বদ্বীপ(Delta)
নদীর সঞ্চয় কার্যের ফলে উল্লেখযোগ্য ভূমিরূপ হল ডেল্টা। নদীর নিম্নপ্রবাহে অর্থাৎ সমভূমি প্রবাহের শেষপ্রান্তে মোহনার কাছে ভূমির ঢাল প্রায় সমুদ্র তলের সমান হওয়ায় অর্থাৎ মোহনার নিকট ভূমির ঢাল না থাকায় নদীর ক্ষয় ক্ষয়কার্যের ফলে ক্ষয়জাত পদার্থ সমুদ্রের লবণাক্ত জলের সংস্পর্শে এসে দ্রুত থিতিয়ে পড়ে, কিংবা নদীবাহিত বোঝা নদীখাতে জমা হয়। এই ধরনের পদার্থ জমা হয়ে যে বিশাল সমতল ভূমিভাগ গড়ে ওঠে তাকে বদ্বীপ বলে। অর্থাৎ সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত বিস্তীর্ণ সমতল ভূভাগকে বদ্বীপ বলে। সাধারণ যে স্থান থেকে মূলনদী হতে প্রশাখা নদীগুলি উৎপন্ন হয়, সেই স্থানটি বদ্বীপের শীর্ষবিন্দু নামে পরিচিত। যাইহোক বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ধরনের বিস্তীর্ণ সমতল ভূভাগের আকৃতি অনেকটা বাংলা মাত্রাহীন 'ব' অক্ষরের (গ্রিক অক্ষর 'এ' ডেল্টার ন্যায়) মতো, তাই এর এই ধরনের নামকরণ। নদীর মোহনা ছাড়াও হ্রদ কিংবা শাখানদী যেখানে প্রধান নদীর সাথে মিলিত হয়, সেখানে বদ্বীপ গড়ে ওঠে। বদ্বীপের ফলে মোহনার কাছে সমুদ্র ক্রমশ অগভীর হয়ে নতুন ভূমিরূপ গঠন করে। ভারত ও বাংলাদেশের গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর মিলিত বদ্বীপ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ। এর আয়তন প্রায় 75,000 বর্গ কিমি।
বদ্বীপ গঠনের অনুকূল অবস্থা (Favourable Condition for the Formation of Delta)
সব নদীর মোহনায় বদ্বীপ গঠিত হয় না। সাধারণত বদ্বীপ গঠনের জন্য কতকগুলো অনুকূল অবস্থার প্রয়োজন। নীচে বদ্বীপ সৃষ্টির অনুকূল অবস্থাগুলি আলোচনা করা হল-
1. কর্দমাক্ত জলপ্রবাহ: নদীতে বদ্বীপ গঠনের জন্য নদীর প্রবাহ কর্দমাক্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণ কর্দমাক্ত জলপ্রবাহে বিভিন্ন প্রকার পদার্থ ও পলি মিশ্রিত থাকে যা নদীর মোহনায় খুব সহজে বদ্বীপ গঠন করে। নদীর জলপ্রবাহে পলির পরিমাণ কম হলে বদ্বীপ গঠিত হয় না।
2. অধিক সংখ্যক উপনদীর উপস্থিতি। প্রধান নদীর অনেকগুলি উপনদী থাকলে নদীতে প্রচুর পরিমাণে পলি থাকবে। ফলে বদ্বীপ গঠন সহজতর হবে।
3. নদীর মোহনায় ধীরগতিসম্পন্ন জলপ্রবাহ নদীর মোহনায় নদীর জলপ্রবাহের গতি তীব্র হলে পলিস্তরের সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়। এই কারণে নদীর মোহনায় জলধারায় গতিবেগ কম হওয়ার প্রয়োজন। নদীর গতিবেগ কম হলে। নদীর বহনক্ষমতা হ্রাস পাবে এবং সেইসঙ্গো মোহনার কাছে অধিক পরিমাণে পলি সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপ গঠিত হবে। নদী মোহনায় নদীর গতিবেগ বেশি হওয়ায় ভারতের নর্মদা ও তাপ্তি, আফ্রিকার কলো ও দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদীর মোহনায় কোনো বদ্বীপ গঠিত হয়নি।
4. সমুদ্রস্রোতের প্রভাব মুক্ত নদী মোহনা বদ্বীপ সৃষ্টির জন্য নদী মোহনা সমুদ্রস্রোতের প্রভাবমুক্ত হওয়া খুব জরুরি। কারণ নদী যে সমস্ত পলি ও অন্যান্য পদার্থ বহন করে এনে মোহনায় সঞ্চয় করবে তা সমুদ্রস্রোতের প্রভাবে সমুদ্রবক্ষে পতিত হবে। ফলে মোহনায় পলি সঞ্চয়ে বাধা আসবে এবং বদ্বীপ গঠিত হবে ন।
5. জোয়ার-ভাটার প্রকোপ: বদ্বীপ সৃষ্টির জন্য নদীর মোহনায় জোয়ার ভাটার প্রকোপ কম হওয়া প্রয়োজন। যদি জোয়ার ভাটার প্রকোপ বেশি হয় তাহলে ভাটার টানে নদী বাহিত পলি সমুদ্রবক্ষে পতিত হবে। ফলে নদীর মোহনায় বদ্বীপ গঠনে বাধা দেখা যাবে।
6. অগভীর মোহনা: বদ্বীপ গঠনের জন্য মোহনা অগভীর হওয়া প্রয়োজন। মোহনার কাছে সমুদ্র গভীর হলে বদ্বীপ গঠিত হবে না। কারণ নদী দ্বারা সঞ্চিত পলি ধীরে ধীরে গভীর সমুদ্রে পতিত হয়ে বদ্বীপ সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাধা দেবে।
7. লবণাক্ত সমুদ্র জলের প্রভাব: বদ্বীপ গঠনে লবণাক্ত সমুদ্রজল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নদীর কর্দমাক্ত জল সমুদ্রের জলের সংস্পর্শে আসলে কর্দমকণাগুলো দ্রুত একত্রিত হয়ে নদীর মোহনায় সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপ সৃষ্টি করে।
৪. নদীর সুদীর্ঘ মধ্য ও নিম্নপ্রবাহ: নদীর মধ্য ও নিম্নপ্রবাহ সুদীর্ঘ হলে মোহনায় কাছে নদীর গতিবেগ হ্রাস পায় এবং বরীপ গঠন সহজতর হয়। এই কারণেই বঙ্গোপসাগরে গঙ্গা বদ্বীপ, মেক্সিকো উপসাগরে মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ গঠিত হয়েছে।
9. নদীর গতিপথে হ্রদের অনুপস্থিতি: বদ্বীপ গঠনের জন্য নদীর গতিপথে হ্রদের অনুপস্থিতি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ নদীর গতিপথে কোনো বড় হ্রদ থাকলে নদীবাহিত পলি ও অন্যান্য পদার্থ সেখানে সঞ্চিত হবে এবং নদীর মোহনায় খুব সামান্য পলি বাহিত হয়ে এসে সঞ্চিত হবে। ফলে নদী মোহনায় বদ্বীপ গঠিত হওয়ায় পথে বাধা দেখা দেবে।
10. সংশ্লিষ্ট স্থলবেষ্টি সমুদ্র স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত সমুদ্রে বদ্বীপ গঠনে কাজ ত্বরান্বিত হয়।
11. নদীর স্রোতের বিপরীতে বায়ুপ্রবাহ নদীর স্রোতের বিপরীতে বায়ু প্রবাহিত হলে নদী মোহনায় দ্রুত পলি সঞ্চয় ঘটবে। ফলে বদ্বীপ গঠন দ্রুত এবং সহজ হবে।
12. স্বল্প কৌণিকতাযুক্ত মহীসোপান: নদী বাহিত পলিস্তর মহীসোপান অঞ্চলে সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপ গঠন করে। মহীসোপনের ঢাল কম হলে পলিস্তর সহজেই সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপ গঠন করে। মহীসোপানের ঢাল বেশি হলে সঞ্চিত পলিস্তর ঢাল বেয়ে সমুদ্রে পতিত হবে। ভারতের পূর্ব উপকূলের মহীসোপানের ঢাল পশ্চিম উপকূলের মহীসোপানের তুলনায় কম হওয়ায় পূর্ব উপকূলে বদ্বীপ গঠিত হয়েছে। অপরদিকে ভারতের পশ্চিম উপকূলে কোনো বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি।
13. সমুদ্রতলের নিম্নগতি: সামুদ্রিক জলস্তরের উচ্চতা হ্রাস পেলে সঞ্চিত পলি স্তরগুলি উন্মুক্ত হয় এবং বদ্বীপ সৃষ্টিকে ত্বরান্বিত করে। একইভাবে ভূগাঠনিক কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমির উত্থান ঘটলেও বদ্বীপ সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
বদ্বীপের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Delta)
বদ্বীপের আকার, অবস্থান, উৎপত্তি, গঠনগত তারতম্য ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বদ্বীপকে কতকগুলি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। নীচে বিভিন্ন প্রকার বদ্বীপ সম্পর্কে আলোচনা করা হল-
আকৃতি অনুযায়ী বদ্বীপের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Delta According to Its Shape): আকৃতি অনুযায়ী বদ্বীপকে সাধারণত চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
ধনুকাকৃতি বদ্বীপ (Arcuate Delta): যে সব বদ্বীপের আকৃতি বাংলা মাত্রাহীন 'ব' অক্ষর বা গ্রিক বর্ণমালা A ডেল্টার) মতো হয়, তাকে ধনুকাকৃতি বদ্বীপ বলে। এই প্রকার বদ্বীপের সর্বাধিক বিস্তার থাকে সমুদ্রের দিকে এবং স্থলভাগের দিকে এর বিস্তার ক্রমশ হ্রাস পায়। নীল নদ, গঙ্গা, রাইন, নাইজার, হোয়াংহো নদীতে এই ধরনের বদ্বীপ দেখা যায়।
পাখির পায়ের ন্যায় বদ্বীপ (Bird Foot Delta): অনেক সময় কোনো কোনো নদীর বদ্বীপ পাখির পায়ের মতোআকৃতিবিশিষ্ট হয়। এই ধরনের বদ্বীপকে পাখির পায়ের ন্যায় বদ্বীপ বলে। সাধারণত সমুদ্র জলের তুলনায় নদীর জলের ঘনত্ব কম হলে নদী বাহিত অতি সূক্ষ্মকণা উপকূলের কাছাকাছি সমুদ্রের অধিক দূরত্ব পর্যন্ত নদীর জলের সঙ্গে বাহিত হয়ে ভাসমান অবস্থায় থাকে। এরপর সমুদ্রের লবণাক্ত জলের সংস্পর্শে ধীরে ধীরে এই ভাসমান পলি সংকীর্ণ রেখার আকারে সঞ্চিত হয়ে এই ধরনের বদ্বীপ গঠন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি নদীতে এই ধরনের বদ্বীপ দেখা যায়। (iii) কাসপেট বদ্বীপ (Cuspate Delta): যখন কোনো বদ্বীপের আকৃতি করাতের দাঁতের মতো হয়ে থাকে তখন তাকে কাসপেট বদ্বীপ বলে। স্পেনের এব্রো, ইতালির ভাইবার ইত্যাদি নদীতে এই ধরনের বদ্বীপ দেখা যায়।
খাঁড়ীয় বদ্বীপ (Estuarine Delta): নদীর পলি যখন কোনো খাঁড়ির মধ্যে সঞ্চিত হয়ে দীর্ঘ সংকীর্ণ বদ্বীপ গঠন করে তখন তাকে খাঁড়ীয় বদ্বীপ বলে। খাঁড়ি অংশে নদী সঞ্চয় করে এবং সমুদ্র তরঙ্গ সেই সঞ্চয়জাত পদার্থ অপসারণ করে। এক্ষেত্রে যেখানে নদীর সঞ্চয় সমুদ্র তরঙ্গের অপসারণের তুলনায় বেশি হয় সেখানে এই ধরনের বদ্বীপ গড়ে ওঠে। রাইন, এলব, ওব, হাডসন, ম্যাকেঞ্জি নদীর মোহনায় এই ধরনের বদ্বীপ গড়ে উঠেছে।
অবস্থান অনুসারে বদ্বীপের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Delte According to Location): অবস্থান অনুসারে বদ্বীপকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা-
(i) পললশঙ্কু বদ্বীপ (Alluvial Delta): নদীর নিম্নপ্রবাহে যেখানে প্রধান নদীর সঙ্গে শাখানদীগুলি পরস্পর মিলিত হয়, সেখানে প্রধান ও শাখানদী বাহিত পলি, কাঁকর, বালি ইত্যাদি জমা হয়ে যে ত্রিকোণাকার বদ্বীপ সৃষ্টি হয়। তাকে পললশঙ্কু বদ্বীপ বলে। দামোদর নদ যেখানে হুগলি নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। সেখানে এই প্রকার বদ্বীপ দেখা যায়।
(ii) হ্রদ বদ্বীপ (Lacustrine Delta): নদী বাহিত পলি, কাঁকর, বালি যখন কোনো শান্ত হ্রদে সঞ্চিত হয়, তখন সেখানে যে বদ্বীপ গড়ে ওঠে তাকে হ্রদ বদ্বীপ বলে। ভত্ত্বা নদী যেখানে ইউরোপের কাস্পিয়ান সাগরে পতিত হয়েছে সেইখানে এই ধরনের বদ্বীপ গড়ে উঠেছে।
(iii) সামুদ্রিক বদ্বীপ (Marine Delta): নদীর মোহনায় নদীর জলের তুলনায় সমুদ্রের জলের আপেক্ষিক ঘনত্ব বেশি হওয়ায় নদীর স্রোত সমুদ্র দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে নদীবাহিত পদার্থগুলি মোহনায় সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপের সৃষ্টি করে। এই ধরনের বদ্বীপকে সামুদ্রিক বদ্বীপ বলে। এই ধরনের বদ্বীপ সৃষ্টির জন্য স্থলবেষ্টিত শান্ত সমুদ্রের উপস্থিতি একান্ত আবশ্যক। ভারতের সুন্দরবন অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরে এই ধরনের বদ্বীপ দেখা যায়।
উৎপত্তি অনুসারে বদ্বীপের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Delta According to Nature of Forumation): উৎপত্তি অনুসারে বদ্বীপকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(i) গঠনমূলক বদ্বীপ (Constructive Delta): নদীবাহিত ক্ষয়জাত পদার্থ সমূহ সঞ্চিত হয়ে যে বিশালাকার বদ্বীপ গঠন করে তাকে গঠনমূলক বদ্বীপ বলে। এই বদ্বীপ আবার দুই প্রকার, যথা- (a) ফ্যান বদ্বীপ: নীল, রোন নদীতে এই বদ্বীপ দেখা যায়। (b) দীর্ঘাকার বদ্বীপ: মিসিসিপি নদীতে এই ধরনের বদ্বীপ দেখা যায়।
(ii) ধ্বংসাত্মক বদ্বীপ (Destructive Delta): অনেক সময় সমুদ্রতরঙ্গ ও জোয়ার ভাটাজনিত শক্তির কারণে বদ্বীপের অগ্রভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং নদীবাহিত পদার্থসমূহ অন্যস্থানে অপসারিত হওয়ায় বদ্বীপ গঠনের কাজ ব্যাহত হয়। এই বদ্বীপকে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-(১) সমুদ্রতরঙ্গ কর্তিত বদ্বীপ: এই প্রকার বদ্বীপ গঙ্গানদীর মোহনায় অবস্থিত ঘোড়ামারা, সাগরদ্বীপে দেখা যায়, (b) জোয়ার ভাটা প্রভাবিত বদ্বীপ: এই বদ্বীপ নাইজার, মেকর নদীতে দেখা যায়।
গঠন পর্যায় অনুসারে বদ্বীপের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Delta According to Different Stages of Delta Formation): গঠন পর্যায় অনুসারে বদ্বীপকে তিনভাগে ভাগ করা যায়, এগুলি হল-
(i) মৃতপ্রায় বদ্বীপ (Moribund Delta): যে সব বদ্বীপের গঠনকার্য বহুকাল আগেই শেষ হয়ে গেছে এবং যেখানে নতুন করে পলি সঞ্চয়ের ঘটনা ঘটে না। তাকে মৃতপ্রায় বদ্বীপ বলে। নদীগুলি স্থান পরিবর্তন করায় এই ধরনের বদ্বীপ সৃষ্টি হয়। এই জাতীয় বদ্বীপে প্রচুর অগভীর জলাভূমি থাকে এবং জলাভূমিতে জলজ উদ্ভিদের প্রাচুর্য দেখা যায়। গঙ্গার বদ্বীপের উত্তরাংশ হল মৃতপ্রায় বদ্বীপের উদাহরণ।
(ii) পরিণত বদ্বীপ (Mature Delta): যে সব বদ্বীপের গঠনকার্য বর্তমানে সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়নি বরং মাঝে মাঝে কোনো কোনো স্থানে নতুন পলি সঞ্চিত হয়ে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায় তাকে পরিণত বদ্বীপ বলে। গঙ্গানদীর বদ্বীপের মধবর্তী অংশে এই ধরনের বদ্বীপ দেখা যায়।
(iii) সক্রিয় বদ্বীপ (Active Delta): যে সমস্ত বদ্বীপে এখনও গঠনকার্য চলছে, নতুন পলি সঞ্চয়ের ফলে ভূমিরূপ সর্বদা পরিবর্তির্ত বচ্ছে, বদ্বীপের আয়তন প্রসারণ ঘটছে, তাকে সক্রিয় বদ্বীপ বলে। ভারতের সুন্দরবন অঞ্চলে সক্রিয় বদ্বীপ দেখা যায়। এখানে নতুন নতুন অসংখ্য বদ্বীপ সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও ক্রমাগত পলি সঞ্চয়ের ফলে এই বদ্বীপগুলি একসময় মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। বদ্বীপের মধ্যে অসংখ্য খাঁজ ও খাঁড়ি দেখা যায়। সেইসঙ্গে পলির চাপে বদ্বীপের অবনমন ঘটে