welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

মাটি সৃষ্টির নিয়ন্ত্রক(Factors of Soil Formation)

মাটি সৃষ্টির নিয়ন্ত্রক(Factors of Soil Formation)


পৃথিবী পৃষ্ঠের সব অংশের মাটির চরিত্র সমান নয়। তাই কী ধরনের মাটি তৈরি হয় তা নির্ভর করে মাটি সৃষ্টিকারী কয়েকটি বিষয় বা নিয়ন্ত্রকের উপর। রাশিয়ান মাটি বিজ্ঞানী ভি. ভি. ডকুচায়েভ (V. V. Dochucheiv, 1889) স্তেপ অঞ্চলের মাটি সম্পর্কে গবেষণা করতে গিয়ে জলবায়ু, গাছপালা, প্রাণীকুল ও মূলশিলাকে মাটি সৃষ্টিকারী নিয়ন্ত্রক হিসাবে উল্লেখ করেন। প্রথম এবিষয়ে তাঁর সমীকরণটি ছিল S=f (CI, O, P); পরবর্তীকালে এই সমীকরণটিকে তিনি পরিবর্তন করেন এবং তা হয় S=f( Cl, O ,P.)t আমেরিকান মাটি বিজ্ঞানী এইচ. জেনি (H. Jenny, 1941, 1958) সালে ডকুচায়েভের উপাদানগুলির ভিত্তিতে মাটি সৃষ্টির ক্ষেত্রে পাঁচটি প্রধান বিষয়ের কথা একটি সমীকরণের মাধ্যমে উল্লেখ করেন, যথা S=f( Cl, O, P, R , T) এখানে S=Soil, f=function, Cl-Climate, O = 1 Organism, R=Relief, P = Parent materials, T = Time। অর্থাৎ জলবায়ু, ভূপ্রকৃতি, মূলশিলা, জীবজগৎ ও সময়ের যৌথ ক্রিয়ায় মাটি গড়ে ওঠে। এদের এই বিষয়গুলিকে তাদের প্রভাবে প্রকৃতি ও মাত্রার ভিত্তিতে দুটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা-

A. প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় উপাদান (Active Factors): (i) জলবায়ু; (ii) জীবজগৎ। এই দুটি উপাদান আদিশিলাকে রেগোলিথে এবং রেগোলিথকে মাটিতে পরিণত করে।

৪. পরোক্ষভাবে সক্রিয় উপাদান (Passive Factors): (i) ভূপ্রকৃতি: (ii) মূলশিলা, (iii) সময়।

মাটি সৃষ্টির উপাদানগুলির মধ্যে কিছু উপাদান বা নিয়ন্ত্রক প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে এবং কিছু উপাদান সক্রিয় বা প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য না করে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে, সেগুলি নীচে আলোচনা করা হল।

1. প্রত্যক্ষ উপাদান (Active Factors): কোনো অঞ্চলের মাটি সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ উপাদানগুলি সক্রিয়ভাবে সাহায্য করে।এবং প্রত্যক্ষ উপাদানগুলি হল জীবমণ্ডল এবং জলবায়ু (climate)। কোনো অঞ্চলে আদিশিলার ওপর জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদান যথা সূর্যালোক, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি আদিশিলাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে এবং সেই চূর্ণ-বিচূর্ণ পদার্থগুলি অবস্থান্তর প্রক্রিয়ার দ্বারা মাটি সৃষ্টির উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার ওই চূর্ণ-বিচূর্ণ পদার্থের ওপর উদ্ভিদ ও প্রাণীর অংশ বা অংশ বিশেষ জমা হয়ে বা বিয়োজিত হয়ে মাটি গঠন করে। আবার কোনো অঞ্চলে উদ্ভিদ ও প্রাণীর মাটির ওপর বিরাজমান অবস্থায় মাটির গঠন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

2. পরোক্ষ উপাদান (Passive Factors): কোনো অঞ্চলে মাটি সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ উপাদান ছাড়াও পরোক্ষ উপাদান বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। পরোক্ষ উপাদানগুলি হল আদিশিলা (parent rocks), ভূপ্রকৃতি (relief), সময় (time) এবং মানুষের কার্যাবলি (human activity)। কোনো অঞ্চলে মাটি সৃষ্টির জন্য দরকার সেখানকার আদিশিলা। সেই আদিশিলার ওপর অন্যান্য উপাদানগুলির কাজকর্মের ফলে মাটি গঠিত হয়। আবার ভূপ্রকৃতির তারতম্যের জন্য কোথাও মাটি গঠিত হতে পারে না। আবার কোথাও গভীর স্তরযুক্ত মাটি গঠিত হয়। অন্যান্য উপাদানের মতো সময় একটি উল্লেখযোগ্য পরোক্ষ উপাদান। সময়ের অভাবে কোনো অঞ্চলের মাটি অপরিণত হয়। আবার দীর্ঘসময় ধরে মাটি গঠিত হলে সেই মাটি পরিণত হয়। সবশেষে কোনো অঞ্চলের মাটির গঠনে মানুষের কার্যাবলি যথেস্ট গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন পরিবেশে মানুষের কার্যাবলি সেই অঞ্চলের মাটির গঠন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।

বিখ্যাত বুশ মাটি বিজ্ঞানী ভি. ভি. ডকুচায়েভ (V. V. Dochucheiv, 1998) মাটি গঠনে পাঁচটি উপাদানের নামকরণ করেন। সেই উপাদানগুলি হল আদিশিলা (parent rocks), জলবায়ু (climate), জীবাণু (organism), ভূপ্রকৃতি এবং সময় (time)। মার্কিন মাটি বিজ্ঞানী এইচ. এইচ. জেনি (H. H. Jenney, 1958) এই পাঁচটি উপাদানকে নীচে সমীকরণের মাধ্যমে প্রকাশ করেন, যথা,

S = f CI, O, r, p, t...)

যেমন, 

S=soil (মাটি)

f = Function (কার্যকারিতা)

Cl = Climate (জলবায়ু)

O = 1 Organism (জীবাণু জগৎ)

R = Relief (ভূপ্রকৃতি)

P = Parent Rocks (আদিশিলা)

T = Time (সময়)

নীচে মাটি গঠনের উপাদানগুলি আলোচনা করা হল-


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01