পরিবহন সংযুক্তি বা কানেকটিভিটি পরিমাপ সূচক (measurement of transport connectivity index)
আলফা ইনডেক্স (alpha Index বা index): কোন পরিবহন নেটওয়ার্ক প্রকৃতপক্ষে যতগুলি গমনপথ বা সার্কিট (circuit) রয়েছে এবং ওই নেটওয়ার্কের নোডগুলির সাপেক্ষে সর্বোচ্চ যতগুলি গমনপথ তৈরি করা সম্ভব- এই দুয়ের অনুপাতকে আলফা ইনডেক্স বলে। আলফা ইনডেক্স-এর মান 0 থেকে 100-র মধ্যে হতে পারে, যেখানে শূন্য (০) মানে কোন গমনপথ বা সার্কিট (circuit) নেই এবং 100 মানে নেটওয়ার্ক সর্বোচ্চ গমনপথ রয়েছে। সমীকরণ অনুসারে,আলফা ইনডেক্স = (e - v + 1)/(2v - 5) (যেখানে = এজ, v = ভার্টিসেস বা নোডের সংখ্যা)
বিটা ইনডেক্স (beta Index বা ẞ index): কোন পরিবহন নেটওয়ার্ক মোট প্রাপ্ত এজ (edge) এবং মোট প্রাপ্ত ভার্টিসেস অর্থাৎ নোডসমূহের সংখ্যার অনুপাতকে বিটা ইনডেক্স বলে। বিটার মান যত বেশি, সংশ্লিষ্ট নেটওয়ার্কে সংযুক্তি বা কানেকটিভিটির মাত্রাও তত বেশি। পরিবহন ব্যবস্থা যত উন্নত হয়, পরিবহন পথের সংখ্যা অর্থাৎ গমনপথের সংখ্যা যত বাড়ে, বিটা (B)-র মান তত বৃদ্ধি পায়। সূত্র অনুসারে, বিটা ইনডেক্স = (Sigma*e)/(Sigma*V) (যেখানে e = এজভার্টিসেস বা নোডের সংখ্যা)
③ গাম (gamma Index বা index): কোন পরিবহন নেটওয়ার্কে যতগুলি এজ রয়েছে এবং ওই নেটওয়ার্কে যতগুলি এজ তৈরি করা সম্ভব, এই দুয়ের অনুপাতকে গামা ইনডেক্স বলে। গামা ইনডেক্স-এর মান ০ (শূন্য) থেকে 1.0-এর মধ্যে হতে পারে, যেখানে ০ (শূন্য) মানে নোডগুলির মধ্যে কোন সংযোগ নেই এবং 1.0 মানে নোডগুলি পরস্পর সর্বোচ্চ সংযুক্ত। গামা ইনডেক্স-এর সূত্রটিকে দু'ভাবে লেখা হতে পারে। যেমন-
গামা ইনডেক্স (for planner graph)= e e max = e 3(v-2) (যেখানে e =\$ Theta, ভার্টিসেস বা নোডের v = সংখ্যা, e mix =e এর সর্বোচ্চ সংখ্যা)
অথবা,
②গামা ইনডেক্স (for non-planner graph)
= e/(1/2 * n(n - 1)) (যেখানে v = ভার্টিসেস বা নোডের সংখ্যা)
সংযুক্তি বা কানেকটিভিটি ভৌগোলিক গুরুত্ব (geographical significance of connectivity)
দূরত্বকে (distance) অতিক্রম করার জন্য দরকার নির্দিষ্ট স্থানগুলির মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি, যার অন্যতম সূচক হল সংযুক্তি বা কানেকটিভিটি।
জনবসতিগুলির মধ্যে (যাকে পরিবহন নেটওয়ার্কের পরিভাষায় নোডস বা ভার্টিসেস বলে) সংযোগ বৃদ্ধি পেলে অর্থনৈতিক কাজকর্মের ব্যাপ্তি বাড়ে। নতুন শিল্প গড়ে ওঠে। শিল্প সমাবেশের কাজ ত্বরান্বিত হয়। পরিবহন ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়।
কানেকটিভিটির-র প্রসার ঘটলে ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণ সম্ভব হয়। যে কারণে SEZ (special economic zone) -গুলি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্যতম বিবেচনার বিষয় হল পশ্চাদ্ভূমির সঙ্গে (hinterland) SEZ-এর সংযোগ (connection বা circuit) বৃদ্ধি করা।
কানেকটিভিটি বৃদ্ধি করার মাধ্যমে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন (infrastructural development) ঘটানো যায়। এই কাজে যে টাকা বিনিয়োগ করা হয়, তার মাধ্যমে জনগণের আয় বৃদ্ধি পায়, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ে। কাকেনটিভিটি পরিবহনের দক্ষতা বাড়ায় এবং একাধিক ম্যানহাটন (manhattan) দূরত্বাংশ (distance segment) অর্থাৎ ট্যাক্সিক্যাব (taxicab) সার্কিট তৈরি হয়।
কানেকটিভিটি ও অ্যাকসেসিবিলিটির মধ্যে পার্থক্য (difference between connectivity & accessibility)
সংযুক্তি বা সুগমতা অর্থাৎ কানেকটিভিটি ও অ্যাকসে-সিবিলিটি হল পরিবহন পথের কার্যকারিতা, দক্ষতা, সমর্থতা এবং উপযোগিতা নিরূপণের দুটি পরিপূরক সূচক।
কানেকটিভিটি হল একটি পরিবহন নেটওয়ার্কের সাক্ষেপে বিভিন্ন নোডগুলির পরস্পরের সঙ্গে কোনো পরিবহন মাধ্যমের সাহায্যে সংস্পর্শে আসার মাত্রা। যে নেটওয়ার্কে নোড এবং এজ-এর অনুপাত বেশি, যেখানে পরিবহনের উপযোগিতা বেশি। পরিবহন ব্যবস্থা সেখানে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য কানেকটিভিটি পরিমাপের তিনটি সূচক বা ইনডেক্স আছে। যথা-① আলফা ইনডেক্স, বিটা ইনডেক্স এবং ③ গামা ইনডেক্স।
পক্ষান্তরে, অ্যাকসেসিবিলিটি বলতে বিভিন্ন স্থানে পৌঁছানো বা গন্তব্যের সহজতাকে বোঝায়। এখানে উল্লেখ থাকে যে বিভিন্ন স্থান পরস্পরের সঙ্গে পরিবহনের মাধ্যমে যুক্ত হলেই সেই সমস্ত জায়গায় যে সহজে পৌঁছানো যাবে, তার কোন নিশ্চয়তা নেই। এখানে দেখা দরকার একটি জায়গাকে কতগুলি পথ যুক্ত করেছে। এই সংযোগের মাত্রা যে জনবসতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি, সেই জনবসতিটি হল সবচেয়ে সুগম বা অ্যাকসেসিল। বিভিন্ন জনবসতির সাপেক্ষে একটি পরিবহন নেটওয়ার্কে নানা স্থানের সুগমতা বা দুর্গমতা পরিমাণ করার জন্য যে গাণিতিক পদ্ধতির সাহায্যে নেওয়া হয়, তাকে অ্যাকসেসিবিলিট ম্যাট্রিক্স বলে।
পরিবহন জালিকার সংযুক্তি(connectivity of transport network)
কোনো পরিবহন জালিকার সংযুক্তি/সংযুক্ততা একে অপরের সাথে কীভাবে যুক্ত তা বোঝানো হয়। একটি পরিবহন জালির সংযুক্তি নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। যথা-
① আলফা সূচক (alpha index)
②বিটা সূচক (beta index)
③গামা সূচক (gamma index)