welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ও অক্সিজেনের আবির্ভাব(Appearence of the Water Vapour (H₂O) and Oxygen (O2) in the Atmosphere)

বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ও অক্সিজেনের আবির্ভাব(Appearence of the Water Vapour (H₂O) and Oxygen (O2) in the Atmosphere)


জলীয় বাষ্পের আবির্ভাব (Appearence of H₂O)

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতির সঠিক কারণ সম্বন্দ্বে বিজ্ঞানীদের মধ্যে নানা মত আছে। পৃথিবী সৃষ্টির প্রথম পর্যায়ে, এখানে জলের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। পৃথিবীতে জলের অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রথম প্রমাণ মেলে, পৃথিবীর গঠনের আনুমানিক 15 কোটি বছর পরে। অবশ্য তার আগে জল থাকলেও তা পৃথিবীর উত্তাপে ও সৌর ঝড়ে নিশ্চিহ্নে হয়ে গেছে। এইসময় অবশ্য সূর্যের দূরবর্তী গ্রহগুলিতে জলকণা বা বরফ তৈরি সম্ভব হয়েছিল। পৃথিবীতে জলকণা আবির্ভাবের ব্যাপারে উল্কাপিন্ড, ধূমকেতু ও গ্রহাণুর ভূমিকা সর্বাধিক। পৃথিবী সৃষ্টির প্রথম পর্যায়ে এই সমস্ত জলযুক্ত উল্কাপিণ্ড, গ্রহাণু ও ধূমকেতুর সঙ্গে সংঘর্ষের সময়ই পৃথিবীতে জলের আবির্ভাব। অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা, এই জল যুক্ত গ্রহাণুগুলি সম্ভবত সৌরজগতের বাইরে তৈরি হয়েছিল। যেখানে জল এবং হাইড্রক্সিল (OH) মূলকযুক্ত খনিজের কেলাসীভবন সম্ভব হয়েছিল। পরবর্তীকালে এইসব গ্রহাণু পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হওয়াতে জল এবং OH বাহিত খনিজ পৃথিবীতে এসে পড়ে। জলকণা মূলত পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিভিন্ন খনিজের কেলাস জালিকার মধ্যে OH মূলক হিসাবে উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর গুরুমণ্ডলের শিলাসমূহের তাপীয় গলনের সময় সর্বপ্রথম এই OH বাহিত খনিজগুলি গলিত হয়ে ম্যাগমা উৎপন্ন করে এবং সেই সময় (OH) মূলক খনিজ থেকে মুক্ত হয়ে জলকণা তৈরি করে। এই জল ম্যাগমাতে দ্রবীভূত হয়ে আগ্নেয়গিরির মাধ্যমে পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ থেকে আবহমণ্ডলে বেরিয়ে আসে। এই জলকণা পরবর্তীকালে ঘনীভূত হয়ে সমুদ্রের সৃষ্টি করে।

অক্সিজেনের আবির্ভাব (Appearence of O₂)

বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে আয়তন হিসাবে অক্সিজেনের পরিমাণ শতকরা 20.90 ভাগ। আথচ আজ থেকে 250 কোটি বছর আগে এর পরিমাণ ছিল বর্তমানের 1 শতাংশেরও কম, যা পরবর্তী 190 কোটি বছরে একটু একটু করে বেড়ে বর্তমানে এই পরিমাণে এসে পৌঁছেছে। বিগত 60 কোটি বছরে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ মোটামুটি একই আছে।

বর্তমানে আবহমণ্ডলে যে পরিমাণ অক্সিজেন রয়েছে তার বেশির ভাগটাই এসেছে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কিন্তু বিবর্তনের প্রথম পর্যায়ে পৃথিবীতে কোনো উদ্ভিদ ছিল না। তাই তখন অক্সিজেন তৈরি হয়েছিল সালোক বিয়োজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় জলের অণু সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির (UV-A,B,C) প্রভাবে ভেঙে গিয়ে হাইড্রোজেন (H_{2}) ও অক্সিজেন (O_{2}) উৎপন্ন হয়। হালকা হাইড্রোজেন গ্যাস পৃথিবীর আকর্ষণ বল অতিক্রম করে সহজে বায়ুমণ্ডল থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু তুলনায় ভারী অক্সিজেন আবহমণ্ডলে থেকে যায়। পরবর্তীকালে এর একটা অংশ অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ওজোন (O_{3}) গ্যাসে পরিণত হয়।

350 কোটি বছর আগেকার কিছু ব্যাকটেরিয়া কার্বন ডাই-অক্সাইডযুক্ত বিজারণ ধর্মী আবহাওয়াতে আক্সিজেন যুক্ত করতে শুরু করে, এরা সায়ানোব্যাকটেরিয়া (cyano bacteria) নামে পরিচিত। প্রায় 270 কোটি বছর ধরে এই ব্যাকটেরিয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে কার্বন ও অক্সিজেন বিশ্লিষ্ট করতে থাকে। 250 কোটি বছর আগে পাথরে আটকে থাকা বুদবুদের মধ্যে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।

পরবর্তীকালে সালোকসংশ্লেষে সক্ষম জীবের সংখ্যা যতই বাড়তে থাকে ততই অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে চলে। বিবর্তনের একটা ধাপে যখন আবহমণ্ডল বিজারণধর্মী ছিল, তখন এক ধরনের সামুদ্রিক ব্যাকটেরিয়ার আবির্ভাব হয়েছিল যারা সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে অক্সিজেন প্রস্তুত করতে পারে। 350 কোটি বছরের পুরোনো শিলার মধ্যে এদের অস্তিত্বের স্বাক্ষর পাওয়া যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01