মেসোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্য(Characteristics of Mesosphere)
স্ট্রাটোস্ফিয়ারের উর্ধ্বে 50-80 কিমি উচ্চতার বায়ুস্তর মেসোস্ফিয়ার (mesosphere) নামে পরিচিতি। এই স্তরে উদ্বুতা পুনরায় কমতে থাকে। এর অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
1. এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কমে। কমতে কমতে প্রায় ৪০ কিমি উচ্চতায় বায়ুর উন্নতা সর্বনিম্ন -83°C হয়, অনেক সময় -100°C পর্যন্ত কমে। বাস্তবিকই মেসোস্ফিয়ার হল বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে শীতলতম স্তর। এমনকি বরফাবৃত অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের শীতলতম স্থানের তাপমাত্রার থেকেও এই স্তরের তাপমাত্রা শীতলতর।
2. এই স্তরে কিছু জলীয় বাষ্প অনুপ্রবেশ করায় মেঘের সঞ্চার হয়। কিন্তু অত্যধিক ঠান্ডার জন্য জলীয় বাষ্প বরফ কণায় পরিণত হয়। এই বরফ কণাসমৃদ্ধ পাতলা মেঘ সাধারণত Noctilucent Cloud (NLC) নামে পরিচিত এবং মেসোপজে (মেসোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমা) দেখা যায়। উল্কাপিন্ডজাত ধূলিকণা এবং উচ্চ বায়ুস্তরের ঊর্ধ্বমুখী পরিচলন স্রোত এই মেঘ সৃষ্টিতে সাহায্য করে। সূর্যাস্তের পর গোধূলির আলোয় এই মেঘ পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে দেখা যায়। সূর্য 4°-16° হরাইজোনের (horizon) নীচে থাকলে স্পষ্ট বোঝা যায় এই NLC মেঘকে।
3. বায়ুর চাপ এই স্তরে খুবই কম এবং এই চাপ ক্রমশ উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে কমতে থাকে। 50 কিমি উচ্চতার এই চাপ থাকে প্রায় 1 মিলিবার (mb)-এর কাছাকাছি এবং তা প্রায় 80-90 কিমি উচ্চতায় দাঁড়ায় 0.01 মিলিবার (mb)।
4. এই স্তরের অপর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এই স্তরে পৃথিবীর বাইরের উল্কাপিণ্ড প্রবেশ করে বায়ুর সঙ্গে সংঘর্ষে জ্বলে পুড়ে যায়-যাকে আমরা shooting Star বলে ভুল করি।
5. মেসোস্ফিয়ারের সর্বোচ্চ অংশে যেখানে উন্নতা আর কমে না বা স্থির থাকে, যেখানে একটি প্রান্তিক স্তর দেখা যায়, যার নাম মেসোপজ (mesopause)। এর উপরে উদ্বুতা আবার বৃদ্ধি পায়। প্রকৃত পক্ষে এই মেসোপজই হল হোমোস্ফিয়ার বা সমমন্ডলের শেষ সীমা, এর পরেই শুরু হয় হেটেরোস্ফিয়ার (heterosphere) বা বিষমমণ্ডল।