলা বা নদীখাতের বিক্রিয়ায় ক্ষয় লক্ষ করা যায়, তাকে দ্রবণ ক্ষয় বলে। এই প্রক্রিয়ায় ক্ষয়ের পরিমাণ নির্ভর করে প্রধানত জলের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য এবং শিলার দ্রাব্যতার ওপর। নদীর জলের সঙ্গে আসে কাদাময় প্রস্তরখণ্ড দ্রবীভূত হয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। আবার চুনাপাথর যুক্ত অঞ্চলে এই প্রক্রিয়ায় নদী ক্ষয়কার্য করে।

5. বুদবুদ ক্ষয় (Cavitation): নদীতে প্রবাহিত জলের গতিবেগ খুব বেশি হলে বেগজনিত প্রক্রিয়ায় নদীতে ক্ষয় লক্ষ করা যায়। নদীর জলস্রোতে সৃষ্ট বুদবুদগুলি ফেটে গিয়ে যে ধরনের ক্ষয় হয়, তা cavitation নামে পরিচিত। এই ধরনের বুদবুদ ফাটার জন্য যে shock wave সৃষ্টি হয়, তার প্রভাবে পার্শ্ববর্তী শিলা ক্রমশ দুর্বল হয়ে ভেঙে যায়। মূলত নদীখাত সংকোচনের ফলে নদীপ্রবাহের গতিবেগ বৃদ্ধি পেলে নদীর গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু মোট শক্তি অপরিবর্তিত থাকে বলে সমতা ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ হ্রাস পেয়ে জলের বাষ্প চাপে সমান হলে বুদবুদ উৎপত্তি লাভ করে। আক্ষ্ম বার পরবর্তী সময়ে যদি নদীখাত প্রসারিত হয়, তখন গতিবেগ হ্রাস পাওয়ার ফলে চাপ বেড়ে যায় এবং বুদবুদগুলি ফেটে যাওয়ার ফলে বাতাসের ধাক্কায় ওজন কয়েকশো পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে। ফলে তার ধাক্কায় শিলাস্তর ভেঙে যায় এবং স্থানচ্যুত হয়। জলপ্রপাত কিংবা খরস্রোতা নদীতে এই প্রক্রিয়ায় ক্ষয় হয়।

6. ঘূর্ণনজনিত ক্ষয় (Process of Vertex Action): নদী জলের ঘূর্ণনের সৃষ্টি হলে এই ঘূর্ণনের দ্বারা নদীর পাড় এবং খাতে ক্ষয় হয়। আবার নদীখাতে ঘূর্ণনের সৃষ্টি হলে নদীর তলদেশে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। এই ঘূর্ণন নদীখাতের নীচের শিলাগুলিকে আলগা করে উপরের দিকে তুলে দেয় এবং ভাটার টানে সেগুলি অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01