welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক (dissection index)

ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক (dissection index)


ধারণা (concept)

ভূমিরূপ পরিমিতির একটি উল্লেখযোগ্য সূত্র হলো ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক বা ব্যবচ্ছেদের সূচক। ভূ-প্রকৃতির কোনো একটি বিশেষ অঞ্চল কতটা ব্যবচ্ছিন্ন বা কর্তিত হয়েছে, তা নির্ণয় করা হয় এই সূচকের সাহায্যে। এটি পরিমাপের জন্য ডোভ নীর (1957)

কর্তৃক ব্যবহৃত যে সূত্রটি ব্যবহার করেছেন সেটি নিম্নরূপ-

dissection index= relative relief maximum altitude

আবহবিকারের বিভিন্ন উপাদান দ্বারা ভূমিরূপ ক্ষয়ের মাত্রা নির্ধারণের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। এই সূচকটির দ্বারা ভূমিরূপের ক্ষয়চক্রের পর্যায় সম্বন্ধেও ধারণা করা যায়।

ব্যবচ্ছিন্ন সূচকের সংজ্ঞা(definition of dissection index)

কোনো অঞ্চলের আপেক্ষিক উচ্চতা এবং ঐ অঞ্চলের চরম উচ্চতার যে অনুপাত তাকে ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক বলে। অর্থাৎ কোনো অঞ্চলের আপেক্ষিক উচ্চতাকে ঐ অঞ্চলের সর্বোচ্চ উচ্চতা দিয়ে ভাগ করলে যে মান পাওয়া যায় তাকে ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক বা ব্যবচ্ছিন্নতার মাত্রা বলে।

ব্যবচ্ছিন্ন সূচকের গুরুত্ব(importance of dissection index)

① একটি বিশেষ অঞ্চল কতটা ব্যবচ্ছিন্ন বা কর্তিত হয়েছে, তাহা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।

② আবহবিকারের বিভিন্ন উপাদান দ্বারা ভূমিরূপ ক্ষয়ের মাত্রা নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

④ স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রের মাত্রা বোঝাতেও ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক ব্যবহৃত হয়।

⑤ ভূমিরূপের ক্ষয়চক্রের পর্যায় সম্বন্ধে ধারণার জন্য এই সূত্র ব্যবহৃত হয়।

⑥ কোনো নদী অববাহিকা অঞ্চলের ব্যবচ্ছিন্নতার মাত্রা ও প্রকৃতি বোঝাতে এই সূচক ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ ভূমিরূপ বিজ্ঞানে ভূমিরূপ বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায় বা ধারা নির্ধারণ এবং ভূমিভাগের ব্যবচ্ছিন্নতার মাত্রা বিশ্লেষণে ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক (DI) নির্ধারণ করা হয়।

ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র হইতে ব্যবচ্ছিন্ন সূচক নির্ণয় পদ্ধতি (method of determination of dissection index from topographical map)

ব্যবচ্ছিন্ন সূচক নির্ণয়ের জন্য ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র থেকে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করা হল। যথা-

ধাপ-মানচিত্রে এমন একটি অঞ্চল চিহ্নিত করো যেখানে ব্যবচ্ছিন্ন সূচকের পার্থক্য বেশি আছে।

ধাপ- ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের স্কেল 1:50,000 (1 cm to 500 m) হলে প্রথম পর্যায়ে মানচিত্রের নির্বাচিত (10 সেমি × 12 সেমি) অংশটিকে 2 সেমি x 2 সেমি ছোটো গ্রিডে (মোট 30 টি গ্রিড) অর্থাৎ একবর্গ কিমি অনুযায়ী ভাগ করে গ্রিডগুলিকে স্তম্ভ ও সারি (column & row) অনুযায়ী সংখ্যা ও ইংরেজি অক্ষর এর সাহায্যে চিহ্নিত করা।

ধাপ-প্রতিটি গ্রিডের সর্বোচ্চ উচ্চতা ও সর্বনিম্ন উচ্চতা (spot height বা সমোন্নতি রেখার সাহায্যে) নির্ণয় করে গ্রিডের অবস্থান অনুযায়ী সারণির মধ্যে নথিভুক্ত করা হয়।

ধাপ-প্রতিটি গ্রিডের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মানের পার্থক্য নির্ণয় করে আপেক্ষিক উচ্চতা নির্ধারণ করে গ্রিডের অবস্থান অনুযায়ী সারণির মধ্যে নথিভুক্ত করা হয়।

ধাপ- পরিশেষে ব্যবচ্ছিন্ন সূচক নির্ণয়ের জন্য relative relief কে maximum altitude দিয়ে ভাগ করা হল এবং গ্রিডের অবস্থান অনুযায়ী নথিভুক্ত করা হল.

ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক মানচিত্র অঙ্কন পদ্ধতি (method of construction of dissection index map)

নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করে নদী অববাহিকার ভূমিরূপ পরিমিতি বিশ্লেষণ সংক্রান্ত ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক মানচিত্র প্রস্তুত করা হলো। যথা-

ধাপ-ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক মানচিত্র অঙ্কনের জন্য একটি সাদা কাগজের মধ্যে ভূবৈচিত্রত্র্যসূচক মানচিত্রে অঙ্কিত গ্রিডের (2) সেমি ×2 সেমি) অনুরূপ ছোটো গ্রিডের জালিকা আঁকা হল।

ধাপ-এবার প্রতিটি গ্রিডের কেন্দ্রবিন্দুতে নির্ধারিত ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক মান বসানো হল।

ধাপ-এখন সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ব্যবচ্ছিন্নতার সূচকের মান দেখে (0.41-0.04-0.37+4=0.0925 0.1) 0.1 মানের ব্যবধানে ইন্টারপোলেশান পদ্ধতিতে 0.1, 0.2, 0.3 ও 0.4 মানের চারটি সমমান রেখা এঁকে মানচিত্রটিকে পাঁচটি ব্যবচ্ছিন্নতার সূচক অঞ্চলে ভাগ করা হল।

ধাপ-অঙ্কিত সমমানের অর্ন্তবর্তী পাঁচটি অঞ্চলকে কম থেকে বেশি ঘনত্বকে হালকা থেকে ক্রমশ গাঢ় লাল রঙের প্রলেপ দিয়ে স্পষ্ট করে চিহ্নিত করা হল।

ধাপ- শেষে মানচিত্রের শিরোনাম (heading), স্কেল (scale), নির্দেশিকা (legend/Index), অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশগত (lat & long.) বিস্তার ইত্যাদি লিখে মানচিত্র অঙ্কন সম্পূর্ণ করা হলো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01