রিমোট সেন্সিং-এর পদ্ধতি (Stage of Remote Sensing):
একটি আদর্শ Remote Sensing ব্যবস্থা (An ideal Remote Sensing System) নিম্নলিখিত পর্যায়ের মাধ্যমে সম্পাদিত হয় |
(i) শক্তির উৎস (Source of Energy):
আলো ছাড়া কোন বস্তুকে দেখা যায় না। তাই রিমোট সেন্সিং এর প্রথম প্রয়োজনীয় উপাদান হল শক্তির উৎস, যা থেকে EMR নির্গত হয়ে বস্তুতে পতিত হয় এবং বস্তু কর্তৃক এই শক্তি প্রতিফলিত ও বিকিরিত হলে সেন্সর তা সংগ্রহ করে ঐ বস্তু সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে। যেমন শক্তির প্রাকৃতিক উৎস হল সূর্য, কৃত্রিম উৎস হল Radar, Flash light, Laser ইত্যাদি।
(ii) শক্তির উৎস থেকে নির্গত শক্তির সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া (Energy interaction with the atmo- sphere):
উৎস থেকে শক্তি নির্গত হয়ে ভূপৃষ্ঠ বা কোন বস্তুতে পতিত হওয়ার সময় শক্তির উৎস ও বস্তুর মধ্যবর্তী অংশে বিরাজমান বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে শক্তির ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সংঘটিত হয়। বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণা, জলকনা ইত্যাদি দ্বারা আলোর বিচ্ছুরণ (Scattering) বা শোষণ (Absorption) ঘটে। বিশেষ করে ক্ষুদ্রতরঙ্গগুলি অধিক বিচ্ছুরিত ও শোষিত হয়।
(Ⅲ) ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তুর সঙ্গে শক্তির ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া (Energy interaction with Earth surface features):
শক্তি যখন ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন বস্তুর ওপর পড়ে তখন বস্তুগুলি কর্তৃক EMR এর তিন ধরনের প্রতিক্রিয়া ঘটে। যথা-
1) শক্তির প্রতিফলন (Reflection)।
ii) শক্তির শোষণ (Absorption)
iii) শক্তির স্থানান্তর (Transmission)
কোন বস্তুতে পতিত EMR এর কিছু অংশ বস্তু কর্তৃক সরাসরি বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পুনরায় মহাশূন্যে ফিরে যায়। একে প্রতিফলন বলে। এছাড়া EMR এর কিছু অংশ বস্তু কর্তৃক শোষিত হয় এবং কিছু অংশ একমাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়। আবার বস্তুর শোষিত শক্তি আভ্যন্তরীন শক্তি হিসাবে পুনরায় বিকিরিত হয়। কোন বস্তু কর্তৃক প্রতিফলিত ও বিকিরিত EMR রিমোট সেন্সিং এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রিমোট সেন্সিং পদ্ধতিতে সেন্সর কর্তৃক এই প্রতিফলিত ও বিকিরিত EMR কে গ্রহণ করেই ওই বস্তু সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
iv) বস্তু কর্তৃক প্রতিফলিত ও বিকিরিত শক্তির সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের পূণঃ ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া (Energy interaction with atmosphere once again):
বস্তু কর্তৃক প্রতিফলিত ও বিকিরিত শক্তি যখন বায়ুমণ্ডলের মধ্যদিয়ে মহাকাশে স্থাপিত সেন্সরে গিয়ে পৌঁছায় তখন বায়ুগুলের ধূলিকনা, জলকনার সঙ্গে শক্তির পুনরায় ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া ঘটে। কিন্তু এরূপ ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডল যদি বাধাহীন (A noninterfering atmosphere) হয় তবে বস্তু কর্তৃক প্রতিফলিত ও বিকিরিত শক্তির কোন রূপে পরিবর্তন না ঘটে পুরোটায় সেন্সরে গিয়ে পৌঁছাবে। ফলে প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে। তখন সেটাই হবে আদর্শ Remote Sensing ব্যবস্থা।
v) সেন্সর কর্তৃক বস্তুর প্রতিফলিত ও বিকিরিত শক্তির গ্রহণ (Recording/Detection of energy by the sensor):
বস্তু কর্তৃক প্রতিফলিত ও বিকিরিত শক্তি সেন্সর কর্তৃক সংগৃহীত হয় এবং এই প্রতিফলিত ও বিকিরিত শক্তির মাত্রা (Reflectance Value and Radiance Value) অনুযায়ী তা Electrical output হিসাবে সঞ্চিত হয়।
vi) সেন্সর কর্তৃক গৃহীত শক্তির ভূমিস্টেশন (Ground station) এ স্থানান্তর (Transmission, Reception and Processing of sensor output):
সেন্সর কর্তৃক গৃহীত শক্তি যা Electrical Output এ পরিবর্তীত হয়, তা Ground Reception and Processing Station এ স্থানান্তরিত হয় এবং এই Electrical Output কে Digital number এ পরিবর্তীত করে একটি উপযোগী Photographic image প্রস্তুত করা হয়।
vii) Ground truth এবং Collateral তথ্য সংগ্রাহ (Collection of ground truth and collateral data):
Photographic image টিকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করার জন্য ঐ ফটোটি ভূপৃষ্ঠের যে স্থানের সেই স্থান থেকে কিছু Ground truth এবং সমগোত্রীয় কিছু তথ্য (Collateral data) সংগ্রহ করা হয়। যার সাহায্যে Photographic image টির ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করা হয়।
vill) Data বিশ্লেষণ এবং ব্যাখ্যা (Data Analysis & Interpretation):
প্রদত্ত Image টিকে প্রত্যক্ষভাবে (Visually) বা কম্পিউটারের সাহায্যে (Digitally) বিশ্লেষণ করে তা থেকে তথ্য (Information) সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্যকে বিভিন্ন মডেল আকারে বা Diagram বা Map আকারে ব্যাখ্যা বা উপস্থাপিত করা হয়।
(x) প্রয়োগ (Application):
Remote Sensing পদ্ধতির সাহায্যে ভূপৃষ্ঠের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা যায়। এই পদ্ধতির সাহায্যে প্রাকৃতিক সম্পদের উন্নয়ণ, যথাযথ ভূমির ব্যবহার, পরিবেশ সংরক্ষনের উপায় স্থির করা যায়।