আপেক্ষিক উচ্চতা (Relative Relief)

ধারণা (concept)

কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের সবচেয়ে উঁচু ও সবচেয়ে নিচু স্থানের মধ্যে উচ্চতার পার্থক্যের মান হল প্রাপ্ত উচ্চতার মাত্রা। উচ্চতার মাত্রা নির্ণয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ-প্রকৃতি বিষয়ক পরিমাপ। এই পরিমাপের প্রবর্তক হলেন জি. এইচ. স্মিথ (G. H. Smith-1935) G. H. Smith উচ্চতার মাত্রা (Amplitude of relief) কে 'আপেক্ষিক উচ্চতা' (relative relief) বা 'স্থানীয় উচ্চতা' (local relief) নামে অভিহিত করেন। স্থানীয় ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র থেকে ভূমিরূপের আপেক্ষিক উচ্চতা অর্থাৎ একটি অংশের উচ্চতার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী অংশে উচ্চতার পরিমাপ এর দ্বারা ভূমিরূপের ঢাল বা উচ্চতার পরিমাণ নির্ণয় করা হয়।

ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সমোন্নতি রেখার মানের পার্থক্যই হল- প্রাপ্ত উচ্চতার মাত্রা (গ্রিডের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দুটি বিন্দুর উচ্চতার পার্থক্য নির্ণয় করা হয়)।

সমোন্নতি রেখাহীন গ্রিডের উচ্চতার মাত্রা বা আপেক্ষিক উচ্চতা বা স্থানীয় উচ্চতা কখনই শূন্য হয় না। তবে সমোন্নতি রেখার ব্যবধান-এর মানের থেকে কম হয়।

আপেক্ষিক উচ্চতার সংজ্ঞা(definition of relative relief)

কোনো স্থানের বা অঞ্চলের সর্বোচ্চ উচ্চতা ও সর্বনিম্ন উচ্চতার পার্থক্যকে আপেক্ষিক উচ্চতা বা স্থানীয় উচ্চতা বলে।

স্থানীয় উচ্চতা বা আপেক্ষিক উচ্চতা (সর্বাধিক উচ্চতা সর্বনিম্ন উচ্চতা) একক।

অপেক্ষিক উচ্চতার গুরুত্ব(importance of relative relief)

① আপেক্ষিক উচ্চতা বেশি হলে অঞ্চলটি খুব বন্ধুর হবে এবং উঁচু ভূমির অংশ হবে। এক্ষেত্রে সাধারণত ক্ষয় কাজ বেশি হবে।

② আপেক্ষিক উচ্চতা কম হলে অঞ্চলটির বন্ধুরতা কম হবে এবং সাধারণত নিচু ভূমির অংশ হবে। অনেকক্ষেত্রে প্রায় একই উচ্চতাযুক্ত উঁচু মালভূমি অঞ্চলের আপেক্ষিক উচ্চতা কম হতে পারে।

ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র হইতে আপেক্ষিক উচ্চতা নির্ণয় পদ্ধতি (method of determination of relative relief from topographical map)

আপেক্ষিক উচ্চতা নির্ণয়ের জন্য ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র থেকে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করা হলো। যথা-

ধাপ- মানচিত্রে এমন একটি অঞ্চল চিহ্নিত করো যেখানে আপেক্ষিক উচ্চতার পার্থক্য বেশি আছে.

ধাপ- ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের স্কেল 1:50,000 (1 cm to 500 m) হলে প্রথম পর্যায়ে মানচিত্রের নির্বাচিত (10 সেমি x 12 সেমি) অংশটিকে 2 সেমি x 2 সেমি ছোটো গ্রিডে (মোট 30 টি গ্রিড) অর্থাৎ এক বর্গ কিমি অনুযায়ী ভাগ করে গ্রিডগুলিকে স্তম্ভ ও সারি (column & row) অনুযায়ী সংখ্যা ও ইংরেজি অক্ষর এর সাহায্যে চিহ্নিত করা হল।

ধাপ- প্রতিটি গ্রিডের সর্বোচ্চ উচ্চতা ও সর্বনিম্ন উচ্চতা (spot height বা সমোন্নতি রেখার সাহায্যে) নির্ণয় করে গ্রিডের অবস্থান অনুযায়ী সারণির মধ্যে নথিভুক্ত করা হল.

ধাপ- প্রতিটি গ্রিডের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মানের পার্থক্য নির্ণয় করে আপেক্ষিক উচ্চতা নির্ধারণ করে গ্রিডের অবস্থান অনুযায়ী সারণির মধ্যে নথিভুক্ত করা হল। তবে আপেক্ষিক উচ্চতা অপেক্ষা স্থানীয় উচ্চতা (local height) শব্দটি ব্যবহার করা বেশি যুক্তিযুক্ত। অতএব, উক্ত পদ্ধতিতে Survey of India কর্তৃক প্রকাশিত 1:50,000 স্কেলের ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের (731/9) ওপর ( 10cm * 12cm ) চিহ্নিত এলাকার গ্রিডভিত্তিক আপেক্ষিক উচ্চতা নির্ণয় করা হলো।