welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

আবহগত তথ্যচিত্রের ধারণা (concept of meteorological data diagrams)

আবহগত তথ্যচিত্রের ধারণা (concept of meteorological data diagrams)


নানা ধরনের চিত্রের সাহায্যে আবহাওয়া ও জলবায়ু চরিত্র নির্দেশ করা যায়। সাধারণভাবে বৃষ্টিপাত দেখানোর জন্য স্তন্তচিত্র এবং উন্নতার জন্য রেখাচিত্র ব্যবহৃত হয়। এছাড়া আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিসংখ্যানের দ্বারা সমমান রেখার সাহায্যে, যথা- সমোয়রেখা (isotherm), সমপ্রেষরেখা (isobar) ইত্যাদির সাহায্যে বিভিন্ন মাপচিত্র প্রস্তুত করা হয়।

আবার কোনো স্থানে বায়ু প্রবাহের দিক (wind direction) এবং বায়ুর গতিবেগ (wind velocity) বছরের বিভিন্ন সময়ে কিরূপ থাকে তার সাহায্যেও উইওরোজ মানচিত্র (wind rose map) প্রস্তুত করা হয়। আঞ্চলিক জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদান অর্থাৎ মেঘ, বায়ুর গতি ও দিক, চাপ, বায়ুর উন্নতা এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা প্রভৃতি দেখানোর জন্য যৌগিক ক্লাইমোগ্রাফ (composite climograph) ব্যবহার করা হয়। এছাড়া আঞ্চলিক জলবায়ুর দৈনিক চিত্র এবং বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে আবহাওয়ার বিশেষ চার্ট প্রস্তুত করা হয়।

আবহগত তথ্যচিত্রের উপযোগিতা ও ব্যাখ্যা (utility & interpretation of meteorological data diagrams)

আবহাওয়ার অবস্থা জানার জন্য পৃথিবীর প্রত্যেক উন্নত দেশের। বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য স্থানে নানা প্রকার যন্ত্রের সাহায্যে প্রতিদিনের বায়ুর উন্নতা, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রভৃতি নির্ভুলরূপে পর্যবেক্ষণ করে নথিভুক্ত করা হয়। প্রতিদিনের স্থানীয় আবহাওয়া নির্দেশক তথ্য দেখে বিভিন্ন দিনের চাপ, উন্নতা, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি পরিবর্তনের ধারা বোঝা যায়। এরূপ তথ্যগুলির 24 ঘন্টার গড় অবস্থা থেকে দৈনিক গড়, 7 দিনের গড় অবস্থা থেকে সাপ্তাহিক গড়, 30 দিনের গড় অবস্থা থেকে মাসিক গড় এবং 12 মাসের গড় অবস্থা থেকে বার্ষিক গড় নির্ণয় করা হয়। উয়তা ও বৃষ্টিপাতের এরূপ মাসিক গড় ফলগুলো লেখচিত্রে প্রকাশ করে বার্ষিক উন্নতা ও বৃষ্টিপাতের হ্রাস-বৃদ্ধি বোঝা যায়। আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিসংখ্যান চিত্রের মাধ্যমে দেখানোর বহুবিধ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। এদের মধ্যে উন্নতা ও বৃষ্টিপাতের সাধারণ লেখচিত্র, ক্লাইমোগ্রাফ, হায়দারগ্রাফ, এগরোগ্রাফ প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়।

 ক্লাইমোগ্রাফ (climographs or climatographs or climagraphs)

ধারণা (concept):

ক্লাইমোগ্রাফ বা ক্লাইমোগ্রাম হল এক প্রকার দ্বাদশ ভুজ, যা কোনো একটি নির্দিষ্ট স্টেশনের গড় মাসিক (12 মাসের) আবহাওয়ার উপাদানের (উন্নতা এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা) মানের অবস্থা দেখায়। এর আকৃতি ও অবস্থানের লেখচিত্র আবহাওয়াবিদ ও ভৌগোলিকদের কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্য জানতে সাহায্য করে। 1910 সালে J. Ball  প্রথম ক্লাইমোগ্রাফ তৈরি করেন। এই ক্লাইমোগ্রাফ থেকে ওই অঞ্চলের মানুষের দৈহিক গঠন (human physiological structure) সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায় অর্থাৎ মানুষের উপর জলবায়ুর প্রভাব জানা যায়। তবে বর্তমানে যে ক্লাইমোগ্রাফ (climograph) অঙ্কন করা হয় তা 1949 সালে আবিষ্কার করেন জি, টেলর (G. Taylor)। G. Taylor-এর মতে অস্বস্তির মাত্রা (degree of uncomfortability) হল 40°F‌ থেকে 45°F অত্যন্ত বিরল অস্বস্তিকর (very rarely uncom-fortable), থেকে আদর্শ (ideal), থেকে 60°F কদাচিৎ অস্বস্তিকর (rarely uncomfortable) 60 ^ 0 * F থেকে 65 ^ 0 * F কখনও কখনও অস্বস্তিকর (sometimes uncomfortable), 65 ^ 0 * F থেকে 70 ^ 0 * F প্রায়ই অস্বস্তিকর (often uncomfortable), 70 ^ 0 * F থেকে 75 ^ 0 * F সাধারণ অস্বস্তিকর (usually comfortable) নামে অভিহিত করেছেন। ক্লাইমোগ্রাফ চিত্রের দক্ষিণ-পূর্বে 'কড়া' (Raw), উত্তর-পূর্বে 'ভ্যাপসা (Muggy), উত্তর-পশ্চিমে 'দহনীয়' (Scorching) এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে 'তীক্ষ্ণ' (Keen) প্রভৃতি লেখা হয়। এখানে 'Raw' বলতে আর্দ্রকুন্ড উয়তা 40 ^ 0 * F অপেক্ষা কম এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা 70% অপেক্ষা অধিক, 'Muggy' বলতে আর্দ্রকুন্ড উন্নতা 60 ^ 0 * F অপেক্ষা অধিক এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা 70% অপেক্ষা অধিক; 'Scorching' বলতে আর্দ্রকুন্ড উয়তা 60 ^ 0 * F অপেক্ষা অধিক এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা 40% অপেক্ষা কম: এবং 'Keen' বলতে আর্দ্রকুণ্ড উয়তা 40 ^ 0 * F অপেক্ষা কম এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা 40% অপেক্ষা কম বোঝায়।

ক্রান্তীয় অঞ্চলে শ্বেতকায় ঔপনিবেশিকদের বসবাস যোগ্যতার মাত্রা দেখানোর জন্য ক্লাইমোগ্রাফ চিত্রের উত্তর হয়েছে। ছকের চারটি কোণা অস্বস্তিকর জলবায়ুর সংকেত দিচ্ছে। 'Scorching' দ্বারা উমর, 'Keen' দ্বারা শতীল মধু অবস্থার কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন ক্লাইমোগ্রাফের আকৃতি নানাবিধ জলবায়ুর পার্থক্যের সংকেত দেয়। বৈশিষ্ট্যমূলক। ক্লাইমোগ্রাফগুলোর বিশেষ আকৃতি দেখে শিক্ষার্থীর সহজেই অপরিচিত জলবায়ুগুলো তুলনা করতে পারে। অনেকটা সুতো কাটার টাকু (spindle) আকৃতির ক্লাইমোগ্রাফ দ্বারা শুদ্ধ মহাদেশীয় জলবায়ু; কর্ণীয় (diagonal) ছকদ্বারা 'ভূ-মধ্যসাগরীয়'; অন্যদিকে সম্প্রসারিত কর্ণ দ্বারা মৌসুমী জলবায়ু এবং পূর্ণ অবয়ব বিশিষ্ট চিত্র দ্বারা 'আদর্শ বৃটিশ শ্রেণির জলবায়ু' বোঝায়।

ক্লাইমোগ্রাফ-এর অঙ্কন পদ্ধতি

প্রথমে -অক্ষে wet-bulb temperature (°F) এবং X-অক্ষে আপেক্ষিক আর্দ্রতা (%) প্রতিস্থাপন করে মাস ভিত্তিক অবস্থান নির্ণয় করা হয় এবং পরে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি মাসের অবস্থানের মধ্যে যোগ করা হয়। টেলর ক্লাইমোগ্রাফ-এর অবস্থান কে চারটি ভাগে বিভক্ত করেছেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01