welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের গঠন (Structure of Tropical Cyclone)

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের গঠন (Structure of Tropical Cyclone) :


(ক) অনুভূমিক গঠন (Horizontal Structure) :

200-700 কিমি ব্যাসযুক্ত ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতকে কেন্দ্র থেকে ছয়টি বৃত্তাকার অংশে বিভক্ত করা যায়। এগুলি হল-


1. চক্ষু (Eye) : ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে অবস্থিত শান্ত, বায়ুপ্রবাহ শূন্য, মেঘহীন নির্মল আকাশের ক্ষুদ্র বৃত্তাকার বলয়কে বলে ঘূর্ণবাতের চক্ষু। এর ব্যাস 5-10 কিমি। ওপরের বায়ুস্তর থেকে কিছু বাতাস ধীরে ধীরে এর কেন্দ্রভাগে নেমে আসে। এখানে বায়ুচাপ সর্বনিম্ন এবং উয়তা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বাধিক হয়। ঘূর্ণবাতের চারদিকে বৃষ্টিপাত হলেও ঘূর্ণবাতের অগ্রগমনকালে ঘূর্ণবাতের চক্ষুটি যখন সেখানে অবস্থান করে তখন ওই অংশে কোনো বৃষ্টিপাত হয় না।


2. চক্ষু প্রাচীর (Eye wall): চক্ষুর চারপাশে কিউমুলোনিম্বাস মেঘ দ্বারা আবৃত যে সংকীর্ণ বলয়ে ঊর্ধ্বগামী বায়ুর গতিবেগ সর্বোচ্চ এবং বজ্রপাতসহ সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়, তাকে চক্ষুপ্রাচীর বলে। এর ব্যাস 10- 20 কিমি হয়।


3. কুণ্ডলী বলয় (Spiral band): চক্ষু প্রাচীরের বাইরে কিউমুলোনিম্বাস মেঘ ও বৃষ্টিপাতের দুটি কুণ্ডলী 50-80 কিমি তফাতে অবস্থান করে এবং প্রবল বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়বৃষ্টি হয়। এটি কয়েকশো কিমি দীর্ঘ ও কয়েক কিমি প্রশস্ত হয়। প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয় বলে একে বৃষ্টি বলয়ও বলা হয়। এটি ঘূর্ণবাতের সবচেয়ে


4. অঙ্গুরীয়াকার বলয় (Annular belt): কুণ্ডলী বলয়ের বাইরে এই অংশে বায়ু নীচে নেমে আসে। উষ্ণতা অধিক, আর্দ্রতার পরিমাণ কম। এই অংশে ঝড়ের প্রকোপ কম হয়। বৃষ্টিপাত বিশেষ হয় না।


5. বহিস্থ পরিচলন বলয় (Outer Convective belt): অঙ্গুরীয়াকার বলয়ের বাইরে নিম্নমুখী বহির্গামী বায়ু ও সেই সঙ্গে কেন্দ্রমুখী বায়ুর মিলনের ফলে পরিচলন প্রক্রিয়া দ্রুত ঘটতে থাকে। ফলে মেঘ সৃষ্টিও বৃষ্টিপাত হয়।


6. সীমান্তবর্তী বলয় (Peripheral belt): এটি সবচেয়ে বাইরের বলয়। এখানে মেঘ সৃষ্টি ও বৃষ্টিপাত কম হয়।


(খ) উল্লম্ব গঠন (Vertical Structure):

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের উচ্চতা 12-16 কিমি হয়। উল্লম্বভাবে এর তিনটি স্তর দেখা যায়। যথা-


1. অন্তঃপ্রবাহ স্তর (Inflow layer): এটি সবচেয়ে নীচের স্তর। এর উচ্চতা প্রায় 3 কিমি। এখানে বায়ুর কেন্দ্রমুখী প্রবাহ, বাষ্পীভবন, ঘনীভবন, পরিচলন প্রক্রিয়া ও মেঘের গঠন প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এখানেই জলীয় বাষ্পের ঘনীভবনের কারণে সৃষ্ট লীনতাপ বায়ুর স্থৈতিকশক্তিকে বায়ুর গতিশক্তিতে রূপান্তরিত করে আবর্ত সৃষ্টিতে শক্তি জোগায়।


2. মধ্যস্তর (Middle layer): নীচের স্তরের ওপরে 6-7 কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত দ্বিতীয় স্তরটিতে ঘূর্ণবাতের মূল আবর্ত বা ঘূর্ণি (Vortex) দেখা যায়।


3. বহিঃপ্রবাহ স্তর (Outflow layer): মধ্যস্তরের ওপরে ট্রপোপজ পর্যন্ত বিস্তৃত সবশেষের এই স্তরে বায়ু উচ্চচাপ কেন্দ্র থেকে প্রতীপ ঘূর্ণবাতের মতো বেরিয়ে যায়। ফলে বায়ু নিম্নগামী হয়ে ভূপৃষ্ঠে কেন্দ্রমুখী প্রবাহ সৃষ্টি করে।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01