বিয়ারিং সংজ্ঞা (bearing definition)
① পৃথিবীপৃষ্ঠে উত্তর-দক্ষিণ মেরুরেখার ওপর অবস্থিত কোনো বিন্দু থেকে অঙ্কিত সরলরেখা উত্তর-মেরুর সাপেক্ষে ঘড়ির কাঁটার দিকে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে বিয়ারিং (bearing) বলে।
② কোনো একটি লাইনের বিয়ারিং বলতে আমরা বুঝি যে, উত্ত লাইনটি কোনো একটি নির্দিষ্ট দিক বা দ্রাঘিমা (some① reference direction or meridian)-র পরিপ্রেক্ষিতে কত ডিগ্রী অনুভূমিক কোণ (horizontal angel) উৎপন্ন করছে। এই নির্দিষ্ট দিক বা দ্রাঘিমা প্রকৃত দ্রাঘিমা (true meridian) ও ম্যাগনেটিক দ্রাঘিমা (magnetic meridian) অথবা হতে পারে। ইচ্ছানুযায়ী যে-কোনো দ্রাঘিমাও
বিয়ারিং-এ শ্রেণিবিভাগ (classification of bearing):
প্রকৃত বিয়ারিং (true bearing): কোনো সরলরেখা পৃথিবীর ভৌগোলিক উত্তর মেরুরেখার সাপেক্ষে ঘড়ির কাঁটার দিকে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে প্রকৃত বিয়ারিং বলে।
চৌম্বক বিয়ারিং (magnetic bearing): কোনো সরলরেখ পৃথিবীর চৌম্বক উত্তর-দক্ষিণ রেখার সঙ্গে ঘড়ির কাঁটার দিকে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে চৌম্বক বিয়ারিং বা ম্যাগনেটিক বিয়ারিং বলে।
চৌম্বক বিচ্যুতি (magnetic declination): মেরুরেখা ও ভৌগোলিক উত্তর মেরুরেখার মধ্যে কেনিয় ব্যবধানকে চৌম্বক বিচ্যুতি বা ম্যাগনেটিক বিনতি বলে।
পরিমাপের পদ্ধতি অনুসারে বিয়ারিং-এর শ্রেণিবিভাগ (classification of bearing based on method of measurement)
বিয়ারিং সাধারণত দুভাবে প্রকাশ করা হয়। যথা-
(1)হোল সার্কল সিস্টেম (whole circle system) এবং
(2)কোয়াডেন্টাল সিস্টেম (quadrantal system)
হোল সার্কল সিস্টেম (whole circle system)
এই পদ্ধতিতে কোনো লাইনের বিয়ারিং নির্দিষ্ট ম্যাগনেটিক দ্রাঘিমার উত্তর প্রান্ত থেকে সব সময় ঘড়ির কাঁটার দিকে বৃত্তাকারে প্রদত্ত লাইন পর্যন্ত মাপা হয়। এভাবে মাপা কোণটিকে হোল সার্কল বিয়ারিং (W.C.B) বলে এবং এর মান (value) o deg থেকে 360 deg এর মধ্যে থাকে। সুতরাং চিত্র নং 7.4 'অনুসারে A*P_{1} লাইনের হোল সার্কল বিয়ারিং হল theta_{1} A*P_{2} লাইনের হোল সার্কল বিয়ারিং theta_{2} * A*P_{3} লাইনের হবে theta_{3} ইত্যাদি। প্রিজম্যাটিক কম্পাস বা থিওডোলাইটের মাধ্যমে যে বিয়ারিং পাওয়া যায় তা হল হোল সার্কল বিয়ারিং।
(1)দক্ষিণ-পশ্চিম (S.W.) এবং চতুর্থটি উত্তর-পশ্চিম (N.W.) কোয়াড্রেন্টরূপে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি কোয়াড্রেন্ট-এ বিয়ারিং ০° থেকে 90 ^ 0 পর্যন্ত মাপা যায়। কোয়াডেন্ট বিয়ারিং সেই কারণে কখনও ৭০ ডিগ্রির বেশি হয় না। এই পদ্ধতিতে দুটি পদ্ধতির সাহায্যে বিয়ারিং নির্দেশ করা হয়। যেমন 7.5 নং চিত্রে A*P_{1} লাইনের বিয়ারিং হবে N.E., A*P_{2} লাইনের বিয়ারিং হবে theta_{2} S.E. ইত্যাদি। দ্বিতীয় পদ্ধতি, যেটি বেশি প্রচলিত তাতে বিয়ারিং এর যে কোণটি, উৎপন্ন হয় তার পূর্বে উত্তর (N) বা দক্ষিন (5) লেখে তারপর পূর্ব (E) বা পশ্চিম (W) লেখা হয়। যেমন, A*P_{3} লাইনের বিয়ারিং হবে দক্ষিণ 6 3 পশ্চিম (S*theta_{3}*W) A*P_{4} লাইনের বিয়ারিং হবে N*theta_{4}*W এরকম।
(2)কোয়াড্রেন্টাল সিস্টেম (quadrantal system): এই পদ্ধতিতে কোনো লাইনের বিয়ারিং ম্যাগনেটিক দ্রাঘিমার (magnetic bearing) উত্তর বা দক্ষিণ যে প্রান্তের কাছে লাইনটি থাকে সেই প্রান্ত থেকে পূর্বে বা পশ্চিমে ঘড়ির কাঁটার দিকে বা বিপরীতে মাপা হয়। সুতরাং এই পদ্ধতিতে কোনো প্রান্ত থেকে এবং কোন্দিকে বেয়ারিংটি মাপা হল তা উল্লেখ করা একান্ত প্রয়োজন, সমকোণে পরস্পর ছেদকারী দুটি লাইন কোনো স্টেশনের চারপাশের সমতলকে চারটি কোয়াড্রেন্ট-এ ভাগ করে থাকে। এ দুটি লাইনের একটি হল উত্তর ও দক্ষিণ দিক নির্দেশকারী লাইন এবং অপরটি হল পূর্ব ও পশ্চিম দিক নির্দেশকারী লাইন। উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিম এই চারটি দিক যথাক্রমে N, S, E ও W এই চারটি অক্ষরের সাহায্যে দেখানো হয় থাকে, 7.5 নং চিত্রে প্রথম কোয়াড্রেন্টটি উত্তর-পূর্ব (N.E.), দ্বিতীয়টি দক্ষিণ পূর্ব (S.E.), তৃতীয়টি।
সম্মুখ এবং পশ্চাৎ বিয়ারিং (fore & back bearing)
প্রতিটি লাইনে দুটি করে বিয়ারিং থাকে এবং তা লাইনটির দুটি। প্রান্ত থেকে পরিমাপ করা হয়। জরিপ কাজ যেদিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে, সেই দিকের বিয়ারিংকে ফোর বা ফরওয়ার্ড বিয়ারিং (fore or forward bearing বা F.B) এবং ঠিক তার বিপরীত দিকে যে বেয়ারিং মাপা হয়, তাকে ব্যাক বিয়ারিং (back bearing বা ৪.৪ বলা হয়। যথা- 7.6 নং চিত্রে A থেকে ৪-এর বিয়ারিং হল AB লাইনের ফরওয়ার্ড বিয়ারিং (F. B.) এবং B থেকে A এর যে বিয়ারিং মাপা হয়, তা হবে AB লাইনের ব্যাক বিয়ারিং (B.B.)। মনে রাখা প্রয়োজন যে, ফরওয়ার্ড ও ব্যাক বিয়ারিং-এর মধ্যে সবসময় 180 ^ 0 - 7 পার্থক্য হবে। হোল সার্কল বিয়ারিং সিস্টেমে ফোর বিয়ারিং থেকে ব্যাক বিয়ারিং নিম্নলিখিত সূত্রের সাহায্যে সবসময় নির্ণয় করা যায়-
(1)ব্যাক বিয়ারিং ফোর বিয়ারিং plus/minus 180 deg
(2)প্রদত্ত ফোর বিয়ারিং 180 ডিগ্রীর কম হলে যোগচিহ্ন (+) এবং 180 ^ 0 ডিগ্রীর বেশি হলে বিয়োগ (-) চিহ্ন ব্যবহার করো।