welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

বায়ুমণ্ডলের উৎপত্তি ও বিবর্তন(Origin and Evolution of the Atmosphere)

বায়ুমণ্ডলের উৎপত্তি ও বিবর্তন(Origin and Evolution of the Atmosphere)



বর্তমান বায়ুমন্ডলের প্রকৃতি বিগত 500 মিলিয়ন বছর ধরে প্রায় একই রকম আছে। তার আগে বায়ুমণ্ডলের প্রকৃতি ছিল একেবারেই অন্যরকম। সৌরজগৎ প্রায় 500 কোটি বছর আগে শীতল ধূলিকণার এক আবর্তিত প্রকাণ্ড মণ্ডল থেকে সৃষ্টি হয়েছিল। আবর্তের কেন্দ্রে ঘনীভূত এক বিশাল ধূলিপুঞ্জ থেকে সূর্যের সৃষ্টি হয়েছিল। বাকি অংশ ছোটো ছোটো কক্ষপথে বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহের সৃষ্টি করে। পৃথিবী তাদের মধ্যে অন্যতম

অন্যান্য গ্রহের মতো পৃথিবীতেও ভৌম-আকর্ষণে ধূলিকণাগুলো প্রবল বেগে জড়ো হয়ে পারস্পরিক সংঘর্ষে কয়েক হাজার ডিগ্রি তাপে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে সংযোজিত হয়েছিল তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে উদ্ভূত বিপুল পরিমাণের তাপশক্তি। এরফলে পৃথিবীর মধ্যে এক পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয় এবং পৃথিবী বিভিন্ন স্তরে বিভাজিত হয়।

এই অবস্থায় ভারী পদার্থসমূহ (লোহা-নিকেল) নীচে ডুবে অন্তঃকেন্দ্রের (inner core) সৃষ্টি করে; তার ওপরে থাকে লৌহ-ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ ম্যান্টল (mantle) বা গুরুমণ্ডল এবং তার উপরে ভেসে ওঠে হালকা সিলিকা, অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম নিয়ে গঠিত সিলিকেট স্তর যা ভূত্বক নামে পরিচিত। আরও হালকা অর্থাৎ ভূত্বকের তলদেশ থেকে নির্গত গ্যাসসমূহ নিয়েই বায়ুমণ্ডলের উৎপত্তি। এই আদিম বায়ুমণ্ডলে ছিল এমন সব গ্যাস যা প্রধানত বহির্বিশ্বের অন্যান্য গ্রহে (যেমন বুধ, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ইত্যাদি) পাওয়া যায়। কার্বন ডাই-অক্সাইড (C*O_{2}) কার্বন মনোক্সাইড (CO), জল (H_{2}*O) ও নাইট্রোজেন (N_{2}) এর আধিক্য ছিল বেশি। এদের সঙ্গে ছিল মিথেন (C*H_{4}) অ্যামোনিয়া (N*H_{3}) হাইড্রোজেন সালফাইড (H_{2}*S) ইত্যাদি। অর্থাৎ তখনকার বায়ুমণ্ডল ছিল বিজারণধর্মী। 350 কোটি বছর পুরোনো বেরাইট (BaSO 4 ) খনিজের মধ্যে প্রাপ্ত গ্যাস-জলের বিশ্লেষণও সেই তথ্য প্রমাণ করে। কালক্রমে পৃথিবী ক্রমাগত শীতল হল, তখন জলীয় বাষ্প জল হয়ে সাগর মহাসাগরে সঞ্চিত হল। হাইড্রোজেন (H_{2}) হিলিয়াম (He) পৃথিবীর অভিকর্ষ বল ছেড়ে (H_{2}*O) মহাশূন্যে বিলীন হল। কার্বন ডাই-অক্সাইড (C*O_{2}) পলিতে সমাহিত হয়ে মূলত চুনাপাথরে পরিণত হল। ভূ-অভ্যন্তর থেকে অগ্ন্যুদ্গমের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন (N_{2}) জমতে থাকল।

অক্সিজেনের (O_{2}) বায়ুমণ্ডল মূলত তৈরি হয়েছিল সালোকসংশ্লেষধর্মী স্বভোজীদের (photo autotrophs) উদ্ভবের পর। ঐ সময়ে অবশ্য বায়ুমণ্ডলে বর্তমানের জীবন রক্ষাকারী ওজোন গ্যাস (O_{3}) ছিল না। তাই সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (ultra violet rays-UV) সরাসরি বায়ুমণ্ডলের জলকণাকে হাইড্রোজেনে (H_{2}) ও অক্সিজেনে (O_{2}) বিভাজিত করে। পরে আবার UV-এর প্রভাবে ০₂ ভেঙে গিয়ে ০, তৈরি করল। এই ০, সমৃদ্ধ স্তর (ozonosphere) সৃষ্টি হওয়ার পরই, প্রকৃতপক্ষে, জন্ম নিল প্রাণ বা জীবন। জীবন ধারণের প্রাথমিক জীবকোষ ইউকেরিয়োটিক সেল (eukaryotic cell) তৈরি হয়েছিল প্রায় 200 কোটি বছর আগে। তারপর বিবর্তনের ক্রমপর্যায়ে পৃথিবীতে এসেছে উন্নত প্রাণী ও উদ্ভিদ, সবশেষে মানুষ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01