ভূ-অভ্যন্তরের ভৌত অবস্থা(Physical Condition of the Earth's Interior)
ঘনত্ব (Density)
ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে উত্তপ্ত তরল অবস্থা থেকে তাপ বিকিরণ করে শীতল ও কঠিন হওয়ার সময় পৃথিবীর বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে তাদের ঘনাঙ্ক অনুসারে স্থান বিনিময় ঘটে। সবচেয়ে ভারী পদার্থ কেন্দ্রে অবস্থান করে এবং হালকা পদার্থ ভূত্বকের পাশাপাশি অবস্থান করে। তাই ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের পাতলা অংশের বেশিরভাগ স্থান পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। যাদের গভীরতা মাত্র ০.৪ কিমি থেকে 1.6 কিমি। আর এই পাললিক শিলাস্তরের নীচে রয়েছে কেলাসিত শিলা, যার ঘনত্ব 3.0 থেকে 3.5 গ্রাম/সেমিস্ট। কিন্তু যেখানে সমগ্র পৃথিবীর গড় ঘনত্ব 5.5 গ্রাম/সেমি। সুতরাং অভ্যন্তর ভাগের ঘনত্ব আরো বেশি হওয়া স্বাভাবিক। বিভিন্ন ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে ভূ-অভ্যন্তর ভাগে গড় ঘনত্ব প্রায় 11.0 গ্রাম/সেমি। উপগ্রহ মারফৎ প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায় যে-পৃথিবীর গড় ঘনত্ব 5.517 গ্রাম/সেমি³; ভূপৃষ্ঠের গড় খামার 2.6-3.3 গ্রাম/সেমি এবং কেন্দ্রমণ্ডলের গড় ঘনত্ব 11 গ্রাম/সেমি। কিন্তু গভীরতা বৃদ্ধির সলো ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়ে 13.6 গ্রাম/সেমি পর্যন্ত হয়।
ভূ-অভ্যন্তরে চাপ বৃদ্ধির ফলে ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, এই ধারণা অনুসারে ভূ-বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে অত্যধিক চাপে সিলিকেটের ইলেকট্রন গঠন পরিবর্তিত হওয়ায় উচ্চ ঘনাঙ্ক বিশিষ্ট বিভিন্ন ধাতব পদার্থ কেন্দ্রমণ্ডল সৃষ্টি হয়েছে। ভূকেন্দ্রে উচ্চ ঘনত্ব বিশিষ্ট পদার্থ হল লোহা ও নিকেল। ভুকেন্দ্রে লোহার পরিমাণ ৪০ শতাংশ এবং নিকেলের পরিমাণ 20 শতাংশ। যার জন্য কেন্দ্রমণ্ডলের অপর নাম নিফে 'NIFE'। অনেকে মনে করেন যে H₂ অত্যধিক চাপে অনেকক্ষেত্রে ধাতুর মতো আচরণ করে।