welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

যান্ত্রিক আবহবিকার(Mechanical Weathering)

যান্ত্রিক আবহবিকার(Mechanical Weathering)



ধারণা (Concept)

যে আবহবিকারে শিলাস্তরের কেবলমাত্র ভৌত অর্থাৎ বাহ্যিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে, কিন্তু শিলার অভ্যন্তরীণ অনূর গঠনের কোনো পরিবর্তন হয় না, তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতির শক্তি (উত্তাপ, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, নদী, তুষার, হিমবাহ প্রভৃতি) দ্বারা চাপের হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে ভূপৃষ্ঠের উপরের শিলা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ছোটো ছোটো শিলাখণ্ডে পরিণত হয়ে আদি শিলার উপর অবস্থান করে, তখন তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। আবার অন্য ভাবে বলা যায় যে, যান্ত্রিক পদ্ধিতিতে শিলার গাঠনিক (structural) এবং প্রথনগত (textural) পরিবর্তন হলে তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। এই প্রক্রিয়া উত্তমরু ও শীতল জলবায়ু অঞ্চলে বেশি পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে শিলার অভ্যন্তরে এবং বাইরে উদ্ভুত শন্তির মধ্যে যে পীড়নের সৃষ্টি হয়ে যে টানের উদ্ভব হয় তাতে শিলা ভেঙে যায়।

যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রক্রিয়া (Processes of Mechanical Weathering)

যান্ত্রিক আবহবিকার প্রক্রিয়ায় শিলাখণ্ড চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়, কিন্তু শিলার আকৃতি ও অবস্থার পরিবর্তন হয় না। বড়ো আকৃতির শিলাখণ্ড ফেটে গিয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিলাখণ্ডে পরিণত হয়। কিন্তু শিলার মূলধর্ম একই থাকে। যে পীড়ন ও টানের কারণে যান্ত্রিক আবহবিকার হয়, তা অনেকগুলি কারণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আবার এই আবহবিকারের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপ গঠিত হয়, সেগুলি কতকগুলি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংঘটিত হয় যা নীচে আলোচনা করা হল-

1. চাপ বা ভার হ্রাস (Unloading): অনেক সময় আগ্নেয়, পাললিক ও রূপান্তরিত শিলাস্তরগুলি মাটির নীচে অধিক গভীরতায় অবস্থান করে পরবর্তী সময়ে ভূমির ক্ষয় ও উত্থানের ফলে নীচের শিলার স্তর থেকে চাপ হ্রাস পেলে শিলা উন্মুক্ত হয়ে প্রসারিত হয়। এর ফলে শিলার মধ্যে দারণ ও ফাটলের সৃষ্টি হয়। এই ফাটলগুলি ক্রমশ বড়ো হলে সমগ্র শিলাখণ্ডটি অনেকগুলি পাতের মতো অংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

2. পাতমোচন (Sheeting): ভার হ্রাসজনিত শিলার পাতের ন্যায় বিচ্ছিন্ন হওয়াকে পাতমোচন প্রক্রিয়া বলে। এটি একটি যান্ত্রিক আবহবিকারের ভিন্ন প্রক্রিয়া। সাধারণত আঞ্চলিক স্তরে চাপ হ্রাস পেলে বিশাল আকৃতির শিলাগুলি পাতের (sheet) আকৃতিতে মূল শিলা থেকে বিচ্যুত হয়। পরবর্তী সময়ে অভিকর্ষের টানে এই শিলার পাতগুলি নীচে ভেঙে পড়ে। পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড়ের নাইস শিলাস্তরে এই ধরনের পাতের গঠন লক্ষ করা যায়।

3. উদ্বুতাজনিত প্রসারণ (Thermal Expansion): যে কোনো শিলা বিভিন্ন ধরনের খনিজের সমন্বয়ে গঠিত। শিলারাশির উপর পতিত সূর্যরশ্মির তাপে শিলার ওপরের স্তর প্রসারিত হয় এবং তাপমাত্রা হ্রাস পেলে সংকুচিত হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন এইভাবে চলতে থাকলে শিলার মধ্যে অবস্থিত খনিজগুলির বাঁধন শিথিল হয় এবং শিলা ভেঙে যায়। এই  ধরনের সংকোচন ও প্রসারণের প্রভাবে শিলাখন্ডগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়। আবার ঋতু অনুযায়ী এর তারতম্য লক্ষ করা যায়।

4. তুষার বা লবণ কেলাসন (Ice or Salt Crystal Growth): বিভিন্ন লবণ-খনিজের কেলাস বৃদ্ধি পেলে চারপাশে প্রসারণ বলের সৃষ্টি করে যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটায়। শিলার ফাটলের মধ্যে জল কিংবা লবণ কেলাসিত হলে তার আয়তন বেড়ে গিয়ে শিলার ভেতরে টানের সৃষ্টি হয়। শিলা তখন যান্ত্রিকভাবে ভেঙে যায়। মেরু জলবায়ু অঞ্চলে শিলাস্তরে তরল জল প্রবেশ করে, সেই জল অধিক শীতল হয়ে গেলে কেলাসিত রূপ ধারণ করে। আবার এর আয়তন বৃদ্ধি পেলে শিলাস্তরে ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং পরে ফাটল প্রসারিত হয়ে শিলায় যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটে। এই প্রক্রিয়াকে অনেকে তুহিন আবহবিকার বলে (frost weathering)।

5. জলীয় বাষ্পের প্রভাবে স্ফীতি (Moisture Swelling): ভূপৃষ্ঠের উপর উন্মুক্ত শিলা, বায়ুমণ্ডল থেকে জলীয় বাষ্প শোষণ করে ফুলে যায় বা প্রসারিত হয়। আবার সূর্যরশ্মির তাপে বায়ুমণ্ডলে সরাসরি জলীয় বাষ্প মুক্ত হলে এই শিলাখণ্ডের আয়তনের পরিবর্তন হয়। ফলে শিলায় তাপমাত্রাজনিত যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটতে থাকে।

6. শিথিলকরণ (Slaking): যান্ত্রিক আবহবিকারের নিয়ন্ত্রকগুলি (অর্থাৎ তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত) ক্রমাগত এবং পর্যায়ক্রমে শিলার চরিত্র পরিবর্তিত করে। অর্থাৎ শিলাখণ্ডটি শুদ্ধ ও আর্দ্র হতে হতে শিথিল হয়ে যায়। ফলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রক্রিয়ায় ভেঙে যায়, যাকে শিথিলকরণ বলে। এখানে শিলাস্তরে বারবার শুষ্ক ও আর্দ্র অবস্থার সৃষ্টি হলে শিলাস্তরে পাতলা পাতের মতো শল্ক বা খোসার মোচন হয়।

7. অন্যান্য প্রক্রিয়া (Other Process): আলোচ্য মুখ্য প্রক্রিয়াগুলি বাদ দিয়ে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে আবহবিকারের জন্য কিছু গৌণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া রয়েছে। সেগুলি হল (a) বুদবুদ ক্ষয় (cavitation) যা জলের মধ্যে অবস্থান করে ফেটে গিয়ে শিলায় চাপ সৃষ্টি করে। (b) ঘর্ষণ (abrasion) যা একটি শিলা অন্য শিলার উপর পতিত হলে ঘর্ষণের সৃষ্টি হয়ে আবহবিকার ঘটে। (c) যান্ত্রিক ধস (mechanical collapse) যা কোনো শিলাস্তরের পাদদেশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গেলে উপরের অংশ ধসে পড়ে গেলে আবহবিকার শুরু হয়। (d) কলয়েড উৎপাটন (colloid plucking)- মৃত্তিকার একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র উপাদান হল 'কলয়েড'। কলয়েড এক প্রকার জৈব খনিজের সমন্বয়ে গঠিত আঁঠালো পদার্থ। এই কলয়েড শুকিয়ে গেলে শিলার উৎপাটন প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়। যার ফলে শিলাস্তরের উপরের অংশ খসে পড়ে। (e) আবার বড়ো উল্কাপাতের ফলে শিলারাশির সঙ্গে হলে যেন শিলা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। কিংবা পারমাণবিক বিস্ফোরণের ফলে শিলায় যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটে।

যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন প্রকার (Types of Mechanical Weathering)

বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যান্ত্রিক আবহবিকার সংঘটিত হয়। এগুলি হল-

1. প্রস্তর চাঁই বিচ্ছিন্নকরণ (Block Disintegration): যান্ত্রিক আবহবিকারের ধরনগুলির মধ্যে অন্যতম হল প্রস্তর চাঁই বিচ্ছিন্নকরণ। শিলা তাপের কুপরিবাহী। কিন্তু উয় মরু অঞ্চলে দিনে প্রচণ্ড উত্তাপ এবং রাতে প্রচণ্ড ঠান্ডা অনুভূত হয়। দিনের বেলায় সূর্যের তাপে শিলার উপরের অংশ উত্তপ্ত হয়ে প্রসারিত হয়। কিন্তু শিলার ভেতরের অংশ ততটা তাপ গ্রহণ করতে পারে না বলে ততটা প্রসারিত হতে পারে না। আবার দিনের বেলায় উপরের অংশ যতটা প্রসারিত হয়, রাতে ঠান্ডায় ততটা সংকোচন হয়। এইভাবে দীর্ঘদিন চলার পরে শিলার উপর ও নীচের মধ্যে একটা পীড়নের সৃষ্টি হয়। এই পীড়নের মান একটা নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে শিলার মধ্যে কতকগুলি সমান্তরাল ও লম্বভাবে ফাটলের সৃষ্টি হয়। এক সময় বিভিন্ন ফাটলের মধ্যবর্তী শিলারাশি মূল শিলা থেকে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। একেই প্রস্তর চাঁই বিচ্ছিন্নকরণ বলে। মূল শিলা থেকে ভেঙে যাওয়া শিলাখণ্ডের আকৃতি অনেকটা বর্গক্ষেত্র বা আয়তক্ষেত্রের মতো হয়। একে চৌকাকার বা পিন্ড বিশরণ (block disintegration) বলে। আকৃতি বিভিন্ন কোণ বিশিষ্ট হলে তাকে কৌণিক-বিশরণ (angular disintegration) বলে। আবার শীতল জলবায়ু অঞ্চলে শিলার ফাটল ও দারণের মধ্যে অবস্থিত জল কেলাসিত হয়ে বরফে পরিণত হয়ে শিলার অভ্যন্তরে চাপের সৃষ্টি হয়। এর ফলে শিলার ফাটলগুলি প্রসারিত হয়ে বহু ক্ষুদ্রাকার ঘনকাকৃতি খণ্ডে বিভক্ত হয়।

2. শল্কমোচন (Exfoliation): যান্ত্রিক আবহবিকারের আরেকটি অন্যতম ধরন হল শঙ্কমোচন। এই ধরন উয়তার তারতম্যের ফলে হয়ে থাকে। শঙ্কমোচন যান্ত্রিক আবহবিকারের তাপীয় প্রসারণের একটি উল্লেখযোগ্য প্রক্রিয়া। যে সমস্ত শিলা একই প্রকৃতির খনিজের সংমিশ্রণে তৈরি সেই শিলাগুলিতে এই ধরনের আবহবিকার তৈরি হয়। অর্থাৎ শিলাস্তরের নীচের তুলনায় উপরিভাগে উন্নতার তারতম্য বেশি লক্ষ করা যায়। ফলে সংকোচন এবং প্রসারণ অধিক হয়। এই সংকোচন ও প্রসারণজনিত পীড়নের প্রভাবে শিলাস্তরের উপরিভাগ যতখানি প্রসারিত হয়, নিম্নভাগ কিন্তু ততখানি প্রসারিত হয় না। শিলার উপরিভাগ বেশি উত্তপ্ত হয়ে আয়তনে বেড়ে যায়। যার ফলে নীচের শিলাস্তর থেকে পেঁয়াজের খোসার মতো ধীরে ধীরে খুলে যায় বা ছেড়ে বেরিয়ে আসে। একে শঙ্কমোচন বলে। সমসত্ত্ব শিলা গ্রানাইটে শঙ্কমোচন দেখা যায়। এই ভাবে স্তরে স্তরে শিলার বাইরের অংশ খুলে গেলে শিলার বাইরের আকৃতি গোলাকৃতি হয়ে যায়। আবার যে সমস্ত শিলায় দারণগুলি ভূমির সমান্তরালে অবস্থান করে, সেখানে তাপের পরিবর্তনে শল্কমোচন লক্ষ করা যায়।

3. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ (Granular Disintegration): একাধিক খনিজের সমন্বয়ে গঠিত অসমসত্ব শিলায় তাপের তারতম্যে খনিজগুলো বিভিন্ন হারে আয়তনে বাড়ে বা কমে। কারণ বিভিন্ন খনিজের আপেক্ষিক তাপ বিভিন্ন। ফলে খনিজগুলি নিজেদের মধ্যে ধাক্কা খেয়ে বাইরে ছিটকে বেরিয়ে আসে এবং শিলা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়। মরু অঞ্চলে সূর্যাস্তের পর এই ভাঙন অনেকটা পিস্তল থেকে গুলি ছোঁড়ার শব্দের মতো হয়। একে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ বলে। এই প্রক্রিয়া মরু অঞ্চলে সূর্যাস্তের পর ঘটতে দেখা যায়। সাধারণত গাঢ় বর্ণের খনিজগুলি হালকা বর্ণের খনিজের তুলনায় দ্রুতহারে এবং অধিক পরিমাণে তাপ শোষণ করার জন্য, অধিকমাত্রায় প্রসারিত হয়ে থাকে। মরু কিংবা মরুপ্রায় অঞ্চলে এই পদ্ধতিতে প্রচুর পরিমাণে বালিকণার উৎপত্তি হয়। বিভিন্ন উপাদান দ্বারা শিলা গঠিত হয়, এবং তারা নিজেদের মধ্যে সংঘবদ্ধ অবস্থায় থাকে। কিন্তু শিলায় আবহবিকার ঘটলে সেই সংঘবদ্ধতা নষ্ট হয়ে যায়, তখন শিলাখণ্ডগুলো ছোটো ছোটো বালিকণায় পরিণত হয়।

4. ডার্ট ব্র্যাকিং (Dirt Cracking): শিলাস্তরে ফাটলের মধ্যে সঞ্চয়জাত পদার্থ সূর্যের তাপে উত্তপ্ত ও প্রসারিত হয়ে ফাটলরেখা বরাবর চূর্ণবিচূর্ণ হয়। একে ডার্ট ব্র্যাকিং বলে। চূর্ণবিচূর্ণ পদার্থ পরবর্তীকালে মাটি গঠন করে।

5. বোল্ডার ক্লিভিং (Boulder Cleaving): অনেক সময় সূক্ষ্ম শিলার মধ্যে প্রস্তরখণ্ড অবস্থান করে। প্রস্তরখণ্ডের উপরের অংশ সূর্যতাপে প্রসারিত হয় এবং নীচের অংশ আবন্ধ থাকায় প্রসারিত হতে পারে না। কালক্রমে উপরের অংশ মূল শিলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একে বোল্ডার ক্লিভিং বলে। বিচ্ছিন্ন পদার্থগুলি মাটিতে পরিণত হয়।

6. চাপের হ্রাসবৃদ্ধিজনিত যান্ত্রিক আবহবিকার (Mechanical weathering due to variation of pressure): শিটিং-কোনো শিলাস্তরের উপরের স্তর ক্ষয়ীভূত ও অপসারিত হলে নিম্নমুখী চাপ হ্রাস পায় এবং ভারসাম্য বজায় রাখ ার জন্য নীচের শিলাস্তর ওপরে আসার চেষ্টা করে এবং অনুভূমিকভাবে বিভিন্ন স্তরে ফাটল দেখা যায়। একে শিটিং বলে। ফাটলের শিলা ভেঙে পরবর্তীকালে মাটি গঠন করে।

7. কেলাসজনিত আবহবিকার (Crystallisation weathering): কেলাসজনিত আবহবিকারের প্রক্রিয়াগুলি হল-

(i) তুহিন খন্ডীকরণ (Frost Shattering): উচ্চ অক্ষাংশ বা উচ্চ পার্বত্য গাত্রে দিনের বেলা বা গ্রীষ্মকালে বরফগলা জল বা বৃষ্টির জল শিলাস্তরের ফাটলের মধ্যে প্রবেশ করে ও আবন্ধ থাকে। কিন্তু রাতে বা শীতে জল বরফে পরিণত হয় ও আয়তনে বৃদ্ধি পায়। ফলে শিলাস্তরে ফাটলের চাপ বৃদ্ধি পায় এবং শিলাস্তরকে যান্ত্রিকভাবে ভেঙে যেতে সাহায্য করে। একে তুহিন খন্ডীকরণ বলে। এই প্রস্তর খণ্ডগুলি পর্বতের পাদদেশ বরাবর জমা হলে তাকে ফেলসেনমার বা ব্লকম্পেড বলে। প্রস্তরখণ্ডগুলি পর্বতের গা বরাবর উল্লম্বভাবে সঞ্চিত হলে তাকে স্ত্রী বা ট্যালাস বলে। এগুলি পর্বতের পাদদেশে সঞ্চিত হয়ে বালুকাপূর্ণ মাটি সৃষ্টি করে।

(ii) লবণ আবহবিকার (Salt weathering): শুদ্ধ অঞ্চলে ভৌমজলের সঙ্গে দ্রবীভূত লবণ কৈশিক প্রক্রিয়ায় উপরে সৃষ্টি করে এবং শিলাকে ভেঙে যেতে সাহায্য করে। ভেঙে যাওয়া শিলা মাটি সৃষ্টি করে।

জলপ্রবাহ এবং শুদ্ধতা ও আর্দ্রতাজনিত আবহবিকার (Weathering by flow of water and humidity and aridity):

(i) উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের খাড়া ঢাল দিয়ে যখন নদীর জল জলপ্রপাতের মধ্য দিয়ে তীব্র গতিতে নামতে থাকে তখন তার আঘাতে শিলাস্তরের ফাটলে বুদবুদের সৃষ্টি হয় এবং শিলাকে ভেঙে যেতে সাহায্য করে।

(ii) ক্রমান্বয়ে আর্দ্র ও শুদ্ধ ঋতুতে শিলাস্তরে অসম প্রসারণ ও সংকোচনের জন্য শিলাস্তর ভেঙে যায়।

(iii) মরু অঞ্চলে হঠাৎ বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তপ্ত শিলাস্তর সংকুচিত হয়ে ভেঙে যায়।

(iv) শিলার মধ্যে যেসব খনিজ পদার্থ থাকে বৃষ্টির জলে সেগুলির আদ্রতা বৃদ্ধি পায় এবং আয়তনের বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বিষম প্রকৃরি খনিজের সমভাবে আয়তন বৃদ্ধি না হওয়ার রাসায়নিক পরিবর্তন ছাড়াই শিলা ভেঙে যায়। এভাবে আদি শিলা ভেঙে মাটি গঠিত হয়।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01