welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

মানচিত্র বিবর্তনের ইতিহাস (history of evolution of map)

মানচিত্র বিবর্তনের ইতিহাস (history of evolution of map)


পৃথিবীর মানচিত্রটি খ্রিস্টপূর্ব 2500 সময়কাল থেকে নানা বিবর্তনের মাধ্যমে উনবিংশ শতাব্দীর শেষে বর্তমান রূপটি পায়। তবে 1578 খ্রিস্টাব্দে জে. মার্কেটির-এর অবদান এক্ষেত্রে অনস্বীকার্য। 1783 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ মানচিত্র অঙ্কনবিদ মেজর জেসম রেনেল সর্বপ্রথম ভারতের মানচিত্র তৈরি করে।

মানচিত্র অঙ্কনের প্রাচীনযুগ: 2500 খ্রিস্ট পূর্বাব্দে‌ ব্যাবিলনের গাসুর নগরের ধ্বংসাবশেষ থেকে পাওয়া পোড়া মাটির ওপর আঁকা ম্যাপই পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ম্যাপ বলে ধরা হয়। পৃথিবীর প্রাচীনতম মানচিত্র 2500 খ্রিস্ট পূর্বাব্দে ব্যাবিলনে (ইরাকে) পাওয়া যায়। পৃথিবীর গুরুত্বপূ প্রাচীন মানচিত্র অঙ্কন করেন গ্রিক ভৌগোলিক ক্লডিয়াস টলেমি (Claudius Ptolemy)।

ব্যাবিলনীয়দের অবদান:ব্যাবিলন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করে দেখা গেছে, সে সময় পোড়া মাটির ফলক-এ মানচিত্র ব্যবহার হত। জানা যায় প্রায় 700 খ্রিস্ট পূর্বাব্দে ব্যাবিলনীয়রা শহর পরিকল্পনার নকশা তৈরি করেছিল।

গ্রিকদের অবদান:প্রাচীন গ্রিকরা প্রকৃতপক্ষে আধুনিক মানচিত্র-অঙ্কন পদ্ধতির ভিত্তি স্থাপন করেন। গ্রিক পন্ডিত অ্যানাক্সিম্যানডার (Aneximander) সর্বপ্রথম পৃথিবীর মানচিত্র অঙ্কন করেন। অ্যানাক্সিম্যানডার মনে করতেন, পৃথিবী থালার মতো চ্যাপ্টা ও গোলাকার। পরবর্তীকালে পারমেনিডেস, অ্যানবিস্টটল, স্ট্রাবো, টলেমি মানচিত্র অঙ্কনের কলাকৌশল নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন।

রোমানদের অবদান: রোমানরা মানচিত্রকে tobula বলতেন।তাঁরা চাকতির মধ্যে পৃথিবীর পরিসীমা অঙ্কন করে প্রাচীন বিশ্বের তিনটি মহাদেশের (এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা) অবস্থান দেখিয়েছিলেন। তাছাড়া প্রাচীন রোম নগরীর নকশা দেখে বোঝা যায় এঁরা মানচিত্র-অঙ্কন কলাকৌশলে পারদর্শী ছিল।

মানচিত্র অঙ্কনের মধ্যযুগ: মধ্যযুগের মানচিত্র অঙ্কন ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত ছিল না। তাই এই সময়ের মানচিত্রে কাল্পনিক স্থান, অবাস্তব জীবজন্তু ইত্যাদিকে দেখানো হত। এই যুগে আরবদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন আল ইদ্রিসি। ইটালীয়ানদের মধ্যে ম্যারিনো সানুডোর, ডাচদের মধ্যে মর্কেটর (gevoldus mercator), ফরাসিদের মধ্যে স্যানসোন (nicdas sanson), বৃটিশদের মধ্যে সেক্সটন (christopher sexton) এবং জার্মানদের মধ্যে জার্মানাস (nicolaus germanus) প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।

মানচিত্র অঙ্কনের আধুনিক যুগ: মানচিত্রের বিকাশ এবং বহুমুখী ব্যবহারে আধুনিক যুগ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। অভিক্ষেপের ব্যবহারে মানচিত্রের আকার বা আয়তনের পরিবর্তনের ধারণা এ যুগেই সূচিত হয়। মানচিত্র তৈরিতে গণিতের ব্যবহার শুরু হয়। সুইস গাণিতিক ল্যাম্ববার্ট (Johann lambert), ফরাসি জ্যোতির্বিদ ডেলিসলে (Joseph nicolas delisle) প্রমুখের নাম এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। এ সময় বিভিন্ন দেশের সম্পদ সংগ্রহে বৃহৎ স্কেল মানচিত্রের প্রচলন শুরু হয়।

বিংশ শতকের মানচিত্র: মানচিত্র বিদ্যার ব্যাপক বিবর্তন হয় বিশ শতকে। এর কারণ সম্ভবত দুটি বিশ্বযুদ্ধ-যেখানে সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর মধ্যে মানচিত্রের ব্যবহার অধিক মাত্রায় হয়েছিল। এযুগেই বিষয়ভিত্তিক মানচিত্র বা থিমোটিক মানচিত্রের ব্যবহার শুরু হয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং সম্পদের সংরক্ষণ দৃষ্টিভঙ্গির প্রসারের লক্ষ্যে পরিকল্পনাবিদরা বিভিন্ন রকম আধুনিক মানচিত্রের ব্যবহার শুরু করেন। তাছাড়া বিমান চিত্র (aerial photograph) এবং উপগ্রহ চিত্রের (satellite imagery) ব্যাপক প্রসারের ফলে মানচিত্র তৈরির কৌশল ক্রমশ সহজ থেকে সহজতর হয়েছে। বর্তমান সময়ের মানচিত্র তাই অনেক বেশি তথ্যসমৃদ্ধ এবং নিখুঁত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01