ভারতে শিল্পায়নের গুরুত্ব ( Importance of Industrialization in India )
ভারত শিল্পায়নে উদ্যোগী দেশ। দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের লক্ষ্যে শিল্পায়ন অত্যন্ত জরুরি। কারণ -
(1) শিল্পায়ন বিদেশি নির্ভরতা কমায়। প্রসঙ্গত ভারতে এই উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (1956-1961 সাল) থেকে প্রত্যক্ষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। 2014 সালে Make in India প্রকল্পের কাজ শুরু হয় (Box দৃষ্টব্য)।
(2) শিল্পায়ন দেশের পেশাগত কাঠামো (Occupational structure)-তে অনুকূল পরিবর্তন আনে। কর্ম সংস্থানের সুযোগ বাড়ে। শ্রমিকের দক্ষতা ও উদ্ভাবন (Innovation) ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
(3) শিল্পায়নের মাধ্যমে কৃষি, শিল্প, ব্যাবসা ও পরিসেবা ক্ষেত্রের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ বাড়ে। একটি ক্ষেত্রের উন্নতি অন্য অর্থনৈতিক ক্ষেত্রটিকেও সমৃদ্ধ করে। একে “ট্রিক্স ডাউন প্রভাব” (Trickle Down Effect) বলে। যেমন পাঞ্জাবে সবুজ বিপ্লবের প্রভাবে যেমন গমের উৎপাদন বেড়েছে, তেমনি গম চাষে উন্নতি ঘটেছে বলেই পাঞ্জাবে কৃষির যন্ত্রপাতির বাজার বেড়েছে। এটি একটি চক্রাকার প্রভাব (Circular effect)।
(4) শিল্পায়নের মাধ্যমে “সোশ্যাল ওভারহেড ক্যাপিটাল" (Social Overhead Capital বা SOC) সমৃদ্ধ হয়। প্রসঙ্গত SOC বলতে সড়ক, রেলপথ, নৌপরিবহন, বন্দর, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভৃতি পরিকাঠামোকে বোঝায়। অর্থনীতিতে SOC কে Economic Overhead Facilities ( EOF)-ও বলা হয়। এই তথ্যের সমর্থনে উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে হুগলি শিল্পাঞ্চলে পাট শিল্পের অগ্রগতি কলকাতা ও শহরতলি এলাকায় পরিবহন, যোগাযোগ এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের উন্নতি ঘটায়, অর্থাৎ SOC উন্নত হয়। ঠিক যেভাবে বর্তমানে গুজরাটের আহমেদাবাদ, ভদোদরা, সুরাট, জামনগর ও তার আশপাশে ঘটেছে।
(5) কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতির অন্যতম শর্ত হল কৃষি জমির জোগান, যা সীমিত সম্পদ। শিল্পায়নের ক্ষেত্রে জমির চাহিদা থাকালেও তা কৃষিকাজের মতো ব্যাপক নয়।
(6) প্রতিরক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য শিল্পায়ন একান্ত জরুরি।
(7) আয় বৃদ্ধির জন্য এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য শিল্পায়নের প্রয়োজন আছে।
Make in India (MII) প্রকল্প 2014 সালে ভারতে MII প্রকল্প শুরু হয়
• উদ্দেশ্য : (i) সহজে ব্যবসা করা, (ii) নতুন শিল্পক্ষেত্র সৃষ্টি করা, (iii) নতুন পরিকাঠামো গড়ে তোলা, (iv) নতুন চিন্তাভাবনা (Innovation)-তে উৎসাহ দেওয়া।
• লক্ষ্য : শিল্প ক্ষেত্রের GDP-তে বর্তমান অবদান 15 শতাংশকে অন্তত 25 শতাংশ বৃদ্ধি করা
• MII শিল্প : (i) প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, (ii) গাড়ি উৎপাদন, (iii) বায়োটেকনোলজি ইত্যাদি অন্তত 25টি শিল্পক্ষেত্র।