welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

কোরোপ্লেথ পদ্ধতি এবং কোরোপ্লেথ মানচিত্র-এর প্রস্তুতি(choropleth method and preparation of choropleth map)

কোরোপ্লেথ পদ্ধতি এবং কোরোপ্লেথ মানচিত্র-এর প্রস্তুতি(choropleth method and preparation of choropleth map)


ধারণা (concept)

'Choros' একটি গ্রীক শব্দ, যার অর্থ ক্ষেত্রফল (area) বা স্থান (space) এবং pleth অর্থ crowd বা সংখ্যা অর্থাৎ বস্তুর স্থানগত বন্টনের মানচিত্র অঙ্কন পদ্ধতি হল ছায়াপাত বা কোরোপ্লেথ। ডট্ মানচিত্রে প্রকৃত জনসংখ্যা দেখানো যায় কিন্তু① এই পদ্ধতিতে প্রকৃত জনসংখ্যা না দেখিয়ে প্রতিবর্গ কিমি বা প্রতি বর্গ মাইলে কত জনসংখ্যা তা দেখানো হয়ে থাকে। প্রতি বর্গ কিমি বা প্রতি বর্গ মাইলে জনসংখ্যা কত তা ওই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যাকে ক্ষেত্রফল (area) দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায়। এরূপ প্রাপ্ত জনসংখ্যার ঘনত্বকে স্কেল বা সূচক (index) অনুসারে রঙ গাঢ় বা হালকা করে বা রেখার শেড (shade) এর সাহায্যে মানচিত্রে দেখানো হয়ে থাকে, একে ছায়াপাত মানচিত্র বা কোরোল্লেথ মানচিত্র (choropleth map) বলে। এই ধরনের মানচিত্রে বিভিন্ন ঘনত্বের জন্য বিভিন্ন রং বা প্রতীক চিহ্ন (symbol) ব্যবহার না করে একই রং বা শেডকে ঘনত্ব অনুসারে হালকা থেকে গাঢ় করে দেখালে ভালো হয়। কম ঘনত্বযুক্ত অঞ্চলে হালকা করে দেখালে ভালো হয়। কম ঘনত্বযুক্ত অঞ্চলে হালকা রং বা শেড ব্যবহার করে তা ঘনত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ গাঢ় থেকে আরও বেশি গাঢ় করা প্রয়োজন।

সংজ্ঞা (definition)

কোনো উপাদানকে (যেমন- জনসংখ্যা, বসতি, শস্য উৎপাদন ইত্যাদি) প্রতি একক প্রশাসনিক ক্ষেত্রমানের সাপেক্ষে পরিমাপ করে যে ক্রমবিন্যস্ত মানচিত্র (graded map) অঙ্কন করা হয় তাকে কোরোপ্লেথ মানচিত্র বলে।

নীতি (principle)

কোরোপ্লেথ মানচিত্র অঙ্কনের মূলনীতি হল- ছায়াপাতের তীব্রতা উপাদানের ঘনত্বের সঙ্গে সমানুপাতিক।

① ছায়াপাত হালকা হলে উপাদানের ঘনত্বের গড় মান কম হয়। অর্থাৎ প্রতিবর্গ কিমি বা মাইলে উপাদানের গড় মান কম হয়।

② আবার, ছায়াপাত ঘন হলে উপাদানের ঘনত্বের গড় মান বেশিকে নির্দেশ করে। অর্থাৎ প্রতি বর্গকিমি বা মাইলে উপাদানের গড় মান বেশি হয়।

গঠন বা অঙ্কন পদ্ধতি(method of construction)

কোরোল্লেথ মানচিত্র গঠন পাঁচটি পর্যায়ে সম্পন্ন করা হয়। যথা-

(1)ঘনত্ব নির্ণয়, ঘনত্ব উপাদানের মান ক্ষেত্রফল

(2)শ্রেণি সংখ্যা নির্বাচন, শ্রেণিসংখ্যা (sturge-এর পদ্ধতির সূত্র) = 1 +3.322 log N (N = পর্যবেক্ষণ এককের মোট সংখ্যা)

(3)শ্রেণি-ব্যবধান নির্বাচন, শ্রেণি-ব্যবধান - সর্বোচ্চ মান সর্বনিম্ন মান শ্রেণি সংখ্যা

(4)গণনার সাহায্যে কোরোপ্লেথ সারণি গঠন।

(5)কোরোল্লেথ মানচিত্র অঙ্কন।

ব্যবহার (uses)

① কোনো দেশ, রাজ্য, জেলা, সি.ডি, ব্লক (community development block) অথবা কোনো অঞ্চলের জনঘনত্ব দেখাতে এই মানচিত্রের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।

② জনঘনত্ব ছাড়াও শস্য নিবিড়তা, কৃষি জমির ঘনত্ব, শিল্প-শ্রমিকের নিবিড়তা, রাস্তার ঘনত্ব, নদীর দৈর্ঘ্যের ঘনত্ব ইত্যাদি বোঝাতেও এই মানচিত্র ব্যবহার করা হয়।

কোরোপ্লেথ (ছায়াপাত) পদ্ধতির সুবিধা(advantages of choropleth method)

① প্রশাসনিক একক অঞ্চল যত নিম্নস্তরের হয় ততই উপাদানের দৈশিক বণ্টন এই ছায়াপাত পদ্ধতিতে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়।

② প্রশাসনিক একক অনুসারে ছায়াপাত করা হয় বলে কোরোপ্লেথ মানচিত্রের বৈশিষ্ট্য সহজে বোঝা যায়।

③ ছায়াপাত নির্দেশক (index) আগে থেকে নির্বাচন করার জন্য জটিল গণনার প্রয়োজন হয় না।

④ ইচ্ছেমতো ছায়াপাত বা রং এর ব্যবহার করার সুবিধা রয়েছে।

⑤ কোরোপ্লেথ বা ছায়াপাত মানচিত্র আইসোপ্লেথ বা সম-মানরেখা মানচিত্রের বিপরীত, কারণ এতে স্থান বা এলাকা মূল এবং বিন্যাস নিমিত্ত মাত্র।

কোরোপ্লেথ (ছায়াপাত) পদ্ধতির অসুবিধা (disadvantages of choropleth method)

(1)ছায়াপাত বা রঙের ব্যবহার প্রশাসনিক সীমানাকে অনুসরণ করে বলে প্রশাসনিক একক-এর মধ্যেকার ঘনত্বের পরিবর্তন নির্ণয় করা যায় না।

(2)কম থেকে বেশি ঘনত্ব বোঝাতে পর্যায়ক্রমিক ছায়াপাত বা রং ব্যবহার এর ক্ষেত্রে অন্তত্য ধৈর্য্য ও একাগ্রতার প্রয়োজন হয়।

(3)অঞ্চল বিশেষের জন্য ছায়াপাত এবং রং ব্যবহার করা হয় বলে ঐ পদ্ধতিতে কোন অঞ্চলের বিশেষ অংশে জনংসখ্যা ঘনত্ব কত তা জানতে পার যায় না।

(4)ছায়াপাত মানচিত্র অ-ভৌগোলিক; কারণ এই মানচিত্রে রাজনৈতিক বিভাগ অনুসারে ঘনত্ব পরিবর্তিত হয়, যা স্বাভাবিক নয়। কোনো উপাদানের বিন্যাসের উপর পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব অগ্রাহ্য করে ভৌগোলিক এলাকার পরিবর্তে রাজনৈতিক এলাকার উপর জোর দেওয়া হয় এ জাতীয় মানচিত্রে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01